ডাবল স্ট্যান্ডার্ড


লেখক: ডা. শামসুল আরেফীন

বিষয়: তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব

18 রেটিং / 18 টি মতামত
মূল্য: Tk. 260.0  Tk. 195.0   (25.0% ছাড়)

 

বইয়ের নাম ডাবল স্ট্যান্ডার্ড
লেখক ডা. শামসুল আরেফীন
প্রকাশনী শুদ্ধি
সংস্করণ 3 2017
পৃষ্ঠা সংখ্যা 192
ভাষা

ডা. শামসুল আরেফীন


এই বিষয়ের আরো বই

পাঠকের মতামত ও রেটিং

হাফিজ আব্দুল্লাহ নাজিম (আল-মামুন) @ August 21, 2022


🏆বুক রিভিউ 🏆 🔶বই: ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড 🔶লেখক: ডা: শামসুল আরেফীন 🔶প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আযহার 🔶 মুদ্রিত মূল্য: ৩৬০ টাকা 🔶পৃস্টা সংখ্যা: ১৯২ 🔹 ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড : এ আমার ব্যতিক্রমমুখী পাঠ মুগ্ধতা। 🔹 তৃপ্তির আবেশে হৃদয় প্রশান্তে পড়েছি-জাস্ট পড়েছি হৃদয়কে তৃপ্তি দিতে,সত্তার তৃষ্ণাকে তৃপ্ত করতে পড়েছি-তবুও পড়েছি মানুষ হয়েও সুস্থ বিবেক,মনুষ্যত্ব জাগ্রত করতে। 🔹 ডা. শামসুল আরেফীন সাহেব হাফিযাহুল্লাহর লেখায় শব্দের পর শব্দ গেঁথে নতুন অস্ত্র ছুঁড়ে দিয়েছেন ইতিহাসের ভাগাড়ে ইসলাম বিদ্বেষের দিকে। ইসলামের উপর আরোপিত বেশ কিছু বিষয়ের যৌক্তিক সমাধান অত্যন্ত সুন্দরভাবে নান্দনিক অনবদ্য গল্পাকারে উপস্থাপিত হয়েছে ' যুক্তির জবাব যুক্তি- এটাই এখন সময়ের দাবি ' এই পরিপ্রেক্ষিতে ❝ ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড ❞ রূপে। বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ-কেড়ে নিয়েছে সুস্থ আবেগ। সময়ের পালাবদলে পরিবর্তন ঘটেছে চিন্তা-চেতনা-ভাবনার। রূপান্তর করেছে বিজ্ঞান বিবর্তনবাদের ধারাপাতে।বিজ্ঞান চিন্তা যোগান দিয়েছে অদৃশ্যের উপর নাস্তিক্ববাদি ভাব ও সংশয়বাদিতা। লেখকের 'না দেখে বিশ্বাস' শিরোনামে যৌক্তিক যুক্তিকারে ফুটিয়ে উঠেছে অদৃশ্যের উপর নীহিত মানবজন্মের সার্থকতা। না দেখে বিশ্বাসকে লেখক উপলব্ধি করেছেন মানুষের বিশেষ গুণ হিসেবে। যৌক্তিকতা দিয়ে ভেঙে দিয়েছেন অবিশ্বাসের জঞ্জালকে। 🔹 দাস প্রথা বলতে আমরা যা বুঝি!বর্বরতা-নিপীড়িত-নির্যাতিত-বন্দীর বেড়াজালে আবদ্ধ নিরীহ এক দেহ। এটাকেই আমরা দাস-দাসীর প্রথা হিসেবে বুঝে রাখি।ইসলামের দাস প্রথা আর পশ্চিমা ইউরোপ আমেরিকার দাসপ্রথাকে গুলিয়ে ফেলি। দাসপ্রথা শিরোনামে লেখক তুলে ধরেছেন দাস-দাসীদের প্রতি ইসলাম কতটুকু সাম্য - ন্যায্যা- স্বাধীনতা-অধিকার ফুটিয়ে তুলেছেন যুক্তির জবাব যুক্তি দিয়ে।এতে তুলে ধরেছেন ঐশি বিধানের সৌন্দর্যতাও। 🔹 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'বইয়ে সবথেকে বেশি মুগ্ধতা অনুভব করেছি 'শস্যক্ষেত্র:সম্পত্তি না সম্পদ' শিরোনামে। আল্লাহ সুবানাহু ওয়া তা'য়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে 'সূরা বাক্বরার ' দুইশ তেইশ নাম্বার আয়াতে ইঙ্গিত করেছেন ❝তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র। যেদিক দিয়ে ইচ্ছে শস্যক্ষেত্রে প্রবেশ কর এবং নিজেদের জন্য ভবিষ্যতের ব্যবস্থা কর। এবং আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ আমার (আল্লাহর) সাথে তোমাদের মোলাকাত হবেই।নিশ্চয়ই, বিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ❞। উপরোক্ত আয়াতে কারীমা দ্বারা সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা নারীদেরকে পুরুষের জন্য শস্যক্ষেত্র স্বরূপ ইঙ্গিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে লেখক 'শস্যক্ষেত্র' গল্পে খুব চমৎকার ভাবনার গহ্বরে ফুটিয়ে তুলেছেন একজন স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি কতটুকু যত্নবান? উদাহরণ সরূপ - একজন চাষীর কাছে যেমনি তার জমুটুকু সম্বল-দুনিয়া-পরম নির্ভরতা ও আবেগের জায়গা এবং সবকিছু। চাষী চব্বিশ ঘণ্টা ঘিরে সব সাধ্য-সাধনা-স্বপ্ন-বেদনা তার জমিটুকু ঘিরে। সব ভাবনা-চিন্তা-কল্পনা-তার জমির জন্য। তেমনি স্বামীর কাছে স্ত্রীর মর্যাদা ও আবেদনও এমন।স্ত্রী তার স্বামীর গর্বের ধন,তার আশ্রয়-সম্বল, স্ত্রী স্বামীর কাছে তার দুনিয়া, তার সবকিছু। তার নির্ভরতা, তার কল্পনা-ভাবনা-পরিশ্রমের কেন্দ্র।এমনকি অধিকারবোধের (possessiveness) কারণে স্ত্রীর বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপ তার কাছে অসহ্য। 'ও শুধু আমার'- এই অনুভূতি কাজ করবে স্ত্রীর প্রতি। লেখক খুবই নান্দনিক উপস্থাপন করছেন যোক্তিক কিংবা উদাহরণ স্বরূপে।নিশ্চয়ই ' ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'পাঠকদের জন্য মুগ্ধতার পরম প্রকাশ। 🔹 ইসলাম একটি পরিপূর্ন জীবন বিধান (Islam is a complete code of life)। এতে নেই কোন বক্রতা, অস্পষ্টতা, নেই কোন সন্দেহ, নেই কোন সংশয়। এতে রয়েছে সুমহান আদর্শ-সুমহান রীতি-নীতি পদ্ধতি এবং ঐশি প্রদত্ত বিধি-বিধান।তবেই ভুল হবে যদি বলা হয় একে কেবল একটি ধর্ম। এটা কেবল একটি ধর্ম নয় বরং এতে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা এবং ঐশি প্রদত্ত সংস্কৃতি। আমার কাছে সবথেকে ব্যতিক্রমমুখী টপিকটা হলো "ইসলাম কী আরব সংস্কৃতি"? লেখক ব্যতিক্রমভাবে এই টপিকটা উল্লেখ করেছেন ইসলাম এমন একটা কালচার-সংস্কৃতি যা এসে পুরো আরব সংস্কৃতিই রিপ্লেস হয়ে গেল। বাকি সব সংস্কৃতিতে যদি বর্বরতা,নির্মমতা,নিগ্রহ, অপচয়, মানবতাবিরোধী,অসমতার উপাদান থাকে তা সংশোধন করবে ইসলাম। খুবই নান্দনিক উপস্থাপিত হয়েছে 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'বইয়ে।দাওয়াহ-গল্পাকার-যৌক্তিক যুক্তিকতার দিক দিয়ে এ বইকে লেখক খুবই আর্কষনীয় করে তুলে ধরেছেন। যা আমাকে প্রথম পাঠক হিসেবে ডা.শামসুল আরেফীন সাহেব হাফিযাহুল্লাহর এ বই 'নাস্তিক্ববাদিদের কড়া জবাব হিসেবে উপলব্ধি করেছেন। 🔹 ধন্যবাদ মাকতাবাতুল আযহার কে এরকম রিভিউ প্রতিযোগিতা ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। নিঃসন্দেহে এপাঠ প্রতিযোগিতা পাঠকদের জন্য আনন্দদায়ক। 🔹 ❝ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড ❞পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছি পরম শ্রদ্ধেয় Junaeid Raisi (যিনি মাকতাবাতুল আযহারের নিয়মিত বই ক্রেতা) ভাইয়ের কাছ থেকে বইটা হাতে পেয়ে।যার প্রতি কৃতজ্ঞবোধ না হলে আমার পড়া,জাস্ট পড়া,তবুও পড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। হাফিজ আব্দুল্লাহ নাজিম (আল-মামুন) ২১-০৮-২০২২
হাফিজ আব্দুল্লাহ নাজিম (আল-মামুন) @ August 21, 2022


🏆বুক রিভিউ 🏆 🔶বই: ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড 🔶লেখক: ডা: শামসুল আরেফীন 🔶প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আযহার 🔶 মুদ্রিত মূল্য: ৩৬০ টাকা 🔶পৃস্টা সংখ্যা: ১৯২ 🔹 ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড : এ আমার ব্যতিক্রমমুখী পাঠ মুগ্ধতা। 🔹 তৃপ্তির আবেশে হৃদয় প্রশান্তে পড়েছি-জাস্ট পড়েছি হৃদয়কে তৃপ্তি দিতে,সত্তার তৃষ্ণাকে তৃপ্ত করতে পড়েছি-তবুও পড়েছি মানুষ হয়েও সুস্থ বিবেক,মনুষ্যত্ব জাগ্রত করতে। 🔹 ডা. শামসুল আরেফীন সাহেব হাফিযাহুল্লাহর লেখায় শব্দের পর শব্দ গেঁথে নতুন অস্ত্র ছুঁড়ে দিয়েছেন ইতিহাসের ভাগাড়ে ইসলাম বিদ্বেষের দিকে। ইসলামের উপর আরোপিত বেশ কিছু বিষয়ের যৌক্তিক সমাধান অত্যন্ত সুন্দরভাবে নান্দনিক অনবদ্য গল্পাকারে উপস্থাপিত হয়েছে ' যুক্তির জবাব যুক্তি- এটাই এখন সময়ের দাবি ' এই পরিপ্রেক্ষিতে ❝ ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড ❞ রূপে। বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ-কেড়ে নিয়েছে সুস্থ আবেগ। সময়ের পালাবদলে পরিবর্তন ঘটেছে চিন্তা-চেতনা-ভাবনার। রূপান্তর করেছে বিজ্ঞান বিবর্তনবাদের ধারাপাতে।বিজ্ঞান চিন্তা যোগান দিয়েছে অদৃশ্যের উপর নাস্তিক্ববাদি ভাব ও সংশয়বাদিতা। লেখকের 'না দেখে বিশ্বাস' শিরোনামে যৌক্তিক যুক্তিকারে ফুটিয়ে উঠেছে অদৃশ্যের উপর নীহিত মানবজন্মের সার্থকতা। না দেখে বিশ্বাসকে লেখক উপলব্ধি করেছেন মানুষের বিশেষ গুণ হিসেবে। যৌক্তিকতা দিয়ে ভেঙে দিয়েছেন অবিশ্বাসের জঞ্জালকে। 🔹 দাস প্রথা বলতে আমরা যা বুঝি!বর্বরতা-নিপীড়িত-নির্যাতিত-বন্দীর বেড়াজালে আবদ্ধ নিরীহ এক দেহ। এটাকেই আমরা দাস-দাসীর প্রথা হিসেবে বুঝে রাখি।ইসলামের দাস প্রথা আর পশ্চিমা ইউরোপ আমেরিকার দাসপ্রথাকে গুলিয়ে ফেলি। দাসপ্রথা শিরোনামে লেখক তুলে ধরেছেন দাস-দাসীদের প্রতি ইসলাম কতটুকু সাম্য - ন্যায্যা- স্বাধীনতা-অধিকার ফুটিয়ে তুলেছেন যুক্তির জবাব যুক্তি দিয়ে।এতে তুলে ধরেছেন ঐশি বিধানের সৌন্দর্যতাও। 🔹 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'বইয়ে সবথেকে বেশি মুগ্ধতা অনুভব করেছি 'শস্যক্ষেত্র:সম্পত্তি না সম্পদ' শিরোনামে। আল্লাহ সুবানাহু ওয়া তা'য়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে 'সূরা বাক্বরার ' দুইশ তেইশ নাম্বার আয়াতে ইঙ্গিত করেছেন ❝তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র। যেদিক দিয়ে ইচ্ছে শস্যক্ষেত্রে প্রবেশ কর এবং নিজেদের জন্য ভবিষ্যতের ব্যবস্থা কর। এবং আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ আমার (আল্লাহর) সাথে তোমাদের মোলাকাত হবেই।নিশ্চয়ই, বিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ❞। উপরোক্ত আয়াতে কারীমা দ্বারা সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা নারীদেরকে পুরুষের জন্য শস্যক্ষেত্র স্বরূপ ইঙ্গিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে লেখক 'শস্যক্ষেত্র' গল্পে খুব চমৎকার ভাবনার গহ্বরে ফুটিয়ে তুলেছেন একজন স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি কতটুকু যত্নবান? উদাহরণ সরূপ - একজন চাষীর কাছে যেমনি তার জমুটুকু সম্বল-দুনিয়া-পরম নির্ভরতা ও আবেগের জায়গা এবং সবকিছু। চাষী চব্বিশ ঘণ্টা ঘিরে সব সাধ্য-সাধনা-স্বপ্ন-বেদনা তার জমিটুকু ঘিরে। সব ভাবনা-চিন্তা-কল্পনা-তার জমির জন্য। তেমনি স্বামীর কাছে স্ত্রীর মর্যাদা ও আবেদনও এমন।স্ত্রী তার স্বামীর গর্বের ধন,তার আশ্রয়-সম্বল, স্ত্রী স্বামীর কাছে তার দুনিয়া, তার সবকিছু। তার নির্ভরতা, তার কল্পনা-ভাবনা-পরিশ্রমের কেন্দ্র।এমনকি অধিকারবোধের (possessiveness) কারণে স্ত্রীর বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপ তার কাছে অসহ্য। 'ও শুধু আমার'- এই অনুভূতি কাজ করবে স্ত্রীর প্রতি। লেখক খুবই নান্দনিক উপস্থাপন করছেন যোক্তিক কিংবা উদাহরণ স্বরূপে।নিশ্চয়ই ' ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'পাঠকদের জন্য মুগ্ধতার পরম প্রকাশ। 🔹 ইসলাম একটি পরিপূর্ন জীবন বিধান (Islam is a complete code of life)। এতে নেই কোন বক্রতা, অস্পষ্টতা, নেই কোন সন্দেহ, নেই কোন সংশয়। এতে রয়েছে সুমহান আদর্শ-সুমহান রীতি-নীতি পদ্ধতি এবং ঐশি প্রদত্ত বিধি-বিধান।তবেই ভুল হবে যদি বলা হয় একে কেবল একটি ধর্ম। এটা কেবল একটি ধর্ম নয় বরং এতে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা এবং ঐশি প্রদত্ত সংস্কৃতি। আমার কাছে সবথেকে ব্যতিক্রমমুখী টপিকটা হলো "ইসলাম কী আরব সংস্কৃতি"? লেখক ব্যতিক্রমভাবে এই টপিকটা উল্লেখ করেছেন ইসলাম এমন একটা কালচার-সংস্কৃতি যা এসে পুরো আরব সংস্কৃতিই রিপ্লেস হয়ে গেল। বাকি সব সংস্কৃতিতে যদি বর্বরতা,নির্মমতা,নিগ্রহ, অপচয়, মানবতাবিরোধী,অসমতার উপাদান থাকে তা সংশোধন করবে ইসলাম। খুবই নান্দনিক উপস্থাপিত হয়েছে 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'বইয়ে।দাওয়াহ-গল্পাকার-যৌক্তিক যুক্তিকতার দিক দিয়ে এ বইকে লেখক খুবই আর্কষনীয় করে তুলে ধরেছেন। যা আমাকে প্রথম পাঠক হিসেবে ডা.শামসুল আরেফীন সাহেব হাফিযাহুল্লাহর এ বই 'নাস্তিক্ববাদিদের কড়া জবাব হিসেবে উপলব্ধি করেছেন। 🔹 ধন্যবাদ মাকতাবাতুল আযহার কে এরকম রিভিউ প্রতিযোগিতা ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। নিঃসন্দেহে এপাঠ প্রতিযোগিতা পাঠকদের জন্য আনন্দদায়ক। 🔹 ❝ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড ❞পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছি পরম শ্রদ্ধেয় Junaeid Raisi (যিনি মাকতাবাতুল আযহারের নিয়মিত বই ক্রেতা) ভাইয়ের কাছ থেকে বইটা হাতে পেয়ে।যার প্রতি কৃতজ্ঞবোধ না হলে আমার পড়া,জাস্ট পড়া,তবুও পড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। হাফিজ আব্দুল্লাহ নাজিম (আল-মামুন) ২১-০৮-২০২২
হাফিজ আব্দুল্লাহ নাজিম (আল-মামুন) @ August 21, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ 🏆বুক রিভিউ 🏆 🔶বই: ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড 🔶লেখক: ডা: শামসুল আরেফীন 🔶প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আযহার 🔶 মুদ্রিত মূল্য: ৩৬০ টাকা 🔶পৃস্টা সংখ্যা: ১৯২ 🔹 ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড : এ আমার ব্যতিক্রমমুখী পাঠ মুগ্ধতা। 🔹 তৃপ্তির আবেশে হৃদয় প্রশান্তে পড়েছি-জাস্ট পড়েছি হৃদয়কে তৃপ্তি দিতে,সত্তার তৃষ্ণাকে তৃপ্ত করতে পড়েছি-তবুও পড়েছি মানুষ হয়েও সুস্থ বিবেক,মনুষ্যত্ব জাগ্রত করতে। 🔹 ডা. শামসুল আরেফীন সাহেব হাফিযাহুল্লাহর লেখায় শব্দের পর শব্দ গেঁথে নতুন অস্ত্র ছুঁড়ে দিয়েছেন ইতিহাসের ভাগাড়ে ইসলাম বিদ্বেষের দিকে। ইসলামের উপর আরোপিত বেশ কিছু বিষয়ের যৌক্তিক সমাধান অত্যন্ত সুন্দরভাবে নান্দনিক অনবদ্য গল্পাকারে উপস্থাপিত হয়েছে ' যুক্তির জবাব যুক্তি- এটাই এখন সময়ের দাবি ' এই পরিপ্রেক্ষিতে ❝ ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড ❞ রূপে। বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে বেগ-কেড়ে নিয়েছে সুস্থ আবেগ। সময়ের পালাবদলে পরিবর্তন ঘটেছে চিন্তা-চেতনা-ভাবনার। রূপান্তর করেছে বিজ্ঞান বিবর্তনবাদের ধারাপাতে।বিজ্ঞান চিন্তা যোগান দিয়েছে অদৃশ্যের উপর নাস্তিক্ববাদি ভাব ও সংশয়বাদিতা। লেখকের 'না দেখে বিশ্বাস' শিরোনামে যৌক্তিক যুক্তিকারে ফুটিয়ে উঠেছে অদৃশ্যের উপর নীহিত মানবজন্মের সার্থকতা। না দেখে বিশ্বাসকে লেখক উপলব্ধি করেছেন মানুষের বিশেষ গুণ হিসেবে। যৌক্তিকতা দিয়ে ভেঙে দিয়েছেন অবিশ্বাসের জঞ্জালকে। 🔹 দাস প্রথা বলতে আমরা যা বুঝি!বর্বরতা-নিপীড়িত-নির্যাতিত-বন্দীর বেড়াজালে আবদ্ধ নিরীহ এক দেহ। এটাকেই আমরা দাস-দাসীর প্রথা হিসেবে বুঝে রাখি।ইসলামের দাস প্রথা আর পশ্চিমা ইউরোপ আমেরিকার দাসপ্রথাকে গুলিয়ে ফেলি। দাসপ্রথা শিরোনামে লেখক তুলে ধরেছেন দাস-দাসীদের প্রতি ইসলাম কতটুকু সাম্য - ন্যায্যা- স্বাধীনতা-অধিকার ফুটিয়ে তুলেছেন যুক্তির জবাব যুক্তি দিয়ে।এতে তুলে ধরেছেন ঐশি বিধানের সৌন্দর্যতাও। 🔹 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'বইয়ে সবথেকে বেশি মুগ্ধতা অনুভব করেছি 'শস্যক্ষেত্র:সম্পত্তি না সম্পদ' শিরোনামে। আল্লাহ সুবানাহু ওয়া তা'য়ালা পবিত্র কুরআনুল কারীমে 'সূরা বাক্বরার ' দুইশ তেইশ নাম্বার আয়াতে ইঙ্গিত করেছেন ❝তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেত্র। যেদিক দিয়ে ইচ্ছে শস্যক্ষেত্রে প্রবেশ কর এবং নিজেদের জন্য ভবিষ্যতের ব্যবস্থা কর। এবং আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ আমার (আল্লাহর) সাথে তোমাদের মোলাকাত হবেই।নিশ্চয়ই, বিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ❞। উপরোক্ত আয়াতে কারীমা দ্বারা সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা নারীদেরকে পুরুষের জন্য শস্যক্ষেত্র স্বরূপ ইঙ্গিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে লেখক 'শস্যক্ষেত্র' গল্পে খুব চমৎকার ভাবনার গহ্বরে ফুটিয়ে তুলেছেন একজন স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি কতটুকু যত্নবান? উদাহরণ সরূপ - একজন চাষীর কাছে যেমনি তার জমুটুকু সম্বল-দুনিয়া-পরম নির্ভরতা ও আবেগের জায়গা এবং সবকিছু। চাষী চব্বিশ ঘণ্টা ঘিরে সব সাধ্য-সাধনা-স্বপ্ন-বেদনা তার জমিটুকু ঘিরে। সব ভাবনা-চিন্তা-কল্পনা-তার জমির জন্য। তেমনি স্বামীর কাছে স্ত্রীর মর্যাদা ও আবেদনও এমন।স্ত্রী তার স্বামীর গর্বের ধন,তার আশ্রয়-সম্বল, স্ত্রী স্বামীর কাছে তার দুনিয়া, তার সবকিছু। তার নির্ভরতা, তার কল্পনা-ভাবনা-পরিশ্রমের কেন্দ্র।এমনকি অধিকারবোধের (possessiveness) কারণে স্ত্রীর বিষয়ে কারো হস্তক্ষেপ তার কাছে অসহ্য। 'ও শুধু আমার'- এই অনুভূতি কাজ করবে স্ত্রীর প্রতি। লেখক খুবই নান্দনিক উপস্থাপন করছেন যোক্তিক কিংবা উদাহরণ স্বরূপে।নিশ্চয়ই ' ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'পাঠকদের জন্য মুগ্ধতার পরম প্রকাশ। 🔹 ইসলাম একটি পরিপূর্ন জীবন বিধান (Islam is a complete code of life)। এতে নেই কোন বক্রতা, অস্পষ্টতা, নেই কোন সন্দেহ, নেই কোন সংশয়। এতে রয়েছে সুমহান আদর্শ-সুমহান রীতি-নীতি পদ্ধতি এবং ঐশি প্রদত্ত বিধি-বিধান।তবেই ভুল হবে যদি বলা হয় একে কেবল একটি ধর্ম। এটা কেবল একটি ধর্ম নয় বরং এতে রয়েছে পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা এবং ঐশি প্রদত্ত সংস্কৃতি। আমার কাছে সবথেকে ব্যতিক্রমমুখী টপিকটা হলো "ইসলাম কী আরব সংস্কৃতি"? লেখক ব্যতিক্রমভাবে এই টপিকটা উল্লেখ করেছেন ইসলাম এমন একটা কালচার-সংস্কৃতি যা এসে পুরো আরব সংস্কৃতিই রিপ্লেস হয়ে গেল। বাকি সব সংস্কৃতিতে যদি বর্বরতা,নির্মমতা,নিগ্রহ, অপচয়, মানবতাবিরোধী,অসমতার উপাদান থাকে তা সংশোধন করবে ইসলাম। খুবই নান্দনিক উপস্থাপিত হয়েছে 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড'বইয়ে।দাওয়াহ-গল্পাকার-যৌক্তিক যুক্তিকতার দিক দিয়ে এ বইকে লেখক খুবই আর্কষনীয় করে তুলে ধরেছেন। যা আমাকে প্রথম পাঠক হিসেবে ডা.শামসুল আরেফীন সাহেব হাফিযাহুল্লাহর এ বই 'নাস্তিক্ববাদিদের কড়া জবাব হিসেবে উপলব্ধি করেছেন। 🔹 ধন্যবাদ মাকতাবাতুল আযহার কে এরকম রিভিউ প্রতিযোগিতা ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। নিঃসন্দেহে এপাঠ প্রতিযোগিতা পাঠকদের জন্য আনন্দদায়ক। 🔹 ❝ডাবল স্ট্যাণ্ডার্ড ❞পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছি পরম শ্রদ্ধেয় Junaeid Raisi (যিনি মাকতাবাতুল আযহারের নিয়মিত বই ক্রেতা) ভাইয়ের কাছ থেকে বইটা হাতে পেয়ে।যার প্রতি কৃতজ্ঞবোধ না হলে আমার পড়া,জাস্ট পড়া,তবুও পড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। হাফিজ আব্দুল্লাহ নাজিম (আল-মামুন) ২১-০৮-২০২২
মোঃ রাকিবুল হোসাইন @ August 22, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বই কথন: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড (Double Standard) A rule or principle that is unfairly applied in different ways to different people or group.একটি নিয়ম বা নীতি যা বিভিন্ন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে বিভিন্ন উপায়ে অসমীচীনরূপে প্রয়োগ করা হয়। বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক মানুষ আছে যারা ইসলাম সম্পর্কে ভালো ভাবে না জেনে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে। কেউ আবার ইসলাম বিদ্বেষীদের বই পড়ে ইসলাম ও মুসলমানদের বিপক্ষে অবস্থান নেয় । মহান আল্লাহ তায়ালা মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। এবং তাদের কে বানিয়েছেন আশরাফুল মাখলুকাত এবং তাদের জীবন পদ্ধতি পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট বিধান দিয়েছেন।যাতে মানুষ ইহকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তি পেতে পারে। যদি কোন মানুষ নিরপেক্ষ ভাবে ইসলাম নিয়ে স্টাডি করে, আশা করে সে ইসলাম গ্রহণ না করলেও কমপক্ষে সে ইসলাম নিয়ে বিদ্ধেষ ছড়াবে না। কারণ মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমে এবং রহমাতাল্লিল আলামিন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে না কোনো অযোক্তিক কথা বলেছেন এবং না কোনো অযোক্তিক বিধান দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারার ২২৩ আয়াতে বলেছেন নারীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। এই কথা কি আসলেই অযোক্তিক ? মহান আল্লাহ তায়ালা শস্য ক্ষেত্র বললে হয় অযোক্তিক আর জনাব রবিন্দ্রনাথ সাহেব সম্পদ বললে হয় উপন্যাস!!! লেখক তার বইয়ে চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। দাস প্রথা শুরু হয়েছে অন্য সভ্যতা থেকে । কিন্তু ইসলাম এই প্রথাকে সুন্দর আকৃতি দিয়েছে। ইসলামী ইতিহাসে আমরা দেখি একজন দাস ও প্রধানমন্ত্রী হতে পারে যদি সে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। এবং এটাই হয়েছে। দাসী সম্পর্কে ইসলাম এমন সুন্দর নীতিমালা দিয়েছে যা অন্য কোন সমাজ থেকে কল্পনাও করা যায় না। আর এটা ইসলামী সভ্যতায় সম্ভব অন্য সভ্যতায় নয়। ইসলাম মানুষ কে তার প্রকৃত সম্মান দিয়েছে । ইসলাম এমন এক ধর্ম যার নিজস্ব সংস্কৃতি এবং সভ্যতা রয়েছে যা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ উৎকৃষ্ট সাধন করেছে। তবে অন্য সভ্যতা ও সংস্কৃতি থেকে নিয়েছে কিন্তু সেটা নেওয়ার পদ্ধতি হলো চালনি দিয়ে চেলে সর্বৎ কৃষ্ট জিনিসটি নিয়েছে যা মানব জাতির জন্য কল্যাণকর এবং ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। লেখক পরিচিতি ডা.শামসুল আরেফীন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন ডাক্তার । তিনি বেশ কিছু ইসলামীক বই রচনা করেছেন সেগুলোর কোনোটি রচিত হয়েছে গল্পের আকারে, আবার কোনোটি রচিত হয়েছে প্রবন্ধ হিসেবে।ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বইটি গল্প আকারে রচিত হয়েছে তা যে কোনো পাঠক কে আকৃষ্ট করবেই। যদি পাঠক বইটি হাতে নিয়ে কোনো একটি বিষয় সম্পর্কে পড়ে তাহলে ঐ পাঠক বইয়ের অন্য বিষয় পড়তে বাধ্য হবে ।ইতিমাধ্যে তিনি পাঠকদের কাছ থেকে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮৯ সালে । বই পরিচিতি: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখক:ডা.শামসুল আরেফীন(এমবিবিএস,বিসিএস স্বাস্থ) গল্প:১১ টি প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আযহার মুদ্রিতমূল্য:৩৬০ রিভিউ লেখক: মোঃ রাকিবুল হোসাইন
জুনায়েদ রাইসী @ August 27, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ 🟢 বুক রিভিউ 🟢 বই: ইসলামে দাস-দাসী ব্যবস্থা লেখক: শামসুল আরেফীন প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আযহার মুদ্রিত মূল্য: ৪৮০ টাকা পৃস্টা সংখ্যা: ২৬৪ 💠 প্রারম্ভিকঃ লেখক ডাঃ শামসুল আরেফীন এর প্রথম বই "ডবল স্ট্যান্ডার্ড" 2017 সালে প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরই ধারাবাহিকতায় 2018 সালে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় বই "কষ্টিপাথর"। এছাড়া 2020 সালে প্রকাশিত হয় "ডাবল স্ট্যান্ডার্ড 2.0"। বিশ্বাসের কথাগুলোকে শব্দে রুপ দিতে তার কোনো জুড়ি নেই।ইসলামিক বই লিখে তিনি জিতেছেন বহু পাঠকের মন। 2022 সালে প্রকাশিত হয় তাঁর " ইসলামে দাস-দাসীর ব্যবস্থা" যা ইতিমধ্যে অনেক পাঠকের হৃদয়ে স্থান লাভ করতে পেরেছে। 💠 দাসপ্রথা উৎস ইসলাম বিদ্বেষী মহল থেকে ইসলামের ওপর আরোপিত বিষয়গুলোর মধ্যে থেকে সুপরিচিত অন্যতম একটি হলো দাস-দাসী সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি । অথচ পৃথিবীর সুপ্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে এই দাস-দাসী প্রথা। প্রাচীন মিশর ও ভারতীয় সভ্যতা থেকে নিয়ে মেসোপোটেমিয়া, চৈনিক, মায়া (দক্ষিণ আমেরিকা), অ্যাজটেক, হিব্রু, গ্রীক ও রোমান সভ্যতা প্রায়ই দুনিয়ার সকল সমাজে, সকল যুগে দাসপ্রথার প্রচলন চলে এসেছে। প্রচলিত ছিল দাস প্রথার বিভিন্ন উৎস । ইসলাম এসে একদিকে দাসপ্রথার একাধিক উৎসকে বন্ধ করেছে। অন্যদিকে মানব সভ্যতার নির্মম বাস্তবতা যুদ্ধকেন্দ্রিক মনস্তত্ত্বের বিবেচনায় এই প্রথাকে পরিপূর্ণরূপে বিলুপ্তও করেনি। তবে এই একটি উৎস থেকে প্রাপ্ত দাসদেরকে আখিরাতের মুক্তি ও সামাজিক জীবনের সম্মানের দিক নিয়ে আসার জন্য দিয়েছেন নজিরবিহীন পদ্ধতি। 💠 দাস প্রথাকে আমরা যে ভাবে চিনি 🤔 দাসপ্রথা বলতে আমরা যা বুঝি _ ময়লা আবর্জনায় আচ্ছন্ন একমানুষ, বর্বরতা-নিপীড়ত-নির্যাতন, কাজ না করলে পিটিয়ে কাজ করানো,ভুল করতে না করতেই মারধর করা, ইসলামের দাসপ্রথাকে পশ্চিমা ইউরোপ আমেরিকার দাসপ্রথায় গুলিয়ে ফেলি। আফসোস যার ফলে আমরা না জেনেই ইসলামের দেওয়া একটি নেয়ামতের বিরোধিতা করি। বাংলাভাষী মানুষের কাছে দাস-দাসী প্রথার ব্যাপারে লেখক ডা: শামসুল আরেফীন "ইসলামের দাস-দাসী ব্যবস্থা" নামক বই নিয়ে এসেছেন। কারো মনে যদি দাস-দাসী প্রথা নিয়ে কোন সন্দেহ সংশয় থাকে তাহলে তার জন্য এই বইটিই যথেষ্ট হবে। ইনশাআল্লাহ! 💠বইটিতে যা পাবেন পাঠক বইটি অধ্যয়নের মাধ্যমে জানতে পারবেন_ ইসলামে দাস-দাসী প্রথা এবং ইউরোপ এমেরিকার দাস-দাসী প্রথা এক নয়, রাত দিন ব্যবধান রয়েছে। ইসলামে দাস-দাসীর কতইনা মর্যাদা দিয়েছে বলা হয়েছে, দাস-দাসী তোমাদের ভাই বোনের মত, তোমরা যা খাবে তাদেরকে তা খাওয়াবে। এমনকি দাস দাসীকে মারলে তার জরিমানা স্বরূপ তাকে আজাদ করে দিতে হবে। অপরদিকে আমরা ইউরোপ আমেরিকার দাস-দাসী প্রথায় দেখতে পাই যে, কাজ কাম না করলে চাবুক দিয়ে পিটিয়ে কাম করায়, হাত পা কেটে দেওয়া হয়। বাইবেল বলেছে: 'যদি দাস প্রহারে না মারা যায় তবে মনিবকে কিছু বলা হবে না কারণ সে মনিবের সম্পত্তি, মনিব পেটাতেই পারে, না মরলেই হল আর চোখ-দাঁত নষ্ট না হলেই হবে'।[যাত্রাপুস্তক অধ্যায় ২১ থেকে:] আরো.......কত কিছু.......। আরো জানতে পারবেন ইসলাম কেন দাস-দাসী প্রথা সমর্থন করেছে ? এবং সম্পূর্ণরূপে তা বিলুপ না করে কেন বহাল রেখেছে? জানতে পারবেন জেনেভা কনভেনশন ১৯৪৯, দাসপ্রথার অপকার, মানবাধিকার ও আধুনিক দাসপ্রথা সম্পর্কিত বিষয় গুলো। এছাড়াও আপনি আপনার হাজারো প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন এই বইয়ের মধ্যে। যা লেখক বিভিন্ন অধ্যায়ে বিভিন্ন শিরোনামে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আপনি সবচেয়ে বেশি হতভম্ব হবেন যখন "পশ্চিমারা তো সম্পূর্ণ বিলোপ করেছে" শিরোনামে গল্পটি পড়বেন। ১৮০০ শতাব্দীর পূর্বে সর্বত্রে দাসপ্রথা বৈধ ছিলো, এমনকি ১৫০০ সাল থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত এই তিশ বছর "দাসব্যবসা" ছিলো ইউরোপের অন্যতম লাভ জনক ব্যবসা। কিন্তু ১৮০০ শতাব্দীর পর কোন সার্থে "দাসব্যবসা" বন্ধ করে দেয় এবং ১৮৩৩ -এর পর পুরো "দাসপ্রথা" বিলোপ করার আইন করে ? গল্পটি পড়লেই জ্ঞাত হবেন। আলহামদুলিল্লাহ! আমি এই বইটি অধ্যায়নে আমি অনেক কিছু জেনেছি, মনের প্রশান্তি পেয়েছি।🥰 💠বইটির মূল বিষয়: 'ইসলামের দাসপ্রথা'র ধারণা নিয়ে হলেও পাঠক এর মাঝে খুঁজে পাবেন পাশ্চাত্য দর্শন, উপনিবেশবাদ, দাসপ্রথার আধুনিক ধরন ইত্যাদি নানান মাত্রিক আলোচনা, যা তাকে একটা সামগ্রিক আঙ্গিকে বিষয়টি বোঝার ও অনুভবের সুযোগ এনে দেবে ইনশাআল্লাহ। 💠বইটির বৈশিষ্ট্য: এক. বইটিতে প্রতিরক্ষামূলক হীনম্মন্য অবস্থান গ্রহণের পরিবর্তে ইউরোপীয় 'স্বাধীনতার' দর্শনকে প্রশ্নবানণে আক্রমণ করা হয়েছে। দুই. শান্তি ও মানবতার দাবিদার পুঁজিবাদী বিশ্বের হর্তাকর্তাদের চাপিয়ে দেয়া আধুনিক দাসপ্রথার নির্মমতর অথচ অগোচর চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তিন. মূল বিষয়বস্তুর সাথে কোনোভাবে প্রাসঙ্গিক, এমন বিষয়গুলোর অত্যন্ত তথ্যপূর্ণ আলোচনা এসেছে। যেমন: কনসেন্ট বা সম্মতি, স্বাধীনতা, সমতা ইত্যাকার গালভরা ভুলের পিছনে বাস্তবতা। এমন আরো অনেক বিষয়ে আলোচনা এসেছে যা পড়ার সময় পাঠক দেখতে পাবেন। জুনায়েদ রাইসী 21/08/2022
ফারহানা বিনতে আমিন @ September 4, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বইটির অনেক রিভিউ তো হলো পুরো প্রতিযোগিতায়, বইটির গুরুত্বপূর্ন কিছু পয়েন্ট উল্লেখ করছি।বর্তমান সব্যসাচী লেখক ডা. আরেফিন শক্তি ভাইয়ের ডাবল স্টান্ডার্ড সিক্যুয়ালের তিনখানা বইয়ের প্রথম বই এটি এবং লেখকেরও প্রথম বই। অন্যান্য বই পড়ে ফেললে আবেদন কমে গেলেও, এ বইটি আলমীরাতে ফেলে রাখার বই নয়।বইটি একজন পাঠক কেন পছন্দ করবেন! ★ আপনি কি সংশয় দূর করে, আত্মবিশ্বাসী মুসলিম হতে চান? ★না-পাওয়া প্রশ্নের জবাবগুলো জেনে নিজেকে প্রশান্ত করতে চান? ★পরিবেশ,পাশ্চাত্যের মিথ্যা মরীচিকায় নিজের বুনিয়াদের ভীতকে মজবুত করতে চান? ★কুরআন-হাদীসের আয়াতর কল্যাণকামীতা উপলব্ধি করতে চান? ★নারীবাদ, বিজ্ঞানের নামে মিথ্যা,স্বভাববিরুদ্ধ প্রহেলিকা থেকে নিজেকে হেফাজত করতে চান? ★বুদ্ধি ও হিকমাহর সাথে নিজের চারপাশ আলোকিত করতে চান? উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি হ্যা হয়,নিজেকে যদি জ্ঞান তথা সত্য অর্জনে খোলামনের মনে করে থাকেন,তাহলে এ বইটি চলার পথে সহায়ক, গাইডলাইন হতে পারে। জেনারেল লাইনে শিক্ষায় অনেক সংশয়,প্রশ্ন মাথায় আসলেও সঠিক উত্তর দেওয়ার কেউ ছিলো না,অথচ ভুল ব্যাখ্যা করার, ভুল বোঝার উপকরণ ছিলো অফুরন্ত।বিশেষ করে ইসলামে যুদ্ধনীতি,দাসব্যবস্হা, নারীদের শস্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করা বিষয়গুলোকে এতো নেতিবাচকভাবে প্রচার করা হয়েছে,একজন মুসলিম নারী হিসেবে অনেক সময় বিশ্বাসে চির তৈরি করতো।(আসতাগফিরুল্লাহ) স্বল্পজ্ঞানে ঈমানে যদিও মনে হতো আল্লাহর প্রতিটা বিধানই কল্যাণকর, কিন্তু কেমন করে এর কোন স্পষ্ট জবাব নিজের কাছে ছিলো না।লেখক ভূমিকায় যেমন বলেছন, মানুষের প্রেসক্রাইব করা ঔষুধে কোন না কোন সাইড ইফেক্ট থাকে,কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার বিধানে পুরোপুরি কল্যাণকর যেটা স্বপ্লমেয়াদের বোধগম্য না হলে দীর্ঘমেয়াদে উপলব্ধি করা যায়। শৈশব, কৈশোরে বিধর্মীদের অনেক প্রশ্নে উত্তর দিতে পারতাম না,নিজেও সংশয়েে থাকতাম।দূর্বল জ্ঞানহীন কারো চোখের অন্ধকার যেমন দূর করতে পারে না,নিজেকে তেমনি আশার আলো দেখাতে পারে না।বয়ঃসন্ধি পেরিয়ে আটার-উনিশ বছরের অপটু তরুণী হিসেবে অপরিচিত জগত বিশ্ববিদ্যালয় আঙিনায় পা দেই,কতো ভুল, আধার জগত হাতছানি দিয়েছে।অভিভাবকহীন,মেন্টরহীন পরিবেশে নিজের মজবুতী অর্জনে শক্তিশালী ঢাল হতে পারে এ বই।এখন সন্তান পরিচর্যা করতে গিয়ে চিন্তা হয়, সন্তানকে সুন্দর পরিবেশ কি নিশ্চিত করা যাবে,যেখানে সে ভ্রান্ত হবে না।নিজের ঈমান,আমল বিলিয়ে দেবে না,বিজ্ঞানের নামে কোন অপব্যাখ্যায়।পুরো বইটা আশা-জাগানিয়া নাবিকের মতো কাজ করেছে,লেখক ও প্রকাশকের কাছে এমন উদ্যোগ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাক সেই কামনাই করি,আল্লাহ তাঁদের সেই তৌফিক দিন। বই: ডাবল স্টান্ডার্ড লেখকঃ ডা. শামসুল আরেফিন রিভিউ লিখনে: ফারহানা আমিন
Fahim Hasan @ September 8, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বই: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখক: ডা. শামসুল আরেফীন প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আযহার পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৯২ ঈমান- যার অর্থ বিশ্বাস। কেমন বিশ্বাস? বিশ্বাসের তো অনেক রকম সংজ্ঞায়ন হতে পারে। কত ভাগ বিশ্বাস হতে হবে? ৫০ ভাগ? ৯০ ভাগ? ৯৯ ভাগ? অন্য যে কোন বিশ্বাসকে সংজ্ঞায়ন করলে এর যেকোনোটাই সঠিক উত্তর হতে পারে। তবে ঈমান বলতে আমরা যে বিশ্বাস বুঝি তা হতে গেলে ১০০% বিশ্বাস হতে হবে। এক ভাগ এদিক ওদিক হলেও তাকে আর ঈমান বলা যাবে না। যাকে বলা হয় সংশয়বাদ। আর ঈমানের মধ্যে সংশয়বাদীতার কোন স্থান নেই। বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে যে মহামারী কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে, খামচে নিচ্ছে তাদের ইমান, তার নাম "সংশয়বাদ"। আল্লাহ সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, কবর সত্য, আসলেই কি তাই? যদি না হয়? তাহলে তো আমার আম ছালা সব হারাবো। যদি মৃত্যুর পর আবিষ্কার করি আমার বিশ্বাস ভুল বুনিয়াদের উপর দাড়িয়ে ছিলো? এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে মস্তিষ্কের দৃশ্যপটে। এর সূচনা কোথা থেকে? সহজ উত্তর হলো "দাওয়াতী কাজ". অবাক হচ্ছেন? না অবাক হবার কিছু নেই, এই দাওয়াত ইসলামের না, কালিমার না, এই দাওয়াত নাস্তিক্যবাদের। আমরা আমাদের লক্ষ, উদ্দেশ্য, দায়িত্ব ভুলে গেলেও তারা ভুলে নেই, বসে নেই, পরিশ্রমে নিজের ঘাম ঝরাচ্ছে। তার সুফল (পড়ুন কুফল) আজ আমাদের চোখের সামনে। কত অসহায় বাবা দেখছেন নিজের সন্তানকে নাস্তিক্যবাদ, সংশয়বাদের পথের পথিক হিসেবে, শুধু নিরবে দেখে যাচ্ছেন, ছুটে চলছেন হন্যে হয়ে, কিভাবে তাকে ফেরানো যায়, কিভাবে তার নিভু নিভু ঈমান কে একটু তাজা করা যায়। বুকের ভিতর তার একরাশ হাহাকার!! বইটির নামকরণের সার্থকতা পরতে পরতে স্বীকার করতেই হয়। নাস্তিক্যবাদী, সংশয়বাদী, শাহবাগী, কথিত "বৈজ্ঞানিক চিন্তার ইম্পোর্টার" দের একটা কমন প্যাটার্ন লক্ষ করবেন। এককথায় বললে, "ডাবল স্ট্যান্ডার্ড" ।অর্থাৎ, তুমি করলে হারাম, আমাদের বেলায় আরাম। একটু লক্ষ করলেই দেখা যায়, তাদের বেশিরভাগ "যুক্তি"ই সামান্য ধোপে টেকে না, তারপরও কেনো তাদের এত অনুসারী? তাদের চিন্তার গোলামদের বেশিরভাগই ধর্মীয় জ্ঞান থেকে হাজার মাইল দূরে, শুধু নাম ছাড়া তাদের মাঝে মুসলিমের ছিটেফোটাও খুঁজে পাওয়া যায় না। যে স্থাপনার ভিত দুর্বল, সামান্য ঝাকুনি তার জন্য যথেষ্ট। লেখক গল্পের ছলে ফুটিয়ে তুলেছেন তাদের "আকীদার" একের পর এক খন্ডন। বইটি শুরু হয়েছে এক তরুণের মনে বাসা বাঁধা অবিশ্বাসের জঞ্জাল সাফ করার মধ্য দিয়ে। একে একে ফুটে উঠেছে জাতীয়তাবাদ, নারীবাদ, দাসপ্রথা এবং ইসলামের মূল্যায়ন। ইসলামকে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা হিসেবে, নিছক আরব সংস্কৃতি নয়। মুক্তমনাদের অন্যতম খোরাক দাসীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক। অত্যন্ত যৌক্তিক ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হয়েছে ইসলামের এই বিধানের সৌন্দর্য, মহামহিমের হিকমাহ। লেখক দেখিয়েছেন, জিজিয়া কর চাপিয়ে দেয়া কোনো জুলুম নয় , বরং এটি সর্বোচ্চ "মানবিক" এবং সর্বোৎকৃষ্ট সমাধান। বারবার উঠে এসেছে ইসলামের দাসপ্রথার প্রমানিকতা, গ্রহণযোগ্যতা। লেখক ইউরোপিয়ানদের দাসপ্রথার দর্শন ছুড়ে ফেলে ইসলামের নিজস্ব দাসপ্রথার কনসেপ্ট তুলে ধরেছেন। ইসলামের পবিত্র বিধানকে উগ্রবাদের নাম দেয়া তাদের অত্যন্ত প্রিয় "অস্ত্র"। "সব সহিংসতার একমাত্র কারণ ধর্ম"_ এই অসার যুক্তিকে খন্ডন করেছেন তথ্যবহুল যুক্তি দিয়ে, একরাশ পরিসংখ্যান এর ভিড়ে তাদের এই যুক্তি যেনো পাঠকের হাসির খোরাক জুগিয়েছে। নারীদের মর্যাদা কে লেখক দেখিয়েছেন কুরআন সুন্নাহ এর রেফারেন্স দিয়ে, তুলনা করেছেন "সভ্য" ( পড়ুন অসভ্য) দের দেয়া নারী অধিকার(পড়ুন লাঞ্ছনা) এর সাথে। সবশেষে বলতে চাই, বইটি সব শ্রেণীর পাঠকদের পড়ার উপযোগী, সাবলীল ভাষাশৈলী সমৃদ্ধ একটি চমৎকার বই। সকলের সংগ্রহে রাখার মত একটি বই। বিশেষকরে তরুণ প্রজন্মের মানসপটে জন্ম দেয়া অবিশ্বাসের আগাছা সাফ করতে এটি যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে আশাবাদী। আল্লাহ বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে কবুল করুন, আমিন। রিভিউ লেখক : ফাহিম হাসান ২১.০৮.২০২২
Anas Ahmed Mahfuz @ September 8, 2022


নাস্তিকতা বর্তমানে একটা ট্রেন্ড/ ফ্যাশন হয়ে গেছে। নিজেকে নাস্তিক বলে পরিচয় দিতে তারা গর্ববোধ করে। তাদের কাছে যে নিজেকে যতো বড় সংশয়বাদী/কট্টর নাস্তিক বলে প্রমান করতে পারে সে ততোবেশি সম্মানিত। এমনকি দেখা যায় অনেক প্র‍্যাক্টিসিং মুসলিম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠে সংশয়বাদীদের পাল্লায় পড়ে এক সময় নাস্তিক হয়ে যায়। স্রষ্টাকে অবিশ্বাস, ইসলাম নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথা বলাতেই এদের স্বার্থকতা। এদের একটা ফালতু অপযুক্তি হচ্ছে স্রষ্টাকে দেখিনা তাই বিশ্বাস করিনা। তারা কিন্তু অনেক বিষয়-ই না দেখার পরেও অনেক বিশ্বাস করে। যেমনঃ ছোট থেকে তাকে শেখানো হয়েছে অমুক তোমার বাবা, তোমার মা এই সব ই কিন্তু কোনো রকমের যুক্তি ছাড়া বিনা সংশয়ে মেনে নিয়েছে। সে আর যাচাই করেনা আসলেই তারা তার আসল বাবা-মা কিনা, আসলেই তাদের বিয়ে হয়েছিল কিনা, কিংবা সে নিজে তাদের সন্তান কিনা! সে তখন এ কথাও বলে না যে আমি তোমাদের বিয়ে দেখি নাই তাই তোমরা আমার বাবা-মা না বা আমি তোমাদের সন্তান না। কিন্তু তাদের সব আপত্তি শুধু স্রষ্টাকে বিশ্বাস করার ক্ষেত্রে! আরে তুমি তোমার মাথার ব্রেইন ও দেখো নাই তার মানে কি তোমার মাথায় ব্রেইন নাই? অবশ্য ব্রেইন থাকলে কি আর নাস্তিক হইতা? ✒ মুমিন হতে হলে মৌলিকভাবে যে ৬ টি বিষয়ের ওপর ঈমান আনা ফরজ সেগুলো গায়েবের বিষয়। না দেখেই সেগুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। নতুবা মুমিন হওয়া যাবেনা, কিন্তু নাস্তিকরা বলে যুক্তি/জ্ঞান/অভিজ্ঞতা দ্বারা যা প্রমানিত হবে সেটার ই অস্তিত্ব আছে তাছাড়া কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। কিন্তু আমরা ঈমানের ৬ টি মৌলিক বিষয়কে যুক্তি/অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান কোনো কিছুর দ্বারাই প্রমান করতে পারবোনা। তার মানে কি ঈমানের ৬ টি বিষয়ের অস্তিত্ব নেই? অস্তিত্ব ঠিকই আছে তবে মানব-প্রসূত কোনো জ্ঞান দ্বারা সেই বিষয়গুলোকে প্রমান করা যাবেনা। আর আমরা যদি না দেখেই এসবের উপর বিশ্বাস করি ও আমল করি তাহলেই আমাদের এই এক জীবনের স্বার্থকতা। নাস্তিক রা দেখবেন সব সময়-ই ইসলাম এর কোনো না কোনো বিধান নিয়ে কটুক্তি তে লেগে আছে। মুসলমান দের হেয় প্রতিপন্ন করার পিছনে লেগেই আছে। তারা অনেক সময় ইসলামের অনেক বিষয়ে খুচা মেরে সেই বিষয়কে ব্যঙ্গ করে প্রশ্ন করে, আসলে তারা জানার জন্য প্রশ্ন করেনা প্রশ্ন করে অযথা তর্ক করার জন্য। 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' বইটাতে একটা সংলাপ আছে যে নাস্তিকরা হচ্ছে শিশুর মতো। অবুঝ, অপরিণত। একই প্রশ্ন বার বার করে। আসলেই তারা অবুঝ নাহলে কি আর সত্যকে চিনতে পারেনা? ✒ নাস্তিক দের কমন কিছু প্রশ্ন, একই প্রশ্ন বার বার ভিন্ন আঙ্গিকে তারা করবেই যেমন ইসলামের দাস প্রথা, কুরআনে কেনো নারীদের শস্যক্ষেত্র বলা হলো? বনু কুরাইযার মৃত্যুদন্ড ইত্যাদি। লেখক তার 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড' বইটাতে তাদের এসব যুক্তির খন্ডন করেছেন। কেও যদি অল্প বয়সে দাড়ি রাখে তাহলে তাকে পরিবার থেকে বলা হয় এখনই কি তোমার দাড়ি রাখার বয়স হয়েছে? ক্যারিয়ার টা ঠিক করো, বিয়ে-টিয়ে করো, শেষ বয়সে গিয়ে না হয় দাড়িটা রাখবা? দাড়ি রাখা তো সুন্নাত! সুন্নাত না মানলে গুনাহ তো নেই!! এইসব বিষয়ের মোক্ষম জবাব তিনি তার বইটাতে উল্লেখ করেছেন। ✒ নাস্তিকদের প্রশ্ন গুলো সবই ঠুনকো! তাদের প্রশ্নের দাঁত ভাঙ্গা উত্তর সহজেই দেওয়া যায়। কিন্তু যারা নতুন দ্বীনের পথে এসেছে তারা অনেক সময় নাস্তিকদের কথার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সংশয়ে পড়ে খেই হারিয়ে ফেলে। দ্বীনের পথ থেকে দূরে সরে যায়। আমাদের মতো জেনারেলদের এই বইটি একবার হলেও পড়া উচিত তাদের ঠুনকো প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য। যাতে আমরা সংশয়বাদী না হয়ে যাই। রিভিউঃ আনাস আহমেদ মাহফুজ ✒ বই সম্পর্কে তথ্যঃ বইঃ ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখকঃ ডা. শামসুল আরেফীন শক্তি প্রকাশনীঃ মাকতাবাতুল আযহার
ফাহিম হাসান @ September 8, 2022


বই: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখক: ডা. শামসুল আরেফীন প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আযহার পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৯২ ঈমান- যার অর্থ বিশ্বাস। কেমন বিশ্বাস? বিশ্বাসের তো অনেক রকম সংজ্ঞায়ন হতে পারে। কত ভাগ বিশ্বাস হতে হবে? ৫০ ভাগ? ৯০ ভাগ? ৯৯ ভাগ? অন্য যে কোন বিশ্বাসকে সংজ্ঞায়ন করলে এর যেকোনোটাই সঠিক উত্তর হতে পারে। তবে ঈমান বলতে আমরা যে বিশ্বাস বুঝি তা হতে গেলে ১০০% বিশ্বাস হতে হবে। এক ভাগ এদিক ওদিক হলেও তাকে আর ঈমান বলা যাবে না। যাকে বলা হয় সংশয়বাদ। আর ঈমানের মধ্যে সংশয়বাদীতার কোন স্থান নেই। বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে যে মহামারী কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে, খামচে নিচ্ছে তাদের ইমান, তার নাম "সংশয়বাদ"। আল্লাহ সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, কবর সত্য, আসলেই কি তাই? যদি না হয়? তাহলে তো আমার আম ছালা সব হারাবো। যদি মৃত্যুর পর আবিষ্কার করি আমার বিশ্বাস ভুল বুনিয়াদের উপর দাড়িয়ে ছিলো? এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে মস্তিষ্কের দৃশ্যপটে। এর সূচনা কোথা থেকে? সহজ উত্তর হলো "দাওয়াতী কাজ". অবাক হচ্ছেন? না অবাক হবার কিছু নেই, এই দাওয়াত ইসলামের না, কালিমার না, এই দাওয়াত নাস্তিক্যবাদের। আমরা আমাদের লক্ষ, উদ্দেশ্য, দায়িত্ব ভুলে গেলেও তারা ভুলে নেই, বসে নেই, পরিশ্রমে নিজের ঘাম ঝরাচ্ছে। তার সুফল (পড়ুন কুফল) আজ আমাদের চোখের সামনে। কত অসহায় বাবা দেখছেন নিজের সন্তানকে নাস্তিক্যবাদ, সংশয়বাদের পথের পথিক হিসেবে, শুধু নিরবে দেখে যাচ্ছেন, ছুটে চলছেন হন্যে হয়ে, কিভাবে তাকে ফেরানো যায়, কিভাবে তার নিভু নিভু ঈমান কে একটু তাজা করা যায়। বুকের ভিতর তার একরাশ হাহাকার!! বইটির নামকরণের সার্থকতা পরতে পরতে স্বীকার করতেই হয়। নাস্তিক্যবাদী, সংশয়বাদী, শাহবাগী, কথিত "বৈজ্ঞানিক চিন্তার ইম্পোর্টার" দের একটা কমন প্যাটার্ন লক্ষ করবেন। এককথায় বললে, "ডাবল স্ট্যান্ডার্ড" ।অর্থাৎ, তুমি করলে হারাম, আমাদের বেলায় আরাম। একটু লক্ষ করলেই দেখা যায়, তাদের বেশিরভাগ "যুক্তি"ই সামান্য ধোপে টেকে না, তারপরও কেনো তাদের এত অনুসারী? তাদের চিন্তার গোলামদের বেশিরভাগই ধর্মীয় জ্ঞান থেকে হাজার মাইল দূরে, শুধু নাম ছাড়া তাদের মাঝে মুসলিমের ছিটেফোটাও খুঁজে পাওয়া যায় না। যে স্থাপনার ভিত দুর্বল, সামান্য ঝাকুনি তার জন্য যথেষ্ট। লেখক গল্পের ছলে ফুটিয়ে তুলেছেন তাদের "আকীদার" একের পর এক খন্ডন। বইটি শুরু হয়েছে এক তরুণের মনে বাসা বাঁধা অবিশ্বাসের জঞ্জাল সাফ করার মধ্য দিয়ে। একে একে ফুটে উঠেছে জাতীয়তাবাদ, নারীবাদ, দাসপ্রথা এবং ইসলামের মূল্যায়ন। ইসলামকে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা হিসেবে, নিছক আরব সংস্কৃতি নয়। মুক্তমনাদের অন্যতম খোরাক দাসীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক। অত্যন্ত যৌক্তিক ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো হয়েছে ইসলামের এই বিধানের সৌন্দর্য, মহামহিমের হিকমাহ। লেখক দেখিয়েছেন, জিজিয়া কর চাপিয়ে দেয়া কোনো জুলুম নয় , বরং এটি সর্বোচ্চ "মানবিক" এবং সর্বোৎকৃষ্ট সমাধান। বারবার উঠে এসেছে ইসলামের দাসপ্রথার প্রমানিকতা, গ্রহণযোগ্যতা। লেখক ইউরোপিয়ানদের দাসপ্রথার দর্শন ছুড়ে ফেলে ইসলামের নিজস্ব দাসপ্রথার কনসেপ্ট তুলে ধরেছেন। ইসলামের পবিত্র বিধানকে উগ্রবাদের নাম দেয়া তাদের অত্যন্ত প্রিয় "অস্ত্র"। "সব সহিংসতার একমাত্র কারণ ধর্ম"_ এই অসার যুক্তিকে খন্ডন করেছেন তথ্যবহুল যুক্তি দিয়ে, একরাশ পরিসংখ্যান এর ভিড়ে তাদের এই যুক্তি যেনো পাঠকের হাসির খোরাক জুগিয়েছে। নারীদের মর্যাদা কে লেখক দেখিয়েছেন কুরআন সুন্নাহ এর রেফারেন্স দিয়ে, তুলনা করেছেন "সভ্য" ( পড়ুন অসভ্য) দের দেয়া নারী অধিকার(পড়ুন লাঞ্ছনা) এর সাথে। সবশেষে বলতে চাই, বইটি সব শ্রেণীর পাঠকদের পড়ার উপযোগী, সাবলীল ভাষাশৈলী সমৃদ্ধ একটি চমৎকার বই। সকলের সংগ্রহে রাখার মত একটি বই। বিশেষকরে তরুণ প্রজন্মের মানসপটে জন্ম দেয়া অবিশ্বাসের আগাছা সাফ করতে এটি যথেষ্ট সহায়ক হবে বলে আশাবাদী। আল্লাহ বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে কবুল করুন, আমিন। রিভিউ লেখক : ফাহিম হাসান
সাওদা সিদ্দিকা নূর @ September 8, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ • বই: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড • রিভিউয়ার: সাওদা সিদ্দিকা নূর . স্লিভলেস পরা ব্যক্তিস্বাধীনতা, হিজাব-নিকাব পরা পরাধীনতা; পাশ্চাত্য কিংবা নাস্তিক-সংশয়বাদীরা করলে মানবতা, মুসলিমরা করলে বর্বরতা; এই ধরণের দু'মুখো চিন্তা লালন করা মানুষগুলো পাশ্চাত্যের পঙ্গু যুক্তির ওপর ভর করে অন্য ধর্মের আয়নায় ইসলামকে জাজ করে। নিজেদের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য একপ্রকার জোর করেই হাতে হারিকেন নিয়ে ইসলামের খুঁত খুজতে বের হয় এবং সাধারণ মুসলিমদের বিভ্রান্ত করে দেয়। ইসলামকে শুধু মাত্র ধর্ম হিসেবে মানা মানুষগুলোও খুব সহজে তাদের ফাঁদে পা দেয়। হয়ে যায় বিশ্বাসী থেকে সংশয়বাদী, এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে নাস্তিক। উম্মাহর এই নাজুক অবস্থায় ইসলামি জীবনব্যবস্থায় লুকায়িত কল্যাণসমূহ খুঁজে বের করে সবাইকে অবহিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উম্মাহর এই গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন অনুধাবন করেই লেখক ডা. শামসুল আরেফিন রচনা করেছেন ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’। গল্পভাস্যে সুশৃঙ্খল যুক্তিতর্ক এফোড় ওফোড় করে লেখক তুলে ধরেছেন জীবনব্যবস্থা হিসেবে ইসলামের চিরহরিৎ নিয়মকানুন ও ধারালো জবাবে ভোঁতা করে দিয়েছেন নাস্তিক-সংশয়বদীদের মন ভোলানো ভঙ্গুর যুক্তি । যে বইয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে সুদীর্ঘ সূচনা টানলাম, সে বইয়ের সম্পূর্ণ পরিচয় না দিলে কি আর ব্যাপারটা জমে? প্রথমে তো পারিবার পরিচিতি, এরপর দেখা সাক্ষাৎ। তো ঝটপট দেখে আসি বইয়ের সংক্ষিপ্ত পরিচয়: • বইয়ের নাম: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড • লেখক: ডা. শামসুল আরেফিন • প্রকাশনায়: মাকতাবাতুল আযহার • পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৯২ • মুদ্রিত মূল্য: ৩৬০ /- সূচনার সুদীর্ঘ সমাপ্তি হলেও পিকচার আভি বাকি হ্যায় মেরা দোস্ত। বই নিয়ে গপসপ তো মাত্র শুরু হলো। তাই চা-নাস্তা সাথে নিয়েই বসুন। এই বই নিয়ে বহু সময় গপসপ না করলে যে পোষাবে না। . • পাঠ অভ্যন্তরে: বই পর্যালোচনার শুরুতে বইয়ের চমৎকার প্রচ্ছদ নিয়ে কথা না বললেই নয়। মূলত আলাদা ফ্রেমের একটি চশমা দ্বারা লেখক ইসলামের প্রতি সেক্যুলার, নাস্তিক ও সংশয়বাদীদের দু’রকম দৃষ্টিকে বুঝিয়েছেন। এরপর তাদের এই দু’রকম দৃষ্টির একটিকে লেখক ঢিল ছুঁড়ে তথা যুক্তি ছুড়ে অন্ধ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ পুরো বইয়ের কনসেপ্ট প্রচ্ছদে ফুটে উঠেছে। গল্পভাস্যে ইসলামের কিছু সুক্ষ্ম ও অতিগুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে সাজানো হলেও শুধুমাত্র গল্পের মাপকাঠিতে বিচার করা যাবে না এই বই। কারণ এখানে ছিল বর্তমান প্রজন্মের করুণ বাস্তবতা, গল্পভাস্যে উপলব্ধির অনুরণন ও ধর্ম, বিজ্ঞান, ইতিহাস বিশ্লেষণের মাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিক-সংশয়বাদীদের খোঁড়া যুক্তির যথাবিহিত কড়া জবাব। যে বিষয়গুলো নিয়ে ইসলামবিদ্বেষী কিংবা নাস্তিক-সংশয়বাদীরা নয়, স্বয়ং মুসলিমরাও হীনমন্যতায় ভোগে, ঠিক সেই বিষয়গুলোই প্রতিটি গল্পে লেখক খুব নিপুণ ভাবে তুলে ধরেছেন। মোট এগারোটি গল্প নিয়ে সজ্জিত বইয়ের প্রায় প্রতিটি গল্পেই ছিল ভিন্ন চরিত্র, ভিন্ন প্রেক্ষাপট ও ভিন্ন উপলব্ধি। প্রতিটি গল্প নিয়ে আলোচনা করব না। এক্ষেত্রে আর বইয়ের সাসপেন্স থাকবে না। শুধু এটুকু বলব, প্রতিটি গল্পই ছিল স্বতন্ত্র, প্রয়োজনীয় ও শক্তিশালী যুক্তি দিয়ে ভরা। ‘না দেখে বিশ্বাস: মানবজন্মের স্বার্থকতা’ দিয়ে গল্প শুরু করে লেখক বইয়ের ইতি টেনেছেন শাশ্বত একত্ববাদের সাক্ষী দিয়ে। অর্থাৎ অবিশ্বাসকে কীভাবে চূড়ান্ত পর্যায়ে বিশ্বাসে রূপ দিতে হয়, সেটা একদম ম্যাপ আকারে দেখানো হয়েছে। শুধুই কি শুরু আর শেষ? বইয়ের প্রতিটি গল্প একটি আরেকটির সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল। ঠিক বিনি সুতার মালার মতো। সিরিয়াল মেইনটেইন করে না পড়লে হঠাৎ করে আপনার মনে হবে, মালা বুঝি ছিড়ে গেল, কিংবা লেখক বুঝি লিখতে পারল না। প্রতিটি গল্পে লেখক নিজের যুক্তিতর্ক ও রেফারেন্সের ঝুলি নিয়ে কখনো শিক্ষক হয়েছেন, কখনো বন্ধু, কখনো ডাক্তার কিংবা কখনো স্বজন। বাস্তবতার নিরিখে বিচার করলে মনে হবে, আপনি বুঝি আপনার চেনাপরিচিতি কোনো না কোনো মুখ গল্পের ভেতর খুঁজে পাচ্ছেন। বইতে লেখক শুধুমাত্র তার যুক্তি ও রেফারেন্স নিয়ে থেমে থাকেননি, বরং কাউন্টার অ্যাটাক করে প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করে দিয়েছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন, ‘তোমরা ডাবল স্ট্যান্ডার্ডবাজি করছো’। . • পাঠ অভিমত: মুসলিমদের অস্তিত্ব সংকটের সম্পূর্ণ দোষ তথাকথিত পাশ্চাত্যের অনুসারী, ইসলামবিদ্বেষী ও নাস্তিক-সংশয়বাদীদের দিতে আমি নারাজ। কারণ আমরা মুসলিমরা ইসলামকে শুধু ধর্মের গণ্ডিতে আবদ্ধ করে ফেলেছি। যার কারণে ইসলাম যে নির্ভূল-নিখুঁত, প্রয়োগিক দিক থেকে ইসলামি জীবনব্যবস্থা যে সব মতবাদের উর্ধ্বে, এটা জানি না। তাই খুব সহজেই ইসলামবিদ্বেষীরা মুসলিমদের এই দুর্বলতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ইসলামকে ভুল ভাবে রিপ্রেজেন্ট করে। আমি বলব না যুক্তিতর্ক ও বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে আপনি ইসলামের নির্ভুলতা তুলে ধরেন। আপনাকে করতে হবে যেটা, সেটা হচ্ছে ইসলামি জীবনব্যবস্থার কল্যাণসমূহ সবার সামনে পেশ করা। তাহলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। লেখক ঠিক এই বিষয়টিই করেছেন। চরিত্র ও ঘটনার প্রেক্ষাপটে হয়ত তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হয়েছে, যুক্তিও দেখিয়েছেন; কিন্তু মূল উপজীব্য ছিল ইসলামি জীবনব্যবস্থার কল্যাণ তুলে ধরা। গল্পভাস্য বলেই যে সাহিত্যের মানদণ্ডে গল্পগুলো উত্তীর্ণ হয়ে যাবে, ব্যাপারটা তা নয়। মূলত সাহিত্যের জন্য লেখক গল্পগুলো লিখেননি। মানুষকে বোঝানোর সুবিধার্থে লেখক তার যুক্তি ও বিশ্লেষণগুলোকে গল্পের ডালিতে সাজিয়েছেন। তাই সুমধুর সাহিত্যের রস ঢেলে দিলে এই বই উপযুক্ততা হারাতো ও যুক্তিগুলো খণ্ডন করা যেত না। তবে এটা মানতেই হবে, প্রতিটা গল্পে লেখক চরিত্রগুলোর মনস্তাত্ত্বিক ও আচরণগত বিষয়গুলো খুব রিয়েলিস্টিক ভাবে তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে লেখক যে পেশায় একজন ডাক্তার, আর রোগীর মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার ও আচরণের ওপর যে তার যে খুব ভালো দখল রয়েছে, সেটা খুব সহজে অনুমান করা গিয়েছে। যুক্তিনির্ভর বইগুলো পড়ার সময় কেন্দ্রীয় চরিত্রে নিজেকে বসানোর একটা অভ্যাস আছে আমার। তাই প্রতিটা গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রে আমি নিজেকে কল্পনা করেছি আর বিপক্ষে বসিয়েছি যাকে আমি আমার কাঙ্ক্ষিত দাওয়াত দিতে চাই। এক্ষেত্রে কখনো কলেজের নেত্রী ছিল বিপক্ষের চরিত্র, কখনো আমার ছাত্রী, কখনো বা ইসলাম বিদ্বেষী কোনো আত্মীয় কিংবা কোনো বন্ধু। যার কারণে প্রতিটা গল্পের শেষে ইসলামি জীবনব্যবস্থার সুগঠিত ও সুদূরপ্রসারী কল্যাণ দেখে অটোমেটিক অন্তর প্রশস্ত হয়ে গিয়েছে। গর্ব নিয়ে বলে উঠেছি, ‘আহ! আমার ইসলাম’। দাওয়াতের মাঠে আপনি যত বিনয়ী হবেন, যত ধৈর্যশীল হবে, ঠিত তত সফলতা অর্জন করতে পারবেন। একটা গল্পের চরিত্রের নাম ছিল ‘রাসেল’। এই ‘রাসেল’ চরিত্রকে যখন আমার বিপক্ষে দাঁড় করিয়েছিলাম, তখন প্রচণ্ড ক্ষোভ হচ্ছিলো। গল্পের শেষে লেখকের ধারালো বাকপটুতায় খানিক তৃপ্তি পেয়ে যখন ভাবছিলাম ‘এবার ঠিক আছে’, লেখক ঠিক তখনই আমাকে স্মরণ করিয়ে দিলেন, দাওয়াতের মাঠে ক্ষোভের কোনো জায়গা নেই; ক্ষোভ মানেই পরাজয়। আমাদের এই ধরণের রাসেলদের জন্য বুকফাঁটা দু’আ করতে হবে। বইয়ে দু’টো উক্তি ছিলো, ‘নাস্তিকতা একটি অসুখ। একজন অসুস্থ কিংবা পাগলের প্রতি যেমন মমতা আসা দরকার, তেমনি আপনার আশেপাশে যে নাস্তিক আছে, তার দিকে মমতার সাথে তাকানো দরকার।’ আরেকটা হচ্ছে, ‘নাস্তিকরা হচ্ছে শিশুর মতো। অবুঝ অপরিণত’। গল্পে চরিত্রের ভিন্নতা থাকলেও আমি প্রতিটা গল্পে খুঁজে পেয়েছি একজন দরদী ডাক্তার দাঈকে যিনি গল্পের ছলে এই পাগল ও অসুস্থ শিশুগুলোর অবান্তর প্রশ্নগুলোর উত্তর অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে দিয়েছেন। সত্যি কথা বলতে, যদি বলি লেখক শুধু সংশয়বাদী ও নাস্তিকদের জবাব দিয়েছেন তবে ভুল হবে। পুরো বইতে লেখক সুক্ষ্ম ভাবে তুলে ধরেছেন, দাওয়াতি রূপরেখা। নাস্তিক, সংশয়বাদীদের কুপোকাত করতে লেখক যে বিশ্লেষণ ও যুক্তি দেখিয়েছেন, সেগুলো সাধারণ কোনো যুক্তি-বিশ্লেষণ ছিলো না। পর্যাপ্ত রেফারেন্স, লেখকের গভীর চিন্তাবোধ ও শক্তিশালী যুক্তির ধরালো জবাবে প্রতিটি গল্প স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছিল। বইতে এত বেশি পরিমাণ রেফারেন্স ছিল যে, রেফারেন্স পড়তেও অনেক সময় চলে গিয়েছে। এই পর্যাপ্ত রেফারেন্স বইটিকে অথেনটিক করেছে। সিদ্ধ জনের কাছে গঠনমূলক আলোচনা যেমন গুরুত্ব বহন করে, ঠিক তেমন গঠনমূলক সমালোচনাও গুরুত্ব বহন করে। বইটিতে লেখকের ধারালো যুক্তির ভেতর সম্পাদনার ভুলগুলো চক্ষুশূল হয়ে ধরা দিয়েছিল। তাছাড়া বেশিরভাগ সংলাপগুলো ছিল অনেক বড়। সাধারণত এত লম্বা সংলাপ একসাথে কেউ বলে না। যেহেতু গল্পের আবহে সংলাপ সাজানো হয়েছে, তাই এত লম্বা সংলাপ বাস্তবতা বিবর্জিত ছিল। গল্পগুলোর পরিবেশে তেমন কোনো বৈচিত্র্যতা ছিলো না। সব গল্পগুলোর বর্ণনা একই ধাঁচের ছিল। কেন্দ্রীয় চরিত্রের যুক্তির বিপরীতে প্রায় প্রতিটা প্রতিপক্ষের রিঅ্যাকশন ছিলো সেইম। যেহেতু লেখক নিজেই বলেছেন, বইয়ের জগতে তার যাত্রা শুরু কিন্তু শেষ নয়; তাই প্রথম বইতে এ ভুলচুক হওয়া স্বাভাবিক ও আমার কাছে তেমন গুরুত্ব বহন করছে না। লেখকের জন্য অনেক অনেক দু’আ। . • বইয়ের গুরুত্ব ও কারা পড়বেন? শুরুতেই বলেছিলাম মুসলিমদের অস্তিত্ব সংকটের সময় ইসলামি জীবনব্যবস্থার কল্যাণসমূহ জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। না হলে মুসলিম হিসেবে আমদের ভিত আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়বে। বাংলা ভাষায় ডা. শামসুল আরেফিনই সম্ভবত প্রথম লেখক যিনি কোনো বইতে ভারসাম্যপূর্ণ বিশ্লেষণ দ্বারা ইসলামের সেন্সেটিভ কিছু বিধানের কল্যাণগুলো তুলে ধরেছেন এবং পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী রূপ সাহসী ভুমিকায় উন্মোচন করেছেন। হয়ত ক্ষুদে পাঠক হিসেবে এই বইটির গুরুত্ব আমি বলে বোঝানোর ক্ষমতা রাখি না। পাঠক মহলে আরিফ আজাদের সাজিদ সিরিজ নিয়ে যে তুমুল মাতামাতি হয়েছে, তার দশ ভাগও ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’ নিয়ে হয়নি। অথচ সাজিদ সিরিজের যুক্তি-বিশ্লেষণের থেকে এই বইয়ের যুক্তি-বিশ্লেষণগুলো ছিল বেশি শক্তিশালী।
মারজানা কুবরা @ September 8, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ আসুন স্ট্যান্ডার্ড শিখি বই:ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। লেখক :ড: শামসুল আরেফীন! প্রকাশনী :মাকতাবাতুল আযহার। নাস্তিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি কখনো হয়েছেন?যদি নাস্তিকদের জবানবন্দি নিতে চান ব্যাপারটা কেমন হতে পারে?"ডাবল স্ট্যান্ডার্ড"বইটি পুরোটাই একটা প্যাকেজ ধরে নেওয়া যায়।নাস্তিকতার জবানবন্দি নেওয়া এবং জবাব দেওয়ার।সবমিলিয়ে বইটিকে গবেষণামূলক,ইসলামিক,নাস্তিক্য যুক্তি খণ্ডনসহ বহুমুখী মাত্রার গল্পগ্রন্থ। শাব্দিক মনন,চিন্তার মনন দু'ই প্রকাশ পেয়েছে লেখায়। আমার পড়া লেখকের প্রথম বই এটি। এরপর আরো কিছু পড়েছি।প্রকাশ হওয়ার পরপরই বইটা ব্যাপক সাড়া ফেলে।আগ্রহ জন্মায়।আর পড়া ধরি। এই বইটি পড়ার সময় কোন বিরক্তি আসেনি। শেষ করার তাড়াও আসেনি। বুঝে বুঝে পড়েছি। এই বইটিকে গতানুগতিক বই বা গল্পের বই বলেও আমার মনে হয়নি। আপনি যদি ভালো পাঠক না হয়ে থাকেন তাহলে বইটি পড়া উচিৎ। আর যদি ভালো পাঠক হন,তাহলে আরো আগে পড়া উচিত। নাস্তিক্যবাদের অসারতা আর নাস্তিকদের অমূলক প্রশ্নের জবানবন্দি।অত:পর ইসলামের মানদণ্ডে এসকল যুক্তি কতটা অমূলক অযৌক্তিক তা বইটি অধ্যায়নে বুঝতে পারা যায়।নাস্তক্যবাদ কেন্দ্র করে অনেক প্রশ্ন উঠে আসে তাদের মহল থেকে।স্রষ্টা আর সৃষ্টিকে পৃথক করার ধূর্ত প্রচেষ্টাগুলো কত সহজে বুঝে নেওয়া যেতে পারে।এই পড়ে সেটাই জানাযায়। নাস্তিকতো বটে মুসলিমদের মনে বিতাড়িত আগন্তুক(শুয়তান)এসে মাঝে মাঝে এসব ভিত্তিহীন প্রশ্ন তুলে প্ররোচিত করতে চায়। মুমিনকে দ্বিধা গ্রস্থ করার লড়াইয়ে নামে। শয়তানের যুক্তির এই লড়াই মুমিনকে জিততে হয় হেকমা দিয়ে। এই প্রশ্নোত্তর গুলো শুধু নাস্তিকদের জবাব দেওয়ার জন্য নয়।আমার মনে হয় নিজকে নিজে বিশুদ্ধ চিন্তায় বাঁচাতেও জানা দরকার ছিল। আল্লাহর মহাত্মা থেকে শুরু আমাদের রাসূল ﷺ এর জীবন কর্ম যেখানেই তারা আঙ্গুল উঁচাক।সর্বদা মুমিনের ক্বলবে এবং বাহিরে থাকবে দ্ব্যর্থহীন স্বীকারোক্তি। গল্পের ছলে এতো সুন্দর ভাবে,আমার আপনার জীবনের মধ্যে থেকে সমাধান গুলো খুঁজে দিয়েছেন। টিএসসি কিবা ক্যাম্পাস স্কুল-ভার্সিটি,পাড়া-মহল্লা,মসজিদ ময়দান সবখানে পাবেন তাদের।সাধারণ একটা প্রশ্ন আর যুক্তি দিয়ে তারা আপনাকে আক্রান্ত করে ফেলবে। আপনি যদি সচেতন হয়ে থাকেন তাহলে তাদের প্রশ্নের উত্তর গুলো সহজ এবং আপনার নিকটে। লেখক তার লেখনিতে প্র‍্যাক্টিক্যালি সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন। গল্প আর শব্দে খোঁচিত আছে দৈনিন্দ আমল-তরবীয়তের শিক্ষা। আছে রাসূল ﷺ এর প্রেমের খোরাক।আবার একবার তাঁর মাঝে ডুব দেওয়ার চিন্তা শক্তি। প্রতিটি গল্পের শুরুটা যেমনি হোক। শেষগুলো ছিল ভালো লাগার। এই শব্দের সাথে সখ্যতা করে। মনের মধ্যে আসুক না হয় কিছু আসকারা। এই ইচ্ছের আসকারা গুলো মন্দ নয়। ক্ষতিও তো নেই। আমরাও স্বপ্ন দেখতে পারি পরিবর্তনের।পরিবর্তনের শুরুটা হতে পারে আমার আপনার দ্বারা আমাদের আশপাশ দিয়েই না হয়। আশা রাখতে দোষ কোথায়? সমাজের আলো আমাদেরই ফুটাতে হবে।বই তো একটা বিপ্লবের ডাক। নতুনকে নতুন রঙে রাঙাবার। যাদেরকে হারিয়ে ফেলেছি। যাদের মাঝে হারানোর সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।তাদের এবেলায় ডাবল স্ট্যান্ডার্ড শিখানো খুব দরকার। এই শিক্ষাটা হোক শুধুই পরিবর্তনের জন্য।কাম ব্যাক করার জন্য। পরিশেষে বলব,জ্ঞান ও শব্দের অপ্রতুলতায় বইটিকে হয়তো ভালো ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারিনি।তবে চোখ বন্ধ করে জ্ঞান আহরণ, ইসলামের মাহাত্ম্য, মহান রবের সৃষ্টি জগতের অজানা অনেক জ্ঞান, সাহিত্যের মনন খুঁজে পেতে অবশ্যই বইটি পড়া উচিত। হয়তো বইটি আপনার সুপ্ত অনুভূতি গুলো জাগিয়ে তুলবে। চোখের মণিকোঠা চিকচিক করে উঠবে। বইটির পৃষ্ঠার ভাঁজে ভাঁজে থাকা শব্দের অনুভূতির জাগরণে। -মারজানা কুবরা। ১৩-০৮-২০২২ঈ:
মোঃ নাদিম উদ্দীন আল মিয়াজি @ September 8, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ 📚 বই : ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখক : ডা. শামসুল আরেফিন ( Shamsul Arefin Shakti ) রিভিউ : মোঃ নাদিম উদ্দীন আল মিয়াজি ( AL Miyaji ) الحمد لأهله والصلاة على أهلها أما بعد فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم - بسم الله الرحمن الرحيم، قال الله تبارك وتعالى : ذٰلِكَ الكِتٰبُ لا رَيبَ ۛ فيهِ ۛ هُدًى لِلمُتَّقين الَّذينَ يُؤمِنونَ بِالغَيبِ. পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকেই সত্য-মিথ্যার লড়াই, আলো-আঁধারের বিরোধ চলে আসছে এবং এই দ্বন্দ্ব ক্বিয়ামত পর্যন্ত চলমান থাকবে। প্রতিক্ষণেই আঁধার প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে আলোর শুভযাত্রা রুখে দিতে, প্রতিযুগেই মিথ্যা গায়ের জোরে চেয়েছে সত্যের টুঁটি চেপে ধরতে। কিন্তু সত্য সবসময়ই আপন অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যের বলে বিকশিত হয়েছে, আলো ভাস্বর থেকেছে আপন দ্যুতিতে। প্রতিযুগেই বাতিলপন্থীরা আশ্রয় নিয়েছে ঠুনকো প্রশ্ন এবং খোঁড়া যুক্তির আঁচল-তলে। উদ্ভট সব প্রশ্নের মাধ্যমে সংশয়ে ফেলে দিয়েছে কমজোর ঈমানদারকে। দোদুল্যমান মুসলমানদের অন্তরে বপন করেছে অনাস্থার বীজ। একটু লক্ষ্য করলে অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন যে, বাতিলপন্থীরা মুখরোচক শব্দ ও শৈল্পিক বর্ণনার মাধ্যমে কেবলমাত্র নিজেদের খোঁড়া যুক্তি আর ঠুনকো প্রশ্নকে সম্বল করেই এক বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধে নেমে পরেছে। তবে, যুক্তি-তর্ক খোঁড়া এবং উত্থাপিত প্রশ্ন ঠুনকো হলেও তাদের মুখরোচক শব্দ এবং রুপময় ও শৈল্পিক বর্ণনার ফাঁদ কমজোর ঈমানদার ও দোদুল্যমান মুসলমানের অন্তরকে বিশাদিত করে তুলেছে । তদুপরি আমাদের কয়েক প্রজন্ম ফিরিঙ্গি ও পশ্চিমা শিক্ষা সিলেবাসে পড়াশোনা করায় আমাদের মন ও মগজে গিজগিজ করছে পশ্চিমা চিন্তাচেতনা, সেট-আপ হয়ে আছে তাদের চালচলন এবং কালচার। লেখক এই বইয়ের মাধ্যমে প্রথমে ওয়াশকৃত সেই মগজ ও মনকে এমন বিষাক্ত উপাদান থেকে পিউরিফিকেশন দিয়ে নিউট্রালে আনার চেষ্টা করেছেন। তারপর এমন কাঠখোট্টা বিষয়ের উদ্ভট সব প্রশ্নের সমুচিত জবাব ও যৌক্তিক যুক্তিগুলোকে ছোট ছোট গল্পের আদলে তাঁর নিজস্ব রং-তুলিতে তুলে এনেছেন। কুঠারাঘাত করেছেন সংশয়ের দালানে। আঁধারের জাল ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে নিজেকে আবিষ্কার করেছেন "আলোর এক ফেরিওয়ালা" রুপে। লেখক এই বইয়ে আরো খুঁজেছেন ইসলামিক বিধানের বর্ণনাতীত সব কল্যাণ ও সৌন্দর্যের ফিরিস্তি'ও। সবমিলিয়ে শামসুল আরেফীন সাহেবের এই বইটিকে নাস্তিক, সেক্যু-সমাজসহ সকল ইসলাম বিদ্বেষীদের জন্য একটি এন্টিডোট বলা যায়। এমন কাঠখোট্টা বিষয়গুলোকে ছোট ছোট গল্পাকারে কিংবা আড্ডার কথোপকথনে তুলে আনার ক্ষেত্রে লেখকের ছিল মুন্সিয়ানা। গল্পকে রসালো করতে এবং যুক্তি খণ্ডনের স্বাদ অক্ষুণ্ণ রাখতে লেখক মূল গল্পে রেফারেন্স এড়িয়ে গেলেও পাদটীকায় জুড়ে দিয়েছেন অসংখ্য রেফারেন্স। দেশীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির সাযুজ্যপূর্ণ এবং ইসলামিক শব্দচয়নে লেখক যথেষ্ট সতর্ক ও যত্নবান ছিলেন। কেননা, বর্তমান জেনারেশন সাহিত্য চর্চায় ইসলামিক শব্দ চয়নকে কাঠখোট্টা মনে করতে শুরু করেছে। ইদানীংকালের বিভিন্ন লেখাজোখায় বিষয়টি খুব জোরেশোরে ব্যাপকতাও পাচ্ছে। তারা "সৃষ্টিকর্তা" বা "ইশ্বর" বলাকে সাহিত্যের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ মনে করছে, "দোস্ত", "বন্ধু", শব্দ ব্যতিরেকে "দাদা" শব্দের আশ্রায়তলে ঠাঁই নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। যুবসমাজের মগজে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুয়ানী সাংস্কৃতিক শব্দচয়নের এমন মানসিকতা গিজগিজ করাটা (সাংস্কৃতিকভাবে) একধরণের ইন্টেলেকচুয়াল ডিফেইটেড হওয়ার নামান্তর। আরো একটি ব্যামোর ব্যপার হচ্ছে, এদেশে মোটাদাগে যাদের আমরা সাহিত্যিক বলে চিনি; তারা ইসলামিক জীবনাচার সমৃদ্ধ সাহিত্যকে ধরে-বেঁধে বাংলা সাহিত্যের গণ্ডি থেকে বের করে দিয়েছেন। এদেশের ধর্মীয় ও সংস্কৃতির পরিপন্থী এমন সব জীবনাচার যেমন অবৈধ প্রেম-ভালোবাসা ফুটিয়ে তোলাকে সাহিত্য চর্চার একমাত্র প্রায়োগিক ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন। সাহিত্যকে সমাজের দর্পণ বা আয়নারূপে অভিহিত করা হয়। সাহিত্য কল্পনা-নির্ভর বটে; তবে কল্পনা আসে বাস্তবতার নিরিখে। চারপাশের জীবনাচার, জীবন পদ্ধতি, আদর্শ ও অনুশাসন, শিক্ষা ও তৎসংশ্লিষ্ট চেতনাবোধই সাহিত্যের নিয়ামক। "বাঙ্গালী সংস্কৃতি, ধর্মীয় জীবনাচার, আদর্শ, শিক্ষা ও চেতনার রূপময় ও শৈল্পিক বর্ণনাই যে আমাদের সাহিত্য" লেখক ছোট ছোট গল্পের আদলে বিষয়টি চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। সাহিত্য চর্চায় লেখকের দাবি- এমন কপি-পেস্ট মানসিকতা, ভিন্ন সাংস্কৃতিক শব্দের পদচারণা এবং নিষিদ্ধ ও অবৈধ প্রেম-ভালোবাসার মানচিত্র থেকে আমাদের সাহিত্য রেহাই পেতে চায়। ছোট্ট কলেবরের এই বইটি লেখক শামসুল আরেফীন মোট এগারটি গল্প দিয়ে সাজিয়েছেন। শুরু করছেন "স্রষ্টায় বিশ্বাস" দিয়ে। কুরআনের ভাষায় ঈমান বিল-গায়েব। লেখকের লেখায়- না দেখে বিশ্বাস। লেখক প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, মানুষের এক্সক্লুসিভ গুণ'ই হচ্ছে না দেখে বিশ্বাস করা। পরবর্তী গল্পগুলোতে লেখক ইসলামের বিধি-বিধানগুলোর উপর উত্থাপিত অভিযোগ ও প্রশ্নের সমুচিত জবাব ও যৌক্তিক যুক্তি পেশ করেছেন। দেখিয়েছেন বিধি-বিধানের সৌন্দর্য ও কল্যাণের এক ফিরিস্তিও। লেখক কমিউনিজম সিস্টেমের অসারতা এবং এর বুদ্ধিবাদী ও চিন্তানায়কদের চিন্তা-বুদ্ধির দৈন্যতা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন । শেষকথা হচ্ছে, অঞ্চল ও স্থান, সংস্কৃতি ও ভাষাবেদে মানুষের ভিন্নতা চিরন্তন, স্বতঃসিদ্ধ এবং বিশ্বপ্রকৃতির অন্তর্ভুক্ত একটি বিষয়। ইসলাম অঞ্চল ও ভাষার ভিন্নতাকে স্বীকার করে ঐক্য ও সংহতির একটি কমন গ্রাউন্ড বেঁধে দেওয়ার মাধ্যমে মানবজাতিকে সামগ্রিক সঙ্গতিপূর্ণ ও কার্যকরী একটি সমাজ ব্যবস্থা উপহার দিয়েছে। ইসলামের কার্যকরীতা, সামগ্রিক সঙ্গতিপূর্ণতা এবং মানবপ্রকৃতি ও বিশ্বপ্রকৃতি’র সাথে এর সামঞ্জস্যতা বুঝাতে শেষের গল্পগুলোসহ ছোট্ট কলেবরের এই বইটি লেখক আপনার জন্যেই লিখেছেন। আল্লাহ পাক লেখককে আমাদের সকলের পক্ষ থেকে জাযায়ে খায়ের দান করুন এবং আমাদের সকলকে দোদুল্যমান ও সংশয় থেকে হিফাজত করুন। মো: নাদিম উদ্দীন আল মিয়াজি ২২ মুহররম, ১৪৪৪ হিজরী - মোতাবেক ৬ ভাদ্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ রোজ রবিবার। ২১শে আগস্ট, ২০২২ ঈসায়ী
হাবিবা জান্নাত @ September 8, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ বই: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখক: ড. শামসুল আরেফীন ভোরের একটুকরো স্বচ্ছ রোদ, সীমাহীন ঐ সবুজ প্রান্তর, কূলহীন বিশাল সমুদ্র এরা সবাই যেন বহন করে কিছু বার্তা। আলো বাতাসহীন মাতৃগর্ভে থাকা ফুটফুটে সুস্থ শিশু, মানব দেহের নিখুঁত শৈল্পিক গঠন, তরুণ - তরুণীর হারিয়ে যাওয়া মন, তাঁরাও কিছু একটার প্রমাণ দিতে ব্যস্ত! সব জিনিস স্বচক্ষে দেখে নয়, কিছু বিষয় না দেখেই বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। লেখকের ভাষায় "মানুষের এক্সক্লুসিভ গুণ হলো না দেখে বিশ্বাস করা। পঞ্চইন্দ্রিয় ব্যবহার করে এমন জিনিস চিনে নেওয়া যা পঞ্চইন্দ্রিয়ে আসে না।" ডাবল স্ট্যান্ডর্ড বইয়ে লেখক প্রথমেই "না দেখে বিশ্বাস" বিষয়টি অত্যন্ত সুন্দর ভাবে গল্পে গল্পে কথোপকথন আকারে আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে আলোকপাত করেছেন। পাঠকগণ যৌক্তিক যুক্তির দিক থেকে নাস্তিকদের প্রতি উত্তরের জন্য শক্তপোক্ত একটা অবস্থান পেয়ে যাবেন‌ ইন শা আল্লাহ। সেই সাথে বাড়বে নিজস্ব উপলদ্ধি। সত্যিই তো না দেখে বিশ্বাস করা মতো যৌক্তিকতার আদৌ কি অভাব রয়েছে! উপলব্ধিতে হানা দেবে হাজারো বিষয়। ঐ মহাকাশ, যা আবিষ্কারে আজ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের নির্ঘুম রাত! কত শত সৃষ্টি নিষ্ঠার সাথে স্রষ্টার অস্তিত্বের বার্তা বহন করছে যুগে যুগে নিত্য নতুন ভাবে। তবু গোঁ বজায় রাখবে তুমি? না বুঝার উদ্দেশ্যে এলোমেলো প্রশ্নের দেয়া গুছালো যৌক্তিক জবাবে তুমি বিমুখ থাকবে? তুমি যদি সুস্থ বিবেক সম্পন্ন হও, বুদ্ধিমান হও তোমার মস্তিষ্ক বলে দেবে স্রষ্টা আছেন। তোমার যৌক্তিক মস্তিষ্ক তোমাকে বিশ্বাস করাবে স্রষ্টা বিদ্যমান, তাঁকে না দেখেই তোমার মস্তিষ্ক পৌঁছে যাবে অটল বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দুতে। স্রষ্টার একমাত্র মনোনীত জীবন ব্যবস্থা হলো ইসলাম। ইসলাম কখনোই কেবল একটা ধর্ম নয় এটি একটি সামগ্রিক জীবন ব্যবস্থা। লেখক সম্পূর্ণ বইটিতে এমন কয়েকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও যৌক্তিকতার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যদি বলা হয় পুরো বইটিতে কি আলোচনা করা হয়েছে বা কোন বিষয়টি বুঝানো হয়েছে তা কেবলমাত্র একটি লাইনে বলো? আমার পক্ষ থেকে উত্তর আসবে বইটির অত্যন্ত মূল্যবান আলোচনা সমূহে অনেক গুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে তবে অনেকটুকু অংশেই বিভিন্ন বিষয় ও সমস্যা তুলে এনে একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চাওয়া হয়েছে তা হলো- "ইসলাম কেবল মাত্র একটি ধর্ম নয়, এটি একটি সামগ্রিক সুষ্ঠু জীবন ব্যবস্থা, এবং এতে রয়েছে সকল সমাধান !" ভুল তখনই করবেন যখন আপনি ইসলামকে কেবল একটি ধর্ম হিসেবে জীবনের একটি সেপারেট পার্ট ভেবে নিবেন। ইসলামের মূল বিষয়গুলোর অনেকগুলোতেই সমাজে ভুল ধারণা আর বুলি গেড়ে বসেছে। লেখক সেই বিষয়গুলো নিয়ে যুক্তিপূর্ণ ভাবে আলোচনা করেছেন। নাস্তিকদের অবান্তর বুলি ভেঙে সত্য আর যৌক্তিক দৃঢ় আলোচনায় ভরপুর পুরো বইটি যা পাঠকদের জন্য অবশ্যই গুরুত্ব বহন করে। "দাসপ্রথা"- যেটাকে না বুঝেই নাস্তিকরা একটা অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করতে চায়, এবং এই বিষয়ে জ্ঞানহীন মানুষ জনের কাছে খুব সহজেই এই অস্ত্র কে একটি মোক্ষম ও ধারালো অস্ত্র হিসেবে তারা ব্যবহার করে থাকে। অথচ দাসপ্রথা নেগেটিভ কোনো বিষয় নয়। লেখক খুব সুন্দর করে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন। পশ্চিমা ছাঁচে তৈরি চশমাতে নয়, পাঠকদের দেখিয়েছেন ঐ মিথ্যে রঙিণ চশমা খুলে, সত্যের চোখ দিয়ে। ইসলামে দাসপ্রথা বলতে পশ্চিমাদের মতো অত্যাচার, আর নিপীড়ন নয়। এটা একটা সুষ্ঠু সিস্টেম। যেখানে তাদের দেয়া হয় উপযুক্ত সম্মান ও অধিকার। আর তাছাড়া যুদ্ধের ঐ সময়টাতে দাসপ্রথা ছিলো সর্বোচ্চ সমাধান। যুদ্ধরত ঐ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর কোনো বিজ্ঞানী, কোনো ব্যাবস্থাপক এই ব্যবস্থার চাইতে উত্তম কিছু আবিস্কার করতে পারবে না‌। যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে ইনসাফ, তাদের অধিকার, তাদের চাহিদা পূরণে এটি ছিলো উত্তম একটি পন্থা। এবং প্রয়োজন শেষে ঐ প্রথা মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আংশিক রহিত করে দিলেও পুরোপুরি বন্ধ করে দেননি। দাওয়াহ আর ইসলামিক কল্যাণে এটা প্রয়োজন। ঐ সময় মুসলিম দের কাছে বন্দী দাসগুলো তাদের আচরণে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতেন। আলহামদুলিল্লাহ। "শস্যক্ষেত্র"- লেখক অত্যন্ত সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করেছেন মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার এই বাণী কতটা যৌক্তিক আর উৎকৃষ্ট উদাহরণ, এমন সব তুলনা, বাণী কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভবপর নয়। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা নারীদেরকে পুরুষের জন্য শষ্য ক্ষেত্র স্বরূপ বলেছেন। এখানে লেখক খুব সুন্দর করে একজন কৃষকের দৃষ্টিভঙ্গি তে উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করেছেন। একজন কৃষকের কাছে তার ক্ষেত সবচাইতে মূল্যবান। এই ক্ষেতের সমস্ত যত্ন, আত্তি সে করে। নিজের জান মাল দিয়ে আপন ক্ষেতকে হেফাযত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। তাঁর প্রাণের টুকরো ক্ষেতে সে যখন খুশি বিচরণ করে। তার ক্ষেতে সে অন্য কারো হস্তক্ষেপ পছন্দ করবে না এটাই স্বাভাবিক। এই বইয়ে আমার সবচাইতে মন ছুঁয়ে যাওয়া এবং ভালোলাগার শিরোনাম হলো- "শ্রেণী বৈষম্যহীন সমাজ -ওদের স্বপ্ন আমাদের অর্জন।" এই শিরোনামের লেখা গুলো পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন প্রকৃত একটা ইসলামীক রাষ্ট্রে নাগরিকগণ ঠিক কতটা বৈষম্যহীন বসবাস করতে সক্ষম হবে। একশ্রেণীর মানুষের কুক্ষিগত সম্পত্তি যখন ছড়িয়ে যাবে সারা দেশে তখন আদত সাহায্য নেয়ার মতো মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠবে। এমন সব গুরুত্বপূর্ন বিষয় উঠে এসেছে বইটির আলোচনায়। "সমাধান কি মানবধর্মেই?"- নামক শিরোনামে মানবধর্ম নামে যে কত একটি বিচ্ছিরি ধারণা সমাজে বিদ্যমান, সবক্ষেত্রেই বিবেক সবচাইতে বড় আদালত হতে পারে না। এর মতো ভুল ধারণা গুলো পাঠকগণ উপলব্ধি করতে পারবেন। সবার বিবেকের কাঠগড়ায় নৈতিকতার পরিমাণ সমান স্তরে নয়, এটা হতেও পারে না, তাই প্রয়োজন নৈতিকতার একটি সুষ্ঠু বিধান যা ইসলাম আমাদেরকে দেয়। আমার কাছে বইটির সবচাইতে আকর্ষণীয় দিক লেগেছে এর শেষ টপিকটি। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ভিন্নধর্মী এবং উপলব্ধি সৃষ্টি কারী লেখা। আপনি ভাবতেও পারবেন না শেষে কি টুইস্ট অপেক্ষা করছে আপনার জন্য! থাক নাই বা বলি, কেন শেষ টপিকটি পুরো বই কে ছাপিয়ে ভিন্নধর্মী হয়ে উঠেছে! এটা এই বই এর নতুন পাঠকদের জন্য টুইস্ট! তবে অবশ্য এটা বলা যায়, এর শেষ টপিকটি ভিজিয়ে দেবে আপনার চোখকে। ছলোছলো চোখে আপনার হৃদয় উপলব্ধি করবে দাওয়াহ এর গুরুত্ব। হৃদয় ভাঙবে সেই মানুষগুলোর কথা ভেবে যাদের কাছে এখনো দাওয়াহ পৌঁছেনি। যারা মরিয়া হয়ে দিগ্বিদিক হাতড়ে মরছে, তাদের কাছে দাওয়াহ পৌঁছানো ঠিক কতটা প্রয়োজন! রিভিউ লেখিকা- হাবিবা জান্নাত ১৩ আগস্ট, ২০২২
ফয়সাল আদিব @ September 9, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ সকল ইসলামবিদ্বেষীদের একটা কমন স্ট্যান্ডার্ড থাকে,সেটা হল "ডাবল স্ট্যান্ডার্ড"।তারা আপনাকে বলবে ইসলাম অবৈজ্ঞানিক ধর্ম।যখন আপনি বিজ্ঞান থেকে ইসলামের সত্যতার প্রমাণ তুলে ধরবেন তখন সে বলবে--এসব কাকতালীয়।সে আরও বলবে,ইসলাম ব্যাকডেটেড, অাধুনিক যুগের অনুপযোগী।যখন আপনি ইসলামের উন্নত চিন্তাধারা তুলে ধরবেন সে বলবে এসব ইসলামের নিজস্ব না বরং ধার করা।এককথায় আপনি ইসলামকে যতভাবেই তাদের কাছে উপস্হাপন করুন তা তাদের মনঃপুত হবে না।কারণ তাদের "ডাবল স্ট্যান্ডার্ড" এর কাছে আপনার সকল যুক্তি,প্রমাণ,বক্তব্য অর্থহীন! . প্রথমত,এদেশে যারা নিজেদের নাস্তিক হিসেবে পরিচয় দেন কিংবা ছুপা নাস্তিক্যবাদী চেতনা লালন করেন তাদের কেউই আগাগোড়া নাস্তিক নন।তাদের নিজস্ব কোন চিন্তাচেতনা নেই।বস্তুত তারা পাশ্চাত্ত্যের ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব কে এদেশে আমদানি করে সেটাকে নাস্তিক্যবাদের মোড়কে উপস্হাপন করেন।ইহুদি-খ্রিস্টান ও শিয়া মতাবলম্বীদের কিছু বিদেশী ইসলামবিদ্বেষী আর্টিকেল ও ভিডিও দেখে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে হা-রে-রে করে তেড়ে আসেন।এমন ভঙ ধরেন যেন তারা আল কুরআন,হাদিস, তাফসির, ফিকহ ইত্যাদি সকল চ্যাপ্টার পড়ে শেষ করে ফেলেছেন আর এতে তাদের সামনে ইসলামের কেবল অসাড়তা ফুটে উঠেছে,মানবজীবনের কল্যাণকর কিছুই তারা ইসলামে খুঁজে পাননি! কিন্তু বাস্তবতা এর ঠিক বিপরীত।এসব তথাকথিত নাস্তিকরা না কবু কুরআনের অনুবাদ আগাগোড়া পড়ে দেখেছেন আর না তারা কুরআনের কোন পূর্ণ তাফসির পড়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছেন।আধুনিক সভ্যতার মোড়ল পশ্চিমারা ইসলামকে যেভাবে উপস্হাপন করেছে,যেভাবে ইসলামের পরিচয় দিয়েছে এসব বঙ্গীয় নাস্তিকরাও ঠিক সেভাবেই ইসলামকে চিনেছে,ইসলামের পরিচয় গ্রহন করেছে।অথচ সত্য ও ইনসাফের দাবি হল কোন সভ্যতা,ধর্ম কিংবা মতবাদকে খন্ডন করতে হলে,এর বিরুদ্ধে দুচার কলম লিখতে হলে অবশ্যই সর্বপ্রথম এর উৎসগ্রন্হগুলো অধ্যয়ন করা উচিত।কিন্তু এটা পরিশ্রমের কাজ।অলস মস্তিষ্কের নাস্তিকরা সেটা করতে যাবেন কোন দুঃখে? দ্বিতীয়ত,জন্মলগ্ন থেকে একটা শিশুও চায় সেচ্ছাচারিতা চালাতে,নিজের মত করে সবকিছুকে গ্রহন করতে।একজন পিতা হিসেবে কোন নাস্তিকই আপন শিশু সন্তানকে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখলে বাধা না দিয়ে ক্ষান্ত হন না।কারণ নাস্তিকরা এটা ঠিকই বুঝেন এই অবুঝ সন্তানের কল্যাণ-অকল্যান বুঝার ক্ষমতা নেই।তাই অবশ্যই পিতা-মাতার দায়িত্ব তাকে আগলে রাখা।কিন্তু এই নাস্তিকদের যখন বলা হয় মহান কল্যাণকামী সৃষ্টিকর্তা মানুষের কল্যাণের জন্য বিধান দিয়েছেন,এই বিধানে এই এই কল্যাণ রয়েছে তখন তারা চেঁচিয়ে বলে উঠবে "মাই লাইফ মাই রুলস"।কারণ স্রষ্টা ও তাঁর বিধানকে মেনে নিলে সেচ্ছাচারি জীবন উপভোগ করা যাবে না।নিজস্ব স্বার্থের পাশাপাশি সমাজের, রাষ্ট্রের ও বিশ্বের স্বার্থের কথাও ভাবতে হবে।অন্যের স্বার্থ রক্ষায় নিজেকে সেক্রিফাইস করতে হবে।স্বার্থপূজারী যেকোন ব্যক্তির পক্ষে এটা মেনে নেয়া বেশ কঠিন।তাই সহয উপায় হল যত প্রমাণ,অকাট্য দলিলই থাকুক স্রষ্টার অস্তিত্বকেই সরাসরি নাকচ করে দেয়া,কখনোবা অপারগতা বশত অস্তিত্বকে স্বীকার করলেও অন্তত মানবকল্যাণে স্রষ্টার বিধান দেয়ার ক্ষমতাকে অগ্রাহ্য করা।এটুকু করতে পারলেই সেচ্ছাচারি জীবনের পথের কাঁটা বলতে আর কিছু থাকে না। . ডা. শামসুল আরেফিন শক্তি লেখালেখির জগৎ এ অত্যন্ত পরিচিত মুখ।তিনি বইটাতে অত্যন্ত সাবলীল ভাষায় গল্পাকারে ইসলামবিদ্বেষীদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ডগিরির স্বরূপ উন্মোচন করেছেন।চ্যালেঞ্জ করেছেন বাঙালি নাস্তিক্যতাবাদের সকল অসাড়তা ও অসংগতিকে।তুলে ধরেছেন নাস্তিকীয় যুক্তির প্রান্তিকতা ও অগ্রহণযোগ্যতা।নাস্তিকতা মতবাদ যে পৃথিবীর কোন সমস্যার সমাধান দিতে পারে নি উলটো সমস্যা তৈরি করেছে এ বিষয়টাও লেখক বেশ জোরালোভাবে উপস্হাপনে সক্ষম হয়েছেন।নাস্তিকতাবাদ এই যাবৎ শুধু ধর্মবিরোধী প্রশ্ন উত্থাপন করতে উদ্ভুদ্ধ করেছে কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে জটিল সমীকরণগুলোর কোন সরলীকরণ করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। অপরদিকে ইসলাম সমস্যার পাশাপাশি আলোচনা করে সমাধান নিয়ে,শুধু আলোচনা করেই ক্ষান্ত হয়না বরং এই সমাধানের সফল বাস্তব প্রয়োগ ঘটিয়ে দেখিয়ে দেয় ইসলামের পথ ও পদ্ধতি কতটা যুগোপযোগী ও বাস্তবিক; ইতিহাসে এর ভূরি ভূরি নজির রয়েছে।এবিষয়েও লেখক বেশ তথ্যপূর্ণ আলাপ এনেছেন।সর্বোপরি ধারাবাহিক গল্পাকারে সত্য উপস্হাপনের অসাধারণ পদ্ধতি আঞ্জাম দিয়েছেন লেখক এই বইটিতে; যা যেকোন শ্রেণীর পাঠকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনযোগ ধরে রাখতে সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি। বইঃ ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখকঃ ডা. শামসুল আরেফিন শক্তি প্রকাশনীঃ মাকতাবাতুল আযহার মু্দ্রিত মূল্যঃ ৩৬০৳(হার্ড কভার) রিভিউঃ ফয়সাল আদিব
মুহাম্মাদ আহসান হাবীব। @ September 9, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বইয়ের নাম: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। লেখক: ডা.শামসুল আরেফীন শক্তি। শারঈ নিরীক্ষণ : মুফতি আবু সালেহ মোহাম্মদউল্লাহ। প্রকাশনী : শুদ্ধি। রিভিউদাতা : মুহাম্মাদ আহসান হাবীব। মহান আল্লাহর অসংখ্য, অগণিত নেয়ামতের মাঝে উল্লেখযোগ্য একটি হল,আমরা মুসলমান ; ধর্ম হিসেবে আমরা ইসলামকে পেয়েছি। এই একটি নেয়ামতের শোকর-ই আমরা সারাজীবনে শেষ করতে পারব না। তবে শুকরিয়া জ্ঞাপনের চেষ্টা করে যেতে হবে প্রতিনিয়ত। হতে পারে তা লেখালেখির মাধ্যমে কিংবা বক্তব্যের মাধ্যমে। বক্ষমান গ্রন্থে লেখক মহোদয় হয়তো লেখালেখির মাধ্যমেই রবের শোকর আদায় করার বিষয়টি সমাধা করতে সচেষ্ট থেকেছেন। যা হোক, ধরে নিলাম আমাদের ধর্ম ‘ইসলাম’ ফুল দিয়ে সুসজ্জিত একটি বাগানের নাম। যে বাগানে রয়েছে অসংখ্য ফুটন্ত ফুল। যারা সার্বক্ষণিক সুগন্ধিত করছে চারিদিক। পক্ষান্তরে এ বাগানের ফুল-কলিকে বিনষ্ট করতে কিছু পোকা-মাকড় ও কীট-পতঙ্গও রয়েছে তাদের সাথে। যারা সর্বক্ষণ ছুতোনাতা খুঁজতে থাকে কীভাবে ইসলামের ওপর আঘাত হানা যায়। তবে সর্বাধিক আনন্দের কথা হল, এসব কীট-পতঙ্গ থেকে বাগানকে নিরাপদ রাখতে আল্লাহতালা কিছু যোগ্য মালী'র-ও ব্যবস্থা করে দেন। যাঁরা ইসলামের ওপর আরোপিত সকল অপপ্রচারের মোকাবেলা করেন নিজ মেধা দ্বারা ; নিজ যোগ্যতা দ্বারা। এমনই একজন দরদী মালী হচ্ছেন, বক্ষমান বইটির রচয়িতা শ্রদ্ধেয় ড.শামসুল আরেফীন শক্তি হাফি.। যিনি ইসলামের ওপর আরোপিত বেশ কিছু আঘাতকে দমনের চেষ্টা করেছেন এবং আমি বলব, সফলও হয়েছেন। সত্য ধর্ম তথা ইসলামের অন্যতম বড় শত্রু ‘নাস্তিক’ নামক কীটদের থেকে উত্থাপিত সকল আপত্তির জবাব তিনি পুরোপুরিভাবে দিয়েছেন শক্তিশালী রেফারেন্স সহকারে। তিনি দালিলিক আলোচনা করেছেন—না দেখে বিশ্বাস : মানবজন্মের স্বার্থকতা, দাসপ্রথা : ঐশী বিধানের সৌন্দর্য,দক্ষিণ হস্ত : মালিকানা : একটি নারীবাদী বিধান, শস্যক্ষেত্র : সম্পত্তি, না সম্পদ?,জিযিয়া : অমুসলিম নাগরিকের দায়মুক্তি, শ্রেণিবৈষম্যহীন সমাজ : ওদের স্বপ্ন, আমাদের অর্জন,সমাধান কি মানবধর্মেই?,পরিপূর্ণ দাড়ি : জঙ্গল নয়, ছায়াবীথি। সাথে চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিয়েছেন নাস্তিকদের প্রতি। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে তেমন কোন সাড়া তিনি এখনও পাননি। তাঁর যুক্তি খণ্ডনের সাধ্যি কার! তাইতো তিনি নিজের আক্ষেপ অনেকটা রসিকতার সুরেই বলেছেন,"আরো ভেবেছিলাম- ও পাড়ের ছেলেমেয়েরা নাইতে নামবে, দুই ধারে দুই রুইকাতলা ভেসে উঠবে, আর দাদু মানে আমি কলম ছুঁড়ে মারব। তা আর হলো কই!" সেক্যুলারদের বিরুদ্ধে আমার পড়া সেরা একটি বই ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’। আপনারাও পড়তে পারেন। আশা করি ভাল লাগবে এবং ইসলাম বিদ্বেষীদের সাথে কথা বলতে নিজের ভেতর আত্মবিশ্বাস পাবেন। —আহসান হাবীব।
রাকিবুল ইসলাম @ September 9, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকদের উদ্ভট প্রশ্ন আর খোড়া যুক্তি সাধারণ যে কাউকে ধরাশায়ী করতে পারে। যদি পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকে, তাহলে আর রক্ষা নেই। এসব উদ্ভট প্রশ্নের উত্তরে ইসলামকে নিষ্কলুষ প্রমাণ করাটা হালের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দাবি। এই গুরুত্বপূর্ণ দাবিটি সামনে রেখেই পড়া শুরু করি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। ছোটগল্পের আদলে এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, পড়ে বেশ মুগ্ধ হলাম! বইয়ের উল্টোদিকে লেখা কথাগুলোই আমাকে বাধ্য করেছে বইটা পড়তে। ~বই: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ~লেখক: Amiruzzaman Muhammad Shamsul Arefin ~প্রকাশক: মাকতাবাতুল আযহার ~রিভিউয়ার: রাকিবুল ইসলাম বইটি ইসলামববিদ্বেষী, নাস্তিক, সংশয়বাদী এবং অজ্ঞেয়বাদীদের উদ্ভট প্রশ্নের সমুচিত জবাব এবং যৌক্তিক সমাধান নিয়ে লেখা। ছোটগল্পের মধ্য দিয়ে বড় প্রশ্নের উত্তর দেওয়াই বইয়ের মূল প্রতিপাদ্য। একদিকে ছোটগল্পের মজা আরেকদিকে যুক্তিখণ্ডনের স্বাদ! আর আল্লাহ প্রদত্ত ঐশী বিধিনিষেধের মর্মোদ্ধারের বিষয়টি তো আছেই! পড়ে যা পেলাম: ১. ইসলামের সৌন্দর্য ইসলামের বিধিবিধানের মধ্যেই নিহিত। আর এই সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে হলে জানতে হবে বিধিবিধানের অন্তর্নিহিত কল্যাণ ও উপকারিতা সম্পর্কে। আর যদি এসব না জানি, তাহলে আজ হোক বা কাল, একদিন আমার মনেও এসব বিধান সম্পর্কে উদ্ভট কথাবার্তা জন্ম নিবে। কারণ আপাতদৃষ্টে অনেক বিধানই আপোত্তিকর মনে হয় -অজ্ঞতার দরুন এটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই মানসিকতা জিইয়ে রাখা, মনগড়া ব্যাখ্যা দেওয়া, সবকিছু বিজ্ঞান-দর্শন আর যুক্তির আলোকে বুঝতে চাওয়া, অন্যদের বিভ্রান্ত করা ইত্যাদি কাজগুলো অতি গর্হিত! আল্লাহ প্রদত্ত বিধানাবলির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে কল্যাণ এবং উপকারিতা আছে, তা যদি কেউ না জেনে থাকে, তাহলে সে কীভাবে বিরূপ ধারণা পোষণ করতে পারে? অথচ সে কিছু জানেই না! এমনই কয়েকটা বিধান, যা আমার মনেও কৌতূহল সৃষ্টি করত, আলহামদু লিল্লাহ এ বইটি পড়ে তা দূর হয়ে গেছে! ২. বইতে গল্প মোট এগারটা। যে বিধানগুলো কেন্দ্র করে গল্প লেখা হয়েছে, সেসব বিধান সম্পর্কে বইতে বিশদ বিবরণ এবং সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে। যা পড়ে মনে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না। প্রতিটা তথ্যের জন্য আলাদাভাবে টীকা সংযোজন করা হয়েছে এবং দলীল-প্রমাণসহ উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে আমার কাছে এ বইয়ের গ্রহণযোগ্যতা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। দাসপ্রথা, দক্ষিণহস্ত মালিকানা, শস্যক্ষেত্র, জিযিয়া, আরব সংস্কৃতি, বনু কুরাইযার ঘটনা, দাড়ি রাখা ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাপক বিস্তৃত আলোচনা করা হয়েছে, যা আমার মন-মস্তিষ্কে আসন গেড়ে বসেছে। আশা করি, সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি নিয়ে আর বিপাকে পড়তে হবে না, ইনশাআল্লাহ। ৩. বইতে টীকার পরিমাণ এত বেশি যে, শুধু টীকা পড়তেই অনেক সময় চলে যায়। কিন্তু টীকাগুলোতে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে, যা গল্পের মাঝে হলে সেটা আর গল্প থাকত না; অন্যকিছু হয়ে যেত! এখানে লেখক বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। কয়েকটা গল্পের আলোচনা অনেক দীর্ঘ হয়েছে। এক বৈঠকে এত দীর্ঘ আলোচনা বাস্তবে প্রায় অসম্ভব। আর প্রশ্নের উত্তরে এত দীর্ঘ লেকচার শোনা, অন্তত গল্পের চরিত্রে যারা আছে, তাদের সাথে যায় না। কিছুটা বাস্তবানুগও না। সেটা লেখক নিজেই স্বীকার করেছেন। গল্পের ভিন্নতায় চরিত্র পাল্টেছে ঠিক; কিন্তু বর্ণনাভঙ্গি, কথা বলার ধরন, বোঝানোর ভঙ্গিমা প্রায় একই রয়ে গেছে। ফলে চরিত্র ভিন্ন হলেও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর মাঝে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। এটা একদিকে ভালো। যেমন, বিভিন্নভাবে বোঝালে হয়তো অনেকের বুঝতে সমস্যা হত। আর একদিকে ত্রুটিপূর্ণ। কারণ বিষয়টা গল্পের স্বাদ আস্বাদনে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। সবমিলিয়ে বইটা সফল হয়েছে। আমার বেশ ভালো লেগেছে, পড়ে খুবই উপকৃত হয়েছি। আলহামদু লিল্লাহ! ৪. পড়ার আগে মনে একটা সংশয় ছিল। তা হল, কেউ কেউ যুক্তি দিয়ে ইসলামের বিধানকে এমনভাবে উপস্থাপন করতে চায়, যেন যৌক্তিক না হলে সে ঐ বিধান গ্রহণই করত না! ফলে অনেকেই বিভ্রান্তির শিকার হন। কিন্তু বইয়ের ভূমিকাতে লেখকের একটি কথায় এ সংশয় দূর হয়ে যায়। ঐ কথাসহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা, যা আমি দাগ টেনে রেখেছি; বোঝার সুবিধার্থে তুলে ধরছি। ♦..ইসলামের বিধানে যুক্তি খুঁজতে যাবার দুঃসাহস দেখাইনি, যেটা খুঁজতে গিয়েছি সেটা হল- কল্যাণ। পৃ.৭ ♦যারা কুরআন থেকে খুঁত খুঁজে বের করতে চায়,.. তারা এই বইয়েও খুঁত বের করবে এটাই স্বাভাবিক। পৃ.৮ ♦ইসলাম..যুক্তিনির্ভর ধর্ম না।..যুক্তির সমাপ্তি যেখানে, সেখান থেকে ইসলাম শুরু। পৃ.১১ ♦নাস্তিকতা...সবার আগে যে জিনিসটি কেড়ে নেয় তা হল আদব। পৃ.১৫ ♦...বিড়াল আগুন দেখার পর সরে যাবে। কিন্তু মানুষ...খবর শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিবে। এটাই মানুষের পার্থক্য অন্যান্য প্রাণী থেকে। পৃ.১৮ ♦নারীদেহের জন্য শস্যক্ষেত্রের চেয়ে পারফেক্ট উপমা হতেই পারে না। স্ত্রী শুধু পুরুষের "ধরো তক্তা মারো পেরেক" এর জন্য নয়।...৪নং গল্প, ৩নং টীকা ♦ইসলাম নিজেই এমন একটা সংস্কৃতি যা সব সংস্কৃতির সংস্কারক, এমনকি আরব সংস্কৃতিরও। পৃ.৯২ ♦ধর্ম মানবতাকে ডিফাইন করে...ধর্ম ছাড়া মানবতার কোন সংজ্ঞা নেই। পৃ.১০৪ ♦নাস্তিকদের নাস্তানাবুদ করার একটা মোক্ষম অস্ত্র হল তাকে বুঝিয়ে দেয়া যে তুমি ডাবল স্ট্যান্ডার্ড করছ।...কথা শোনা নাস্তিক অবশ্য খুব বিরল প্রাণী। পৃ.১১৬ ♦সব পুরুষ প্রজাতিকে আল্লাহ আলাদা কিছু দিয়েছেন। কারো কেশর, কারো পেখম, কারো ঝুঁটি, কারো কুঁজ- দূর থেকে দৃশ্যমান কিছু একটা। এগুলো পুরুষের পুরুষালি ভাবের প্রতীক। পৃ.১৩৮ এ প্রজ্ঞাপূর্ণ কথাগুলো গল্পের মাধ্যমে পাঠক-হৃদয়ে ঢেলে দিয়েছেন বইয়ের লেখক। আরেকটা আকর্ষণীয় গল্প আছে, যার মূল্যায়ন করতে পারব না বলে এড়িয়ে গিয়েছি। তা হল শেষ গল্পটি। গল্পটি পড়ে বিস্ময়দৃষ্টিতে লেখকের দিকে তাকিয়ে তাকিয়েছি, দেখতে পেয়েছি একজন নিষ্ঠাবান তাওহীদ-অন্বেষী সত্তাকে। লেখকের দূরদর্শিতায় আমি যারপরনাই অবাক হয়েছি! অবশেষে আমি এতটুকুই বলব, লেখক যেন তার চলমান খেদমতের ধারা অব্যাহত রাখেন এবং আল্লাহ যেন তাঁর কলমকে আরো শাণিত করেন, আমিন। ১৭-৮-২০২২
মোঃ আব্দুল্লাহ ত্বইয়িব @ September 9, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বইয়ের নাম: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখক: ডা. শামসুল আরেফিন রিভিউদাতা: আব্দুল্লাহ ত্বইয়িব •প্রথমেই আসি নাম নির্বাচন নিয়ে। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মানে দ্বিমুখী রীতিনীতি। আর এই পৃথিবীতে দ্বিমুখীর লোকের অভাব নেই। যেমন: অমুসলিম, আহলে কিতাব, নাস্তিক, মডারেটরা। বিশেষ করে নাস্তিকদের মাঝে এই দ্বিমুখীতা বেশী লক্ষণীয়। তারা বিজ্ঞান, যুক্তি- দর্শনের মার প্যাঁচে এমন একটা ভাব নেয়, যেমন তারাই সঠিক বাকিরা ভূল। যখন কেউ তাদের মার প্যাঁচ গুলো টেনে সোজা করে, অথবা তাদের মার প্যাঁচ দিয়ে তাদেরকেই ফাঁদে পেলে, ঠিক তখনি তারা পল্টি নেয়। আর কোন রকম নয়-ছয় দিয়ে আবল-তাবল বকে পালায়। তখন তাদের অবস্থা টা যেন এমন হয়ে দাঁড়ায়, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। এই বইতে লেখক এরকম দ্বিমুখী মানুষদের যুক্তিকে কে সাইজ করেছেন। সে হিসেবে বইয়ের নাম নির্বাচন টা হয়েছে পার্ফেক্ট। • এবার আসি প্রচ্ছদ প্রসঙ্গে: প্রচ্ছদে দেখা যাচ্ছে একটা চশমা। যার ডান সাইডের গ্লাস টা ভালো, আর বাম সাইডের গ্লাস টা ভাঙ্গা। এতে সহজেই বুঝা যায় লেখক বামপন্থীদের যুক্তির দিকে ঢিল ছুড়েছেন, আর তা অমনি ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। সেই হিসেবে বইয়ের নাম আর বিষয়বস্তুর সাথে প্রচ্ছদ মানানসই। •এবার আসি বই সম্পর্কে: বর্তমান যুগ অন্ধকারের যুগ। ফিতনার যুগ। অজ্ঞতার যুগ। বিশেষ করে বর্তমান মুসলিমদের ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ কম। যার কারণে স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে অজ্ঞতা। দিনকে দিন এই অজ্ঞতা বেড়েই চলেছে, আর এতটা প্রকট আকার ধারণ করেছে যে আজ মুসলিমদের অধিকাংশ মুসলিমই ইসলামের বেসিকটুকুও জানে না। যার ফলশ্রুতিতে আজ নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছেন। মুসলমানদের এ অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে নাস্তিকরা, অমুসলিমরা ইসলামের দিকে নানা ধরনের প্রশ্নের তীর নিক্ষেপ করছে। আরে এতে সহজে শিকার হচ্ছে মুসলিমরা। বিশেষ করে মুসলিমদের ইয়াং জেনারেশন। এতে করে তারা আজ নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে। লজ্জাবোধ করে ইসলামিক পোশাক পড়ে চলাফেরা করতে। লজ্জা বোধ করে সুন্নাহ মাফিক দাড়ি রাখতে। এ বইতে লেখক সেইসব অমুসলিম, নাস্তিকদের জবাব দিয়েছেন যারা যুক্তির মার-প্যাঁচ দিয়ে পৃথিবী থেকে ইসলামকে বিলুপ্ত করে দিতে চায়। এই বইতে লেখক যুক্তি বদলে যুক্তি দিয়েছেন, আর সেই সাথে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন যে, এই যুক্তির মোকাবেলা করতে হলে অবশ্যই এর চেয়ে শক্তিশালী নির্ভরযোগ্য রেফারেন্স এবং যুক্তি লাগবে। আর হীনমন্যতায় ভোগা মুসলিমদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে ইসলাম ব্যাকডেটেড না, বরং সর্বযুগে আপডেটেড। • সর্বশেষ লেখক এই বইটা সবাইকে পড়ার আবেদন জানান। আর জানানোর চেষ্টা করেন ইসলামই সত্য, আর বাদবাকি যা আছে তা শুধু মিথ্যার মায়াজাল। •ব্যক্তিগত রেটিং: ১০ মধ্যে ৮.৫
মোঃ আব্দুল্লাহ ত্বইয়িব @ September 9, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বইয়ের নাম: ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লেখক: ডা. শামসুল আরেফিন রিভিউদাতা: আব্দুল্লাহ ত্বইয়িব •প্রথমেই আসি নাম নির্বাচন নিয়ে। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মানে দ্বিমুখী রীতিনীতি। আর এই পৃথিবীতে দ্বিমুখীর লোকের অভাব নেই। যেমন: অমুসলিম, আহলে কিতাব, নাস্তিক, মডারেটরা। বিশেষ করে নাস্তিকদের মাঝে এই দ্বিমুখীতা বেশী লক্ষণীয়। তারা বিজ্ঞান, যুক্তি- দর্শনের মার প্যাঁচে এমন একটা ভাব নেয়, যেমন তারাই সঠিক বাকিরা ভূল। যখন কেউ তাদের মার প্যাঁচ গুলো টেনে সোজা করে, অথবা তাদের মার প্যাঁচ দিয়ে তাদেরকেই ফাঁদে পেলে, ঠিক তখনি তারা পল্টি নেয়। আর কোন রকম নয়-ছয় দিয়ে আবল-তাবল বকে পালায়। তখন তাদের অবস্থা টা যেন এমন হয়ে দাঁড়ায়, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। এই বইতে লেখক এরকম দ্বিমুখী মানুষদের যুক্তিকে কে সাইজ করেছেন। সে হিসেবে বইয়ের নাম নির্বাচন টা হয়েছে পার্ফেক্ট। • এবার আসি প্রচ্ছদ প্রসঙ্গে: প্রচ্ছদে দেখা যাচ্ছে একটা চশমা। যার ডান সাইডের গ্লাস টা ভালো, আর বাম সাইডের গ্লাস টা ভাঙ্গা। এতে সহজেই বুঝা যায় লেখক বামপন্থীদের যুক্তির দিকে ঢিল ছুড়েছেন, আর তা অমনি ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। সেই হিসেবে বইয়ের নাম আর বিষয়বস্তুর সাথে প্রচ্ছদ মানানসই। •এবার আসি বই সম্পর্কে: বর্তমান যুগ অন্ধকারের যুগ। ফিতনার যুগ। অজ্ঞতার যুগ। বিশেষ করে বর্তমান মুসলিমদের ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ কম। যার কারণে স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেছে অজ্ঞতা। দিনকে দিন এই অজ্ঞতা বেড়েই চলেছে, আর এতটা প্রকট আকার ধারণ করেছে যে আজ মুসলিমদের অধিকাংশ মুসলিমই ইসলামের বেসিকটুকুও জানে না। যার ফলশ্রুতিতে আজ নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছেন। মুসলমানদের এ অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে নাস্তিকরা, অমুসলিমরা ইসলামের দিকে নানা ধরনের প্রশ্নের তীর নিক্ষেপ করছে। আরে এতে সহজে শিকার হচ্ছে মুসলিমরা। বিশেষ করে মুসলিমদের ইয়াং জেনারেশন। এতে করে তারা আজ নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে। লজ্জাবোধ করে ইসলামিক পোশাক পড়ে চলাফেরা করতে। লজ্জা বোধ করে সুন্নাহ মাফিক দাড়ি রাখতে। এ বইতে লেখক সেইসব অমুসলিম, নাস্তিকদের জবাব দিয়েছেন যারা যুক্তির মার-প্যাঁচ দিয়ে পৃথিবী থেকে ইসলামকে বিলুপ্ত করে দিতে চায়। এই বইতে লেখক যুক্তি বদলে যুক্তি দিয়েছেন, আর সেই সাথে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন যে, এই যুক্তির মোকাবেলা করতে হলে অবশ্যই এর চেয়ে শক্তিশালী নির্ভরযোগ্য রেফারেন্স এবং যুক্তি লাগবে। আর হীনমন্যতায় ভোগা মুসলিমদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে ইসলাম ব্যাকডেটেড না, বরং সর্বযুগে আপডেটেড। • সর্বশেষ লেখক এই বইটা সবাইকে পড়ার আবেদন জানান। আর জানানোর চেষ্টা করেন ইসলামই সত্য, আর বাদবাকি যা আছে তা শুধু মিথ্যার মায়াজাল। •ব্যক্তিগত রেটিং: ১০ মধ্যে ৮.৫

আপনার মতামত ও রেটিং