খুলুকিন আযীম


লেখক: মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ

বিষয়: হাদীস

5 রেটিং / 5 টি মতামত
মূল্য: Tk. 1000.0  Tk. 500.0   (50.0% ছাড়)

 

বইয়ের নাম খুলুকিন আযীম
লেখক মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ
প্রকাশনী Maktabatul Azhar - مكتبة الأزهر - মাকতাবাতুল আযহার
সংস্করণ 1 20222
পৃষ্ঠা সংখ্যা 640
ভাষা

মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ


এই বিষয়ের আরো বই

পাঠকের মতামত ও রেটিং

মোহাম্মদ আবদুল্লাহ @ August 18, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বই - খুলুকিন আজিম লেখক - মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ Reviewed by – মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে আমাকে এই রিভিউ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের সুযোগ করে দিয়েছেন। * বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম * আজকে যারা আমাদের মুসলিম বিশ্বের ভবিষ্যত অর্থাৎ যুবকরা ইসলাম থেকে দূর থেকে দূরন্তে চলে গিয়েছে। তারা তাদের মনে আইডল বুনেছে শাহরুখ খান – সালমান খানদের মতো পাপীষ্ঠদের। তাদের কাছে ইসলামের কোনো মূল্য নেই। অথচ তাদের আইডল বানানো উচিত ছিলো রাসূল সঃ) কে। যিনি আমাদের জন্য রেখে গিয়েছেন এক উত্তম অনুপম আদর্শ। যা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করলে একদিক দিয়ে যেমন ইহকালিন শান্তি অন্যদিকে পরকালে জান্নাত আমাদেরকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে। এরপরেও বর্তমান যুবকরা সেই মরিচীকার পেছনেই ছুটছে। কিন্তু তারা এ সম্পর্কে বেখেয়াল যে, এই ক্ষুদ্র – ক্ষনস্থায়ী দুনিয়ার পর আরেকটি জীবন আছে, তা হলো পরকালীন জীবন, যা হবে চিরস্থায়ী, যার বিস্তৃতি হবে অসীম, অশেষ এবং সীমাহীন। তাই ইহকালিন শান্তি ও পরকালিন মুক্তির জন্য প্রয়োজন আমাদের জীবনে সঠিকভাবে রাসূল সঃ) এর জীবনাদর্শ প্রয়োগ করা। যায় হোক মূল কথায় আসি... ইসলামি সাহিত্য চর্চায় নিবেদিত প্রাণ একজন হলেন মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ স্যার। তিনি এ পর্যন্ত অনেকগুলো বই লিখেছেন। সবচেয়ে বেশি লিখেছেন উপন্যাস। তার লিখা বইয়ের মধ্যে অন্যতম বই হচ্ছে 'খুলুকিন আজিম' বইটি। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানার আরেকটি আয়োজন। সাদ ইবনু হিশাম ইবনু আমের (রা.) হযরত আয়েশাকে (রা.) প্রশ্ন করেছিলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর চরিত্র কেমন ছিল?’ আয়েশা (রা.) উত্তরে বলেছিলেন, ‘তুমি কি কোরআন পড়োনি? কোরআনই ছিল তাঁর চরিত্র।’ সুরা কালামে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আপনি চরিত্রের সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছেন।’ হাদিস এবং আয়াতটিতে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ মুহাম্মদ (সা.)-এর চরিত্রকে সত্যায়ন করা হয়েছে। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে চরিত্রমাধুর্যের পূর্ণতা দানের জন্য।’ এককথায় বললে ‍উপর্যুক্ত আয়াত ও হাদিসের ব্যাখ্যা দিতেই রচনা করা হয়েছে সিরাত-গ্রন্থ’ ‘খুলুকিন আযিম — এই গ্রন্থ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিছক সিরাত বা জীবনচরিত আলোচনা করার জন্য নয়; বরং জীবনের মহত্ত্বপূর্ণ কিছু দিক সম্পর্কে অবগতি লাভ করা। তাঁর দয়া, মমতা ও মহানুভবতার দিগন্ত উন্মোচিত করার চেষ্টা করা। তাঁর নবুয়তের সত্যতার ওপর যৌক্তিক এবং জাগতিক প্রমাণগুলো উপস্থাপন করা এবং তাঁর সম্পর্কে পশ্চিমা মিডিয়গুলোতে প্রচারিত সন্দেহ ও সংশয়গুলোকে দূর করা। মুসলিম - অমুসলিম—যেকোনো পাঠক পড়তে শুরু করলে নিজের অজান্তেই মুগ্ধতায় ডুবে যাবেন, জানা বিষয়গুলোকেও নতুনভাবে দেখবেন—সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ এক মহাজীবনের আলোয় মোহিত হতে বাধ্য হবেন। অন্যান্য অনেক সিরাত-গ্রস্থ থেকে ‘খুলুকিন আজিম’-এর ভিন্নতা এখানেই। ধন্যবাদ সবাইকে মাআস সালাম মোহাম্মদ আবদুল্লাহ
Nasrullah ibn elias @ August 18, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ বই : খুলুকিন আজিম লেখক : শাঈখ আতিক উল্লাহ হাফি. . এক. সেদিন আযহারে গিয়ে হঠাৎ দেখা হয়ে গেল আতিক উল্লাহ সাহেবের সাথে। কারাবাসের পর এই প্রথম দেখা হুজুরের সাথে। তাই বেশ ইন্টারেস্ট ফিল করছিলাম। ইবতিলার সময় যে কারন দেখানো হয়েছিল গ্রেফতারের, খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তখন। অমূলক কিছু ধারনাও ভর করছিল মাথার ভেতর। এতোদিন পর আজকে হুজুরকে সামনাসামনি দেখে তাই আলাপের ঝুড়ি উপচে পড়ছিল। কথার ফাঁকে জানতে পারলাম, হুজুরের ইবতিলা থেকে ফারাগাতের পর দ্বিতীয় বই হিসেবে প্রকাশ পাচ্ছে সুনানিয়্যাত সিরিজের প্রথম বই ‘খুলুকিন আজিম’। নতুন সিরিজ, তাই খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষই হতে চায় না। অবশেষে মার্চের শেষের দিকে একদিন বইটা দোকান থেকে সংগ্রহ করলাম। মাদরাসায় থাকার দরুন প্রি অর্ডার করা হয়নি। প্রথমেই প্রচ্ছদের পিছনে থাকা গুনীমানুষ মাওলানা ওবায়দুল্লাহ সাহেবের ছোট্ট করে দেয়া রিভিউটা আগ্রহে আরো একটু মশলার জোগান দিলো। কিন্তু ‘ট্রাজেডি’ টা ঘটলো সূচিপত্র দেখে। মানুষের একটা সত্তাগত অভ্যাস হলো, মানুষের কাছে তাদের পরিচিত প্রত্যেকের ব্যাপারে আলাদা একটা মিথ থাকে। তার উপর প্রিয় মানুষগুলোকে সে সবসময় তেমন দেখতেই পছন্দ করে যেমনটার কারনে মানুষটা তার প্রিয় হয়েছিল। মানুষ কখনোই পছন্দ করবে না যে, তার প্রিয় মানুষ ঠিক তার উল্টো করবে যে বিষয়টার কারনে সে তাকে ভালোবাসে। আতিক উল্লাহ সাহেবের সাথে আমার পরিচয় উনার ‘জীবনের ক্যানভাসে আঁকা গল্প’ দিয়ে। সেই ছোট্ট বয়স থেকেই তাই লেখককে আমার খুব আপন মনে হতো। কারনটা তখন না বুঝলেও এখন বুঝি; হুজুরের বর্ণনাশৈলি আমাকে উনার বইয়ের প্রতি এমন চুম্বকের মতো আকর্ষন করতো। পরবর্তী বুঝ হওয়ার পর দেখেছি, একই বিষয় যেটা পৃষ্ঠা কে পৃষ্ঠা পড়েও আমলের স্পৃহা জাগাতে পারিনি, ঠিক সেই বিষয়ই হুজুরের একটা গল্প শুনেই কারিশমাটিকভাবে আমলের মনোবাসনা জাগিয়ে দিতো। কিন্তু যখন ‘খুলুকিন আজিম’ এর সূচিপত্র দেখলাম। মনে হলো- যাহ, এমন গৎবাধা বই তো কতই পড়লাম! অসাধারন মানুষের সাধারন গতানুগতিক বইয়ের মতো শিরোনাম দেখে তাই কিছুটা আশাভঙ্গ হলো। দুই. মাদরাসার ওয়াড্রপের ড্রয়ার থেকে কিতাবটা বের করেছি আজকে প্রায় মাসখানেক পর। ভাবলাম, পয়সা দিয়ে কিনেছি একটু তো পড়ে দেখি। ইভেন টাকাটা উসুলের জন্য হলেও তো কিছুটা পড়া উচিৎ। মাগরিবের পর পড়তে বসেছি। এশার আজানে ঘোর ভাঙলো। ততক্ষনে আমারও মস্তিষ্কে গড়ে উঠা ভুল ধারনার আস্তর কেঁটে গেছে। এতোদিন যে কেন বইটা নিয়ে বসলাম না, সেই আফসোস করছিলাম বারবার। প্রথমে সূচিপত্র দেখে ভেবেছিলাম, আরে এগুলো তো সেই মক্তব থেকে পড়ে আসছি, এ আর নতুন কি! কিন্তু মস্তিষ্কের গভীরে পড়ে থাকা ধুলোর আস্তর পড়ে যাওয়া এই জানা বিষয়গুলোকেও যে এতোটা অসম্ভব শৈলিতে প্রকাশ করা যায়, বইটা না পড়লে বোধয় সেটা অজানাই রয়ে যেতো। বেষ্ট পিপল অলওয়েজ ক্রিয়েট বেষ্ট- এটা আরো একবার আমার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে অর্জিত হলো। বইতে প্রত্যেকটা আমলের শুরুতে লেখক একান্ত বন্ধুর সাথে আলাপের মতো করে যেই আনুখা হিকমাহগুলো বয়ান করেছেন, এককথায় বললে সেগুলো জাষ্ট অ-সাধারন। হাদিসের বারাকাহ আর লেখকের বলার মুন্সিয়ানা আপনাকে পঠিত হাদিসটির উপর আমল করতে উদ্বুদ্ধ করবেই; সেটা একবারের জন্যে হলেও। এক্ষেত্রে আমি পরিক্ষিত। দ্বিতীয় আরেকটি বৈশিষ্ট হলো- প্রত্যেকটা হাদিস কিংবা আয়াতের উপর তার ‘তাখরিজ’ (রেফারেন্স) করা হয়েছে। ফলে আপনি স্পষ্ট করে জানতে পারলেন যে, আমলটা পেয়ারা হাবিব করে গিয়েছেন বা আমাকে করতে বলেছেন। এটা আপনার আমলের স্পৃহাকে আরো মজবুত করবে। তালিবে ইলম ভাইদের হাদিসের লফজ মনে থাকলে আমলের সময় আনমনে কল্পনায় কানে বাজিয়ে নিতে পারেন আপনাকে উদ্দেশ্য করে বলা রাসুলের অমৃত সব বাণী। তৃতীয়ত- বইতে লেখক একদম দিনের শুরু থেকে আরম্ভ করেছেন। আরবীতে দিনের শুরু হয় রাত থেকে। লেখক তাই ঘুম থেকে শুরু করেন লেখার সূচনা। এরপর নিরবধি শান্তভাবে বয়ে চলা নদীর মতো বয়ে চলে সুন্নাহর জান্নাতী নহর। লেখক একে একে বর্ণনা করতে থাকেন জীবনঘনিষ্ঠ সব সুন্নাহ। পড়তে পড়তে হঠাৎই আপনার মনে হতে পারে- নাহ, এই বই এভাবে পড়া যাবে না। আপনার অজান্তেই হাইলাইটার উঠে আসবে আপনার হাতে। আপনি আনমনে দোআ কিংবা আমলগুলোকে হাইলাইট করতে থাকবেন। যেমনটা আমার বেলায় হয়েছিল। তবে আমি এখানে দুটো পরামর্শ যোগ করতে চাই পাঠকের উদ্দেশ্যে- ১. বইটা কে আতিক উল্লাহ সাহেবের অন্যান্য গল্পের বইয়ের মতো মনে করবেন না। ম্যান্টালিটি আগেই ক্লিয়ার করুন। কতকিছুই তো পড়া হয় অযথা, বেফায়দার। জোর করে তাই একবার পড়া শুরুই করে দেখুন না; দেখবেন, আপনিও বলতে বাধ্য হবেন- দিস ইজ এক্সলেন্ট! বইটাতে আপনি পরিচিত ‘গল্পবলিয়ে’ আতিক উল্লাহর বাইরে ভিন্ন এক আতিক উল্লাহকে খুঁজে পাবেন। ২. যেহুতু এটা কোন গল্পের বই না। তাই এর পাঠের ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা অবলম্বন করাটা আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। যেমন, আমি যেটা করেছি- প্রতিটা চাপটারের বাছাইকৃত আমলগুলো আত্মস্থ করা এবং ব্যবহারিক সুন্নাহগুলো অভ্যাসে আনার আগপর্যন্ত ভেবেছি অন্য চাপটারে যাবো না। যখন মনে হবে- হ্যা, এখন আমি না চাইলেও ঘুমের আগে আনমনে আমার ঠোটে উচ্চারিত হবে মুআ’উইজাত, তখনই আমি অন্য চাপটারের আমলগুলোয় যাবো। সেক্ষেত্রে এটা দীর্ঘ মেয়াদী কাজ হলেও আমার মনে হয়েছে, বেশ ফায়দাজনক হবে এটা। আপনার ক্ষেত্রে পন্থা ভিন্নও হতে পারে, তবে খেয়াল রাখবেন, যাতে অন্যান্য রচনা বা গল্পের মতো গৎবাধা স্টাইলে পড়ে না যাওয়া হয়। ৩. বইটা পড়ার সময় হাতের কাছে হাইলা্টার পেন রাখা উচিৎ। যে দোআগুলো মুখস্থ করার কিংবা আপনি ভাবছেন যে, এই আমলটা আপনি করবেন- সেই দোআ বা কাজগুলো মার্ক করে রাখুন। দোআগুলো প্রথম দিকে দেখে দেখেই পড়তে পারেন। আস্তে আস্তে মুখস্থ করে নেবেন। আর কাজের সাথে সম্পর্কিত যে আমলগুলো, সেগুলোতেও প্রত্যেকদিন অথবা তিনদিনে একবার হলেও নজর বুলাতে পারেন, যাতে না ভুলে যান। সাথে কাজের ফজিলত- অন্তর্নিহিত হিকমাহগুলোও একবার পড়ে নিলেন। এটা ব্যক্তিগতভাবে অধ্যায়নের ক্ষেত্রে। আর ইজতিমাঈ’ ভাবে তালিমের জন্য নিম্নোক্ত পলিসি দুটো আমলের প্রতি আরো বেগবান করবে আশা রাখি- ১. তালিম করতে হবে অল্প করে। মানুষকে বিষয়টা আরো খোলাসা করে আন্তরিকতার সাথে বোঝানো। আঞ্চলিকতার প্রতি মানুষের টান আজন্ম। বিষয়টাকে তাই প্রয়োজনে আঞ্চলিক ভাষায় উপস্থাপন করা। ২. একটু কষ্ট করে দোআগুলো কম্পোজ করিয়ে দেয়া, হারকাতসহ। পারলে নিজ উদ্যোগে মুখস্থ করিয়ে দেয়া। ৩. দৈনন্দিন, না পারলে তিনদিন, কমপক্ষে সপ্তাহ অন্তর একবার হলেও কারগুজারী শোনা। তবে অবশ্যই সেটা যেন হয় অত্যন্ত হিকমত এবং আন্তরিকতার সাথে। এমন যেন না হয় যে, লোকটা পরের সপ্তাহে আর কারগুজারী মজলিসে বসলোই না শরমে ৪. মেহনতগুলো করার সময় এতটুকু মনে রাখলে কাজের কষ্ট একদম লাঘব হয়ে যাবে যে, আমি এই কষ্টগুলো পেয়ারা হাবিবের সুন্নাহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে করছি। একটি মৃত সুন্নাহ জীবিত করার সাওয়াব একশত শহিদের সাওয়াবের সমান হবে। তাছাড়া হাদিসে আরো আছে- ‘যে আমার সুন্নাতকে জীবিত করলো, সে যেন আমাকেই মানুষের মাঝে জীবিত করলো। আর যে আমাকে (সুন্নাত দ্বারা মানুষের মাঝে) জীবিত রাখলো, সে জান্নাতে আমার সাথেই থাকবে।’ সুবহানাল্লাহ! এর উপর যারাই আমল করবে, তাদের সবার আমলের সওয়াবের একটা অংশ তো আপনার ডিপোজিট একাউন্টে জমা হচ্ছেই। বিষয়গুলো স্মরনে রাখলে আশা করি মেহনতগুলো সহজ হবে। পরিশেষে বলবো- খুলুকিন আজিম প্রিয় লেখক শাঈখ আতিক উল্লাহ হাফি. এর এক অমর কীর্তি হিসেবে বেঁচে থাকবে বহুকাল। অন্যগুলোর ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ রইলেও অসংখ্য পাঠক যে নিজের জীবনকে সুন্নাহর আলোয় আলোকিত করতে পারবেন আল্লাহর নুসরাত এবং এই বইয়ের ওসিলায়- এটা অনেকাংশে নিশ্চিত। আমরা বিশ্বাস করি, আল্লাহ বইটিকে কবুল করে নিয়েছেন। তাই আমি বলবো, বইটা এজ এ মুসলিম, এট লিষ্ট রাসুলের একজন আদনা উম্মত হিসেবে আপনার সংগ্রহে থাকা উচিৎ। আমি কথা দিতে পারি, আপনি ঠকবেন না! সুনানিয়্যাত সিরিজের দ্বিতীয় বই ‘উসওয়াতুন হাসানাহ’ খুব দ্রুত প্রকাশের মুখ দেখুক সেই কামনা। প্রকাশিতব্য উপন্যাস ‘দ্বিখন্ডিত ভালোবাসা’র জন্যও রইলো আগাম শুভকামনা। (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) . পাঠ প্রতিক্রিয়ান্তে- নাসরুল্লাহ ইবনে ইলিয়াস হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা।
ইমরান মামুন @ August 25, 2022


#মাকতাবাতুল-আযহার-রিভিউ-প্রতিযোগিতা-২০২২ ★বইঃ খুলুকিন আযীম লেখক -মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ reviewed by Imran Mamun সুন্নাতের বাহিরে কোন সওয়াব নেই, তুমি তোমার বাহ্যিক (দৃশ্যমান) আমল দ্বারা মানুষের নিকট মর্যাদা ও সম্মানের স্থানে পৌঁছেছে এবার অভ্যন্তরীণ আমল দ্বারা আল্লাহর নিকট মর্যাদা ও নৈকট্য অর্জন করো। মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদেরকে ইমানের মত মহা দৌলত নসীব করেছেন, আর আখেরি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মাতের মধ্যে শামিল করেছেন এর জন্য আমরা যতই শুকরিয়া আদায় করি তা কমই হবে। আখেরি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মত হওয়ার প্রকৃত শুকরিয়া তো এটাই যে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে হযরত মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত ও আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। কেননা তাঁর আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে মহান আল্লাহ পাকের মাগফেরাত ও ভালোবাসা। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে আমরা সুন্নত পরিত্যাগ করে বিজাতীয় কৃষ্টি-কালচারের মধ্যে মুক্তি ও অগ্রগতি খুজি, খুব ভালোভাবে মনে রাখতে হবে মুসলমান যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ না মানে তাহলে ইহজীবনে তাদের জন্য লাঞ্ছনা অবধারিত। পরকালেও শাস্তি পেতে হবে। সে কখনো পূর্ণাঙ্গ মুমিন হতে পারবে না,, সুতরাং প্রতিটি কাজ করার আগে আমাদের তালাশ করতে হবে উক্ত কাজে আল্লাহর হুকুম কি এবং রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত তরীকা কি? আর এই সম্পর্কে জানার জন্য ★মাকতাবাতুল আযহার কর্তৃক প্রকাশিত মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ হাফিজাহুল্লাহ এর লিখিত ★খুলুকিন আযীম বইটি হতে পারে আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী, বইটিকে নির্ভরযোগ্য করার জন্য যা যা করা দরকার লেখক তাই তাই করেছেন। এই কিতাবের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি বৈশিষ্ট্য হলো, ★আমাদের জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের প্রত্যেকটির সুন্নাত তরীকা তুলে ধরা হয়েছে, সাথে উক্ত সুন্নতের হিকমত ও ফায়েদাও তুলে ধরা হয়েছে, যেটি পড়ার পরে মানুষের মনে সুন্নত অনুযায়ী আমল করার একটা জযবা তৈরি হয়ে যায়। তাছাড়া এই বইটি পড়লে আপনি উল্লেখিত বিষয়ের উপরে উপস্থিত বক্তৃতাও করতে পারবেন। এই বইটি পড়ে পাঠক সুন্নাত অনুযায়ী আমল করে রাসুলুল্লাহ সা, এর মত উত্তম চরিত্র তথা খুলুকিন আযীম গঠন করতে পারবেন, আল্লাহ কবুল করুক আমীন, বই খুলুকিন আযীম লেখক মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ প্রকাশক মাকতাবাতুল আযহার পৃষ্ঠা ৬৪০ গায়ের মূল্য ৯০০ ছাড় মূল্য ৪৫০ ইমরান মামুন
Ahmad Abdullah @ August 31, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ . বই : খুলুকিন আযীম ক্যাটাগরি : সুনানিয়্যাত লেখক : মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৬৪০ মুল্য : ৪৫০ টাকা ব্যক্তিগত রেটিং : ৯.৫/১০ কেউ রাসুলুল্লাহ ﷺ এর উপরে একবার দরুদ পাঠ করলে, আল্লাহ সেই দরুদ পাঠকারী ব্যক্তির উপরে দশবার দরুদ পাঠ করেন। রাসুলুল্লাহ ﷺ তো এমনিতেই জান্নাতি তারপরেও আমাদের কেন বেশী বেশী দরুদ পড়া উচিৎ.? - অন্তরের গহীনে লুকিয়ে থাকা প্রশ্নের উত্তরটা পেয়ে যেন অন্তর প্রশান্তিতে ভরে গেল। মনের অজান্তেই অন্তর বলে উঠল, “আল্লাহুম্মা সাল্লি ওয়া সাল্লিম আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ” – ঠিক এভাবেই আমার অন্তরকে প্রশান্ত করে দিয়েছে আতীক উল্লাহ হুজুরের “খুলুকিন আযীম” বইটির প্রতিটি পৃষ্টা। 📗 বই পরিচিতিঃ 'খুলুকিন আযীম' - আতীক উল্লাহ হুজুরের সুনানিয়্যাত সিরিজের বই। বইটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো লেখক রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর ইবাদাতে মোড়ানো দিনের প্রতিটি মুহুর্ত কে সাজিয়েছেন পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায়। নবীজি ﷺ - এর ঘুমের আগের আমল, বিছানা ঝাড়া থেকে শুরু করে ঘুমাতে যাবার নিয়ম, ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখলে, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে, তাহাজ্জুদের সালাতের আগে-পরে, যেকোন ফরয সালাতের আগে-পরে, সকালে-সন্ধ্যায়, তাহারাতের ক্ষেত্রে, সালাতের মাঝে, জুমু’আর দিনে, সিয়ামরত অবস্থায়, রামাদানে, ঈদের উৎসবে, কুরবানিতে, পানাহারে, সফরে, আল্লাহর কালাম পাঠের সময়ে - এমনই নবীজি ﷺ-এর প্রতিটি সুন্নাহ দিয়েই সাজানো এক বিশাল কলোবর - খুলুকিন আযীম বইটি। 📗 কেন বইটি পড়া উচিৎঃ আমরা অনেকেই সিরাতের বই পড়েছি। সিরাতের বই থেকে নবীজি ﷺ এর পুরো জীবনী জানা যায় কিন্তু নবীজির ﷺ দৈনিক আমলের বর্ণনা তেমন পাওয়া যায় না। প্রশ্ন হতে পারে, নবীজি ﷺ এর পঠিত দু’আ গুলোর জন্য তো হিসনুল মুসলিম বইটাই যথেষ্ট, তাহলে কেন খুলুকিন আযীম? আমি বলব, হিসনুল মুসলিম অবশ্যই যথেষ্ট, কিন্তু আমার মত উদাস-ভুলোভালা মুসলিমের জন্য খুলুকিন আযীম বইটা প্রয়োজন কারণ এখানে প্রতিটা দু’আর আগে আদরে মাখা ভঙ্গিতে লেখক যেন মাথায় হাত বুলিয়ে বুঝাতে চেষ্টা করেছেন, নবীজি ﷺ তোমার জন্য কত্ত কি করেছেন, তোমাকে কত ভালবেসেছেন, আর তুমি তার সুন্নাহ মেনে এই আমলটা করতে পারবে না? আমি বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায় আমল করার উৎসাহ পেয়েছি, কখনো ছুটে গেলে আবার অনুভব করেছি লেখকের সেই আদর মাখা আহবান, "নবীজির ﷺ অনুসরণে এটুকুও পারবে না.?" - আবার নতুন উদ্যমে আমলের নিয়াত করেছি। যে কোন দু'আ ও সুন্নাহর বইগুলোর সাথে খুলুকিন আযিমের পার্থক্য হলো, অন্য বইগুলোতে শুধু দু'আ বা সুন্নাহটাই জানিয়ে দেয়া হয়, আর খুলুকিন আযীমে জানিয়ে দেবার পাশাপাশি আমলের আগ্রহ তৈরী করে দেয়া হয়েছে। ভালবাসা আর দায়িত্ব – দুইটা দুই জিনিষ। দায়িত্ব পালন আমাদের জন্য কষ্টকর হতে পারে, কিন্তু ভালবাসা কখনোই কষ্টকর হয় না, খুলুকিন আযীম - সুন্নাহকে ভালবাসতে শেখাবে পাঠককে। পাঠক নিজে থেকেই ভালবাসতে শুরু করবে সুন্নাহকে। 📗 খুলুকিন আযীমে যা আছেঃ ৬৪০ পৃষ্ঠার এই বিশাল কলোবর মোট ১৪ টি অধ্যায়ে বিভক্ত। অধ্যায়গুলো হলো - 🔖 ০১. যিকরুল্লাহ - শুরুতেই যিকিরের ফজিলত নিয়ে বইটি শুরু হয়েছে। নবীজি ﷺ যিকিরকে কিভাবে গুরত্ব দিতেন - পরিষ্কার হয়েছে এই অধ্যায়ে। জাগরণ ও নিদ্রা, বিছানার ঝাড়া, ঘুমানোর আগের আমল, বিছানায় শুয়ে আমল ইত্যাদি ফজিলত ও আমলের প্রতি আহবান সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে 'যিকরুল্লাহ' তে। 🔖 ০২. সকাল-সন্ধ্যা - সকালের মাধ্যমে আমাদের দিনের শুরু ও সন্ধ্যা দ্বারা আমাদের রাতের শুরু হয়। এই দুই সময়ই ফেরেশতাগণ আ. আমাদের আমল রব্বে কারীমের সামনে পেশ করেন। নবীজি ﷺ এই দুই সময়ে দুনিয়া ও আখিরাতের প্রতি কল্যান কামনা করতেন। প্রায় ২৫/২৬ টি দু'আ বর্ণিত আছে এই বিশাল কলোবরে। 🔖 ০৩. সালাত পরবর্তী আমল - নবীজি ﷺ সালাতের পর পরই উঠে চলে যেতেন না। তিনি বসতেন, আল্লাহর প্রশংসা করতেন, ইস্তেগফার করতেন, তাসবীহ তাহলিল ও হামদ পাঠ করতেন - এই অধ্যায়ের সেসব আমলেরই সুনিপুণ বর্ণনা পাওয়া যাবে। 🔖 ০৪. তাহাজ্জুদ - তাহাজ্জুদ হলো আধারের নুর। নবীজি ﷺ এই আমল কখনই ত্যাগ করতেন না। তিনি কি কি দু'আ করতেন, সালাতের পুর্বে কি কি যিকির করে নিতেন, কত রাকা'আত আদায় করতেন, কখনো ছুটে গেলে কি করতেন ইত্যাদি বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে এই অধ্যায়ে। 🔖 ০৫. পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতা - সালাতের পুর্বশর্ত হলো পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা। নবীজি ﷺ পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে প্রচন্ড জোর দিতেন। পবিত্রতা অর্জনের সময়ে হাম্মামে কি দু'আ নবীজি ﷺ পড়েছেন, অযু কিভাবে করেছেন, অযুর পরে কি যিকির করেছেন, নখ কাটা, জানাবাতের গোসল, মিসওয়াক সম্পর্কিত বিস্তর আলোচনা রয়েছে এখানে। 🔖 ০৬. সালাত- ঈমানের পরে সালাত আমাদের সর্বোচ্চ আমল। অযু করার পরে তাহিয়্যাতুল অযু, মসজিদের পবিত্রতা সম্পর্কিত বিষয়াদি, আযানের সুন্নাহ, জামা'আতে সালাত আদায়, মসজিদের আদব, সালাতের আদব, সিজদাহ, ও রাসুলুল্লাহ ﷺ এর আদায়কৃত অন্যান্য সুন্নাহ ও নফল সালাতের বর্ণনা উঠে এসেছে এই অধ্যায়ে। 🔖 ০৭. জুম'আ - নবীজি ﷺ এর কাছে জুমু'আ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। জুম'আর দিন ফজরে তিনি কোন সুরা পড়তেন, দাজ্জালের ফিতনা থেকে হিফাযতের জন্য উম্মাহকে কোন সুরার আমল করতে বলেছেন, জুম'আর জন্য তাঁর সাজসজ্জা কেমন হতো, খুতবা শোনা, মসজিদে মুসল্লিদের প্রতি আদব, জুম'আর মাকবুল দু'আ, ও এই দিনকে কেন্দ্র করে আনন্দ ও বিশ্রামের মত সুন্নাহগুলোকে লেখক এই অধ্যায়ে সাজিয়েছেন। 🔖 ০৮. সিয়াম - রামাদান আমাদের জন্য পরম আকাঙ্ক্ষিত একটি মাস। রামাদের সংবাদ প্রচার করে, চাঁদ দেখার দু'আ, নবীজি ﷺ এর সাহরী ও ইফতারের বর্ণনা, বাদ ইফতার দু'আ ও যিকির, ইতেকাফ, লাইলাতুল কদর, শাওয়ালের ছয় রোজা সহ অন্যান্য মাসের গুরুত্বপূর্ণ সিয়ামের বর্ণনা সহ রামাদানে উমরাহ'র ফজিলত নিয়ে বর্ণিত হয়েছে এই অধ্যায়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায়। 🔖 ০৯. ঈদ উৎসব ও কুরবানি - ঈদ মুমিনের উৎসব। ঈদের দিনে নবীজি ﷺ সকালে কি খেতেন, কখন জামাতের উদ্দেশ্যে বের হতেন, কেমন রাস্তা দিয়ে সালাতে যেতেন ও বাসায় আসতেন, ঈদের আনন্দ বিনিময়, যিলহজের আমল, আরাফা দিবসের দু'আ, যিলহজের তাকবীর, কুরবানির সময় ও আইয়ামে তাশরীকের বিষয়গুলো রয়েছে এই অধ্যায়ে। 🔖 ১০. পানাহার - নবীজি ﷺ প্রচন্ড ক্ষুধার্ত থাকলেও অন্যদের না দিয়ে নিজে একাই খেতেন না, তিনি কিভাবে খাওয়া শুরু করতেন, কিভাবে শেষ করতেন, তাঁর খাওয়ার ধরণ কেমন ছিল, খাবারের পরে কিভাবে শুকরিয়া আদায় করতেন, কি কি খেতে পছন্দ করতেন, প্রতিবেশী ও অতিথিদের কিভাবে খাবার হাদিয়া ও আপ্যায়ন করাতেন - তার বর্ণনা রয়েছে এখানে। 🔖 ১১. সফর - কেমন ছিল নবীজি ﷺ এর সফর.? তিনি গৃহে প্রবেশ ও ত্যাগে কি দু'আ পড়তেন। যানবাহনের সুন্নাহ, চলার পথের আমল - ইত্যাদি আলোচিত হয়েছে এ অধ্যায়ে। 🔖 ১২. হাদিস শরীফে কুর'আন - নবীজি ﷺ সাহাবা রা. গণকে কুর'আন শিক্ষা ও নিয়মিত তিলওয়াতের নির্দেশ দিতেন। কুর'আন তিলওয়াত, কুর'আন শেখা, অন্যকে শেখানো, খতম করা, সুরেলা তিলওয়াত, হিফয করা, তিলওয়াতের সিজদাহ ও কুর'আনের মজলিশের আলোচনা রয়েছে এই অধ্যায়ে। 🔖 ১৩. বিবিধ - নবীজি ﷺ এর অন্যান্য আমল গুলো আলোচিত হয়েছে খুলুকিন আযীমের এই অধ্যায়ে। হাই তোলা প্রতিরোধ, ডান দিকের বরকত, হাচি, মজলিসের কাফফারা, মুসহাফা, সালাম, প্রবেশের অনুমতি, কালিয়া, আত্মীয় স্বজনের খোঁজখবর - ইত্যাদি নানাবিধ আলোচনা রয়েছে এই অধ্যায়ে। 📗 বইটির যে দিকটি সংস্কার প্রয়োজন বলে আমি মনে করিঃ খুলুকিন আযীম পড়ার সাথে সাথে আমার সুন্নাহ পালনের ইচ্ছেও দৃঢ় হতে থাকে, বিশেষ করে রাসুলুল্লাহ ﷺ কখন কোন দু'আ পড়েছেন, কখন কোন আমল করেছেন। খুলুকিল আযীম ৬৪০ পৃষ্টার বিশাল কলোবর হওয়ায় পুরো বই জুড়েই দু'আ গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, ফলে দৈনিক আমল গুলো খুজে বের করার জন্য খুলুকিন আযীম বইটা আত্মনির্ভরশীল না। দেখা যায় এর জন্য অন্য কোন দু'আর বই এর শরণাপন্ন হতে হয়। অন্য দু'আর বইগুলোতে শুধু দু'আ ও সুন্নাহ গুলো থাকলেও খুলুকিন আযীমের মত দরদমাখা আহবান নেই। তাই আমি অনুভব করেছি যদি বই এর একদম শেষে দু'আ গুলো গুছিয়ে দেয়া থাকত তাহলে আমল করার জন্য সুবিধা হতো, ইচ্ছে মত খুজে পাওয়া যেত। পাশাপাশি প্রতিটি দু'আর পাশে বইয়ের দরদমাখা সুন্নাহর প্রতি আহবান উল্লেখিত পৃষ্টা নম্বর দেয়া থাকলে, আমলের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য বিস্তারিত একনজর দেখে নেয়ার সুযোগও থাকত পাঠকের। 📗 বইটি সম্পর্কে আমার উপলব্ধিঃ আল্লাহ্‌ যে আমাদের কেবল তার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন, খুলুকিন আযীম ছিল আমার সেই উপলব্ধি। নবীজি ﷺ এর প্রতিটা মুহুর্ত ছিল ইবাদাতে ঘেরা, আমলে মেশা। মাঝে মাঝে মনে হতো, নবীজি ﷺ এত বেশী আমল কিভাবে করতেন! মহান রব্বে করীমের প্রতি নবীজি ﷺ কতটা আন্তরিক ছিলেন তার হয়ত খুবই সামান্য বুঝতে পেরেছি খুলুকিন আযীমে। কিন্তু এই সামান্যই যে অনেক বেশী। সত্যি বলতে বইটা আমাকে সুন্নাহর প্রতি ভালবাসতে শিখিয়েছে। নবীজির ﷺ প্রতি ভালবাসা থেকেই আমলগুলোর প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে। আমি মনে করি খুলুকিন আযীম প্রতিটি মুসলিমের জন্য অবশ্যপাঠ্য ও দৈনিক তালীম করার জন্য অত্যন্ত ফজিলতপুর্ণ একটি বই। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম। রাদিয়াল্লাহু আনহুম ও রাদু আনহু। . . 📝রিভিউ লেখক - Ahmad Abdullah
মুহাম্মদ রুবেল মিয়া @ September 9, 2022


বইয়ের নাম : খুলুকিন আযীম লেখক : মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ প্রকাশনায় : মাকতাবাতুল আযহার পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৬৪০ মুদ্রিত মূল্য : ৯০০ টাকা রিভিউ লেখক : মুহাম্মদ রুবেল মিয়া وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِیْمٍ এবং নিশ্চয়ই আপনি খুলুকিন আযীম অর্থাৎ সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারি। - সুরা ক্বলম, আয়াত : ৪ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন আদব ও আখলাক, ন্যায় ও ইনসাফ এবং চরিত্রের উৎকৃষ্টতায় সর্বোচ্চে, সর্বাগ্রে। তাঁর সকাল থেকে সন্ধ্যা এবং সন্ধ্যা থেকে সকাল অর্থাৎ দিন-রাতের প্রতিটি ক্ষন অতিবাহিত হতো আল্লাহর মর্জি মোতাবেক পরিচালিত হয়ে। তিনি নিজ থেকে কিছু বলতেন না বা করতেন না। বরং আল্লাহ তাআ'লার পক্ষ থেকে যা নাজিল হতো তা-ই বলতেন বা করতেন। তাঁর জীবনটা ছিলো পবিত্র কুরআনের জীবন্ত অবয়ব। তাইতো আল্লাহ তাআ'লা তাঁর সমস্ত বান্দাদের আদেশ দিয়েছেন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যা দেন তা যেনো গ্রহণ করি, আর যা থেকে নিষেধ করেন তা যেনো পরিত্যাগ করে চলি। আল্লাহ তাআ'লা আরো বলেছেন রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনেই রয়েছে আমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। থাকবেই তো! তিনি যে ছিলেন খুলুকিন আযীম অর্থাৎ সর্বোত্তম চরিত্রের ধারক! আমাদের উন্নতি ও সফলতা নির্ভর করে আমরা আল্লাহ তাআ'লার আদেশ মেনে প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতটুকু অনুসরণ করি তার উপর। কারণ, রাসুলের অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে আমাদের সফলতা ও কামিয়াবির মূলমন্ত্র। নবিজী তাঁর পবিত্র জীবনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কিভাবে অতিবাহিত করেছেন আবার সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত কিভাবে কাটিয়েছেন তার পুরোটাই আমাদের জন্য পরম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় আদর্শ। আর তাঁর অনুসরণের মাধ্যমেই আমরা লাভ করতে পারবো আমাদের উভয় জীবনের সফলতার চাবিকাঠি। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ অনুশীলন ও অনুসরণের মাধ্যম হিসেবে আমাদের সাহায্য করবে বিখ্যাত সাহিত্যিক ও কুরআনপ্রেমী আলিম শাইখ মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ সাহেবের লেখা "খুলুকিন আযীম" বইটি। বইটি যা নিয়ে : ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে সুখ, শান্তি, সফলতা ও কামিয়াবি লাভ করতে সুন্নাহ অনুসরণের বিকল্প নেই। আর সুন্নাহ অনুসরণ করতে হলে অবশ্যই সুন্নাহ সম্পর্কে আগে জ্ঞানলাভ করতে হবে এবং সুন্নাহ ও বিদআহ সম্পর্কে থাকতে হবে জানাশোনা। সেজন্য এ সম্পর্কিত ইলম অন্বেষণের বিকল্প নেই। আর সে ইলম যদি হয় সাহিত্যের মাধুর্যে, ভাষার অলঙ্কারে, হৃদয়ের উত্তাপে অলংকৃত! শাইখ মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ সাহেবের বই যাঁরা পূর্বে পড়েছেন তাঁরা বুঝতে পারবেন হৃদয় ছোঁয়া লেখনী আদতে কি জিনিস। আর সেই হৃদয় ছোঁয়া লেখনী যখন হয় সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুলের সুন্নাহ নিয়ে, তাহলেতো কথাই নেই। এমনি একটি বই হলো "খুলুকিন আযীম"। বইটিতে রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমস্ত জীবনে বলা, করা ও অনুমোদন করা সুন্নাহগুলো আলোচিত হয়েছে সাহিত্য ও নসিহতের যৌথ মিশ্রণে। রাসুলের প্রত্যেকটি সুন্নাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, সেই সাথে সেই সুন্নাতের পক্ষে পবিত্র কুরআন ও হাদিসের অসংখ্য রেফারেন্স, সেই সুন্নাতের ফজিলত এবং ইহকালীন-পরকালীন উভয় জগতের লাভের বর্ণনা স্থান পেয়েছে "খুলুকিন আযীম"-এ। বইটি একই সাথে সুন্নাতের জ্ঞানকোষ এবং সাহিত্যের অলংকৃত নির্জাস। বইটি পাঠের প্রয়োজনীয়তা : বইটি পাঠের প্রয়োজনীয়তার কথা বললে শুরুতেই আসে সুন্নাহ জানা এবং মানার প্রয়োজনীয়তার কথা। আমরা শুরুতেই আলোচনা করেছি এ সম্পর্কে। আল্লাহ তাআ'লা বলেন, "রাসুল তোমাদেরকে যা দেন,তা গ্রহণ করো এবং যা থেকে নিষেধ করেন,তা থেকে বিরত থাক।" - সুরা হাশর, আয়াত : ৭ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যা দিয়েছেন তা-ই সুন্নাহ। আর ইবাদাত কবুল হওয়ার জন্য, আল্লাহ তাআ'লার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সুন্নাহ অনুসরণের বিকল্প নেই। আর সুন্নাহ অনুসরণ করতে হলে প্রয়োজন জ্ঞানের। সেই জ্ঞানেরই এক অমূল্য ভান্ডার "খুলুকিন আযীম"। বইটি আমাদেরকে সাহিত্যের ভাষা ও দলিলের আলোকে সকল কাজকর্মে প্রিয়নবির সুন্নাহের সাথে পরিচয় ঘটিয়ে দিবে, সুন্নাহগুলো বাস্তবায়ন করার গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে অবহিত করবে, সুন্নাহগুলো অনুসরণের লাভ জানতে সহযোগিতা করবে এবং কিভাবে আমরা আমাদের জীবনে সুন্নাহগুলো পরিপূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে পারি তার দিকনির্দেশনা দিবে। সুন্নাহের ব্যাপক প্রচলন এবং প্রতিটা মুসলিমের জীবনকে সুন্নাহর রঙে রঙিন করে দিতে বইটি অবদান রাখছে এবং ভবিষ্যতেও রাখবে ইনশাআল্লাহ।

আপনার মতামত ও রেটিং