আই লাভ কুরআন


লেখক: মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ

বিষয়: কুরআন/তাফসীর

14 রেটিং / 14 টি মতামত
মূল্য: Tk. 400.0  Tk. 300.0   (25.0% ছাড়)

 

বইয়ের নাম আই লাভ কুরআন
লেখক মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ
প্রকাশনী শুদ্ধি
সংস্করণ 4 2018
পৃষ্ঠা সংখ্যা 400
ভাষা

মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ


এই বিষয়ের আরো বই

পাঠকের মতামত ও রেটিং

মাহবুবুর রহমান @ August 18, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ বই : আই লাভ কুরআন লেখক : মুহাম্মাদ আতিক উল্লাহ পবিত্র কুরআনের নানা বিষয় ও রাসূল সা. এর জীবনীর বিভিন্ন দিক নিয়ে এপর্যন্ত ছোট বড় যেই পরিমাণ রচনা, প্রবন্ধ ও আরটিকেল ইত্যাদি বের হয়েছে পৃথিবীর অন্যকোনো ধর্ম বা অন্যকোনো বিষয়ের ওপর এর অর্ধেক পরিমাণ লেখনীও তৈরি হয়নি। আর নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, কেয়ামত পর্যন্ত এটা অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে। পবিত্র কুরআনের সঙ্গে অসংখ্য বিষয় জড়িত, যেমন তাফসীর, ইলমুল কিরাআত, ইলমুত তাজবীদ ও উলূমুল কুরআন ইত্যাদি। আবার উলূমুল কুরআনের শাখা রয়েছে প্রায় সত্তরের উর্ধ্বে। ইসলামের শুরু থেকে এপর্যন্ত যারা কুরআন বিষয়ে কলম ধরেছেন তারা সাধারণত কুরআনের উল্লেখিত বিষয়গুলোকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। আবার তাদের ভাষাও তুলনামূলক গম্ভীর গবেষণামূলক। সাধারণ পাঠকের জন্য এটি মোটেও উপযোগী নয়। ফলে কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পরিবর্তে দিন দিন তৈরি হয়েছে বিশাল দূরত্ব। এবং কুরআনের প্রতি ভক্তির পরিবর্তে অনেকের মনে তৈরি হয়েছে ভয়। এসব কারণে কুরআনকে মানুষ এখন তেলাওয়াতের পরিবর্তে তাবিজ-কবচ ও ঝাড়-ফুঁকের মন্ত্র বানিয়েছে। অনেকে তো কুরআনকে আবার ফ্যাশনের বস্তু বানিয়েছে। অনৈসলামিক সভা-সমাবেশ এবং বিনোদনের নামে অপসংস্কৃতির রঙিন মঞ্চে অযোগ্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে কুরআন তেলাওয়াত করিয়ে পবিত্র এই মহা গ্রন্থের সঙ্গে অশ্রদ্ধা প্রকাশ করা হচ্ছে অহরহ। অথচ এই কুরআন হলো মুসলিম জাতির হৃদয়ের স্পন্দন। মুসলমানদেন সকল ভক্তি-ভালোবাসা এবং আবেগ ও অনুভূতির প্রধান কেন্দ্র এই কুরআন। সুতরাং তীব্র প্রয়োজন ছিলো এমন একটি বইয়ের এবং এমন একটি রচনার, যা আমাদের শক্ত ও অনুর্বর হৃদয়ে এবং অন্ধকার ও ধূলিমলিন অন্তরে কুরআনের প্রতি গভীর আবেগ ও ভালোবাসা তৈরি করবে। ফেসবুক-টুইটার, টিকটক ও লাইকির মতো অভিশপ্ত থাবা থেকে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করে কুরআনের সুশীতল ছায়ায় এনে আশ্রয় দিবে। আমরা আনন্দিত, আমরা পুলকিত। আমাদের প্রতিক্ষিত সেই বইয়ের দেখা আমরা পেয়েছি। আর তা হলো ‘আই লাভ কুরআন’। লেখক শায়েখ মুহাম্মাদ আতিক উল্লাহ যেমন একজন যোগ্য আলেম, ঠিক তেমন তিনি একজন বাংলাভাষার প্রতিষ্ঠিত লেখক ও সাহিত্যিক। তার লেখা কুরআনিয়্যাত সিরিজের এটি প্রথম বই। পৃষ্ঠাসংখ্যা ৪০০। সিরিজের দ্বিতীয় বইটি হলো ‘সুইটহার্ট কুরআন’। এর পৃষ্ঠাসংখ্যা ৭২০। লেখক যেভাবে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন তা বইয়ের বুকে তুলে আনতে গেলে কুরআনিয়্যাত সিরিজের ব্যাপ্তিটা দশ খণ্ড পর্যন্ত যেতে পারে। এমনকি আরও বাড়তে পারে। তবে পাঠকদের অবশ্যই এটা মাথায় রাখতে হবে যে, সিরিজগুলো কোনো তাফসীর গ্রন্থ নয়। এই সংকলনের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য হলো, আমাদের মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং এক কথায় আপামর মুসলিম জনসাধারণকে কুরআন কারীমের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। কুরআন ও তাদের মাঝে ভালোবাসার মজবুত একটি সেতুবন্ধন তৈরি করা। আর লেখক এ ক্ষেত্রে যেমন দায়িত্ববোধ ও মমত্ববোধের অসাধারণ পরিচয় দিয়েছেন, ঠিক তেমনি তিনি তার চেষ্টা ও সাধনায় পরিপূণ সফলও হয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস, কুরআনিয়্যাতের পরবর্তী সিরিজগুলোও পাঠকমহলে একই রকম সারা জাগাবে। চরশো পৃষ্ঠার দীর্ঘ বইটির প্রথম ত্রিশ পৃষ্ঠা হলো বইয়ের ভূমিকা। লেখক ভূমিকা শুরু করেছেন এমন একটি আবেগঘন ঘটনার মাধ্যমে, যা পাঠকের হৃদয়ে অবশ্যই কুরআনের প্রতি ভালোবাসার তীব্র এক আকর্ষণ তৈরি করবে। সাথে সাথে কুরআনের প্রতি নিজেদের দূরত্ব ও অন্যায় আচরণের অনুশোচনাও মনে জাগ্রত হবে। লেখক যেন এর মাধ্যমে পাঠককে বইটি পড়ার জন্য শুরুতেই মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নিয়েছেন। এরপর দরদী লেখক যেন তার অনুশোচনাদগ্ধ পাঠকদের নিয়ে একসঙ্গে ঝাপিয়ে পড়েছেন কুরআনের প্রেমে আল্লাহর পবিত্র বাণীর ভালোবাসার অথৈ সমুদ্রে। এরপর চোখের সামনে বেশে উঠবে একে একে কুরআনের সঙ্গে রাসূল সা. এর গভীর মুহাব্বতের চিত্র। আশআরী সাহাবীদের রাত্রিবেলায় কুরআনের তেলাওয়াতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। কেমন উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা এবং আবেগ ও ভালোবাসা নিয়ে পূর্ববর্তীরা কুরআন তেলাওয়াত করেছেন তাও অনুভূত হবে তীব্রভাবে। কুরআন কারীম এক অফুরন্ত শক্তির আধার, কুরআন কারীমের তেলাওয়াতে, শ্রবণে ও তাদাব্বুরে হৃদয়-মনে কী অকল্পনীয় শক্তি অর্জিত হয় পাঠক তা বুঝতে পারবেন। এরপর ভূমিকার শেষে লেখক একটি আয়াতের মাধ্যমে খুব সূক্ষ্মভাবে পাঠককে সর্তক করার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, “আয়াতে যদিও সম্প্রদায় বলে কাফেরদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, তবুও কুরআন কারীমকে অবহেলা করলে, মুমিন বান্দাও কেয়ামতের দিন ফেঁসে যাওয়ার আশংকা থেকে যায়”। ভূমিকার পর লেখক পুরো বইটি সাজিয়েছেন প্রধান আটটি অংশ ও শিরোনামের মাধ্যমে : প্রথম অংশ : হিযবী মিনাল কুরআন। দ্বিতীয় অংশ : আই লাভ ইউ, সুইট হার্ট! তৃতীয় অংশ : কুরআনী প্রজন্ম! চতুর্থ অংশ : জীবনের প্রয়োজনে কুরআন। পঞ্চম অংশ : আয়াতমাখা গল্প। ষষ্ঠ অংশ : মাদরাসাতুল আম্বিয়া। সপ্তম অংশ : কুরআনি ভাবনা। অষ্টম অংশ : মাদরাসাতুল কুরআন। পরিশেষে বলতে চাই, আরবি ভাষার কুরআনও যে আমাদের বাংলাভাষায় সাহিত্য চর্চার গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হতে পারে লেখকের আগে বোধ করি কেউ এটি আমাদের সামনে পেশ করতে পারেননি। যদিও এটি লেখকের মূল উদ্দেশ্য নয়। তাঁর প্রধান উদ্দেশ্যই হলো কুরআনের তাদাব্বুরের সঙ্গে পাঠকদের পরিচয় করানো। আর সেই তাদাব্বুর হৃদয়-মনে প্রোথিত করার জন্য লেখক হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপনা বেছে নিয়েছেন। এই বইয়ের গতিময়, প্রাণময় ও আবেগময় ভাষা ও উপস্থাপনায় পাঠকের মন আলোড়িত হয় ঠিকই কিন্তু বল্গাহারা হয় না। কোনো অপ্রীতিকর সাম্প্রদায়িকতাও এখানে পাঠকের মনকে কলুষিত করে না। বরং বাস্তব ও সত্য ঘটনা বর্ণনা করার মাধ্যমে এ বইয়ের উদ্দেশ্য ও আবেদনকে অত্যন্ত বর্ণিল ভংগীতে চমৎকার উপস্থাপনায় ও অত্যন্ত হৃদয়-নন্দিত করে পাঠকের আবেগ অনুভূতির সামনে পরিবেশন করা হয়েছে। তাই কোনো চাপাচাপি ছাড়াই, অথচ লেখকের ইচ্ছে মতো পাঠককে সিদ্ধান্ত নিতে একটুও বেগ পেতে হয় না। এমনকি বইটি পড়ে শেষ করার আগেই পাঠকের মনে কুরআনের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও ভক্তি তৈরি হতে বাধ্য। এটাও বইটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ যেন লেখক মহোদয়ের এই চেষ্টা ও সাধনা কবুল করেন এবং কুরআনিয়্যাতের এই খেদমত অব্যাহত রাখেন! আমীন!!!
মাহবুবুর রহমান @ August 18, 2022


পবিত্র কুরআনের নানা বিষয় ও রাসূল সা. এর জীবনীর বিভিন্ন দিক নিয়ে এপর্যন্ত ছোট বড় যেই পরিমাণ রচনা, প্রবন্ধ ও আরটিকেল ইত্যাদি বের হয়েছে পৃথিবীর অন্যকোনো ধর্ম বা অন্যকোনো বিষয়ের ওপর এর অর্ধেক পরিমাণ লেখনীও তৈরি হয়নি। আর নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, কেয়ামত পর্যন্ত এটা অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে। পবিত্র কুরআনের সঙ্গে অসংখ্য বিষয় জড়িত, যেমন তাফসীর, ইলমুল কিরাআত, ইলমুত তাজবীদ ও উলূমুল কুরআন ইত্যাদি। আবার উলূমুল কুরআনের শাখা রয়েছে প্রায় সত্তরের উর্ধ্বে। ইসলামের শুরু থেকে এপর্যন্ত যারা কুরআন বিষয়ে কলম ধরেছেন তারা সাধারণত কুরআনের উল্লেখিত বিষয়গুলোকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। আবার তাদের ভাষাও তুলনামূলক গম্ভীর গবেষণামূলক। সাধারণ পাঠকের জন্য এটি মোটেও উপযোগী নয়। ফলে কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পরিবর্তে দিন দিন তৈরি হয়েছে বিশাল দূরত্ব। এবং কুরআনের প্রতি ভক্তির পরিবর্তে অনেকের মনে তৈরি হয়েছে ভয়। এসব কারণে কুরআনকে মানুষ এখন তেলাওয়াতের পরিবর্তে তাবিজ-কবচ ও ঝাড়-ফুঁকের মন্ত্র বানিয়েছে। অনেকে তো কুরআনকে আবার ফ্যাশনের বস্তু বানিয়েছে। অনৈসলামিক সভা-সমাবেশ এবং বিনোদনের নামে অপসংস্কৃতির রঙিন মঞ্চে অযোগ্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে কুরআন তেলাওয়াত করিয়ে পবিত্র এই মহা গ্রন্থের সঙ্গে অশ্রদ্ধা প্রকাশ করা হচ্ছে অহরহ। অথচ এই কুরআন হলো মুসলিম জাতির হৃদয়ের স্পন্দন। মুসলমানদেন সকল ভক্তি-ভালোবাসা এবং আবেগ ও অনুভূতির প্রধান কেন্দ্র এই কুরআন। সুতরাং তীব্র প্রয়োজন ছিলো এমন একটি বইয়ের এবং এমন একটি রচনার, যা আমাদের শক্ত ও অনুর্বর হৃদয়ে এবং অন্ধকার ও ধূলিমলিন অন্তরে কুরআনের প্রতি গভীর আবেগ ও ভালোবাসা তৈরি করবে। ফেসবুক-টুইটার, টিকটক ও লাইকির মতো অভিশপ্ত থাবা থেকে আমাদের যুবসমাজকে রক্ষা করে কুরআনের সুশীতল ছায়ায় এনে আশ্রয় দিবে। আমরা আনন্দিত, আমরা পুলকিত। আমাদের প্রতিক্ষিত সেই বইয়ের দেখা আমরা পেয়েছি। আর তা হলো ‘আই লাভ কুরআন’। লেখক শায়েখ মুহাম্মাদ আতিক উল্লাহ যেমন একজন যোগ্য আলেম, ঠিক তেমন তিনি একজন বাংলাভাষার প্রতিষ্ঠিত লেখক ও সাহিত্যিক। তার লেখা কুরআনিয়্যাত সিরিজের এটি প্রথম বই। পৃষ্ঠাসংখ্যা ৪০০। সিরিজের দ্বিতীয় বইটি হলো ‘সুইটহার্ট কুরআন’। এর পৃষ্ঠাসংখ্যা ৭২০। লেখক যেভাবে পরিকল্পনা সাজিয়েছেন তা বইয়ের বুকে তুলে আনতে গেলে কুরআনিয়্যাত সিরিজের ব্যাপ্তিটা দশ খণ্ড পর্যন্ত যেতে পারে। এমনকি আরও বাড়তে পারে। তবে পাঠকদের অবশ্যই এটা মাথায় রাখতে হবে যে, সিরিজগুলো কোনো তাফসীর গ্রন্থ নয়। এই সংকলনের প্রথম ও প্রধান উদ্দেশ্য হলো, আমাদের মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং এক কথায় আপামর মুসলিম জনসাধারণকে কুরআন কারীমের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া। কুরআন ও তাদের মাঝে ভালোবাসার মজবুত একটি সেতুবন্ধন তৈরি করা। আর লেখক এ ক্ষেত্রে যেমন দায়িত্ববোধ ও মমত্ববোধের অসাধারণ পরিচয় দিয়েছেন, ঠিক তেমনি তিনি তার চেষ্টা ও সাধনায় পরিপূণ সফলও হয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস, কুরআনিয়্যাতের পরবর্তী সিরিজগুলোও পাঠকমহলে একই রকম সারা জাগাবে। চরশো পৃষ্ঠার দীর্ঘ বইটির প্রথম ত্রিশ পৃষ্ঠা হলো বইয়ের ভূমিকা। লেখক ভূমিকা শুরু করেছেন এমন একটি আবেগঘন ঘটনার মাধ্যমে, যা পাঠকের হৃদয়ে অবশ্যই কুরআনের প্রতি ভালোবাসার তীব্র এক আকর্ষণ তৈরি করবে। সাথে সাথে কুরআনের প্রতি নিজেদের দূরত্ব ও অন্যায় আচরণের অনুশোচনাও মনে জাগ্রত হবে। লেখক যেন এর মাধ্যমে পাঠককে বইটি পড়ার জন্য শুরুতেই মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নিয়েছেন। এরপর দরদী লেখক যেন তার অনুশোচনাদগ্ধ পাঠকদের নিয়ে একসঙ্গে ঝাপিয়ে পড়েছেন কুরআনের প্রেমে আল্লাহর পবিত্র বাণীর ভালোবাসার অথৈ সমুদ্রে। এরপর চোখের সামনে বেশে উঠবে একে একে কুরআনের সঙ্গে রাসূল সা. এর গভীর মুহাব্বতের চিত্র। আশআরী সাহাবীদের রাত্রিবেলায় কুরআনের তেলাওয়াতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। কেমন উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা এবং আবেগ ও ভালোবাসা নিয়ে পূর্ববর্তীরা কুরআন তেলাওয়াত করেছেন তাও অনুভূত হবে তীব্রভাবে। কুরআন কারীম এক অফুরন্ত শক্তির আধার, কুরআন কারীমের তেলাওয়াতে, শ্রবণে ও তাদাব্বুরে হৃদয়-মনে কী অকল্পনীয় শক্তি অর্জিত হয় পাঠক তা বুঝতে পারবেন। এরপর ভূমিকার শেষে লেখক একটি আয়াতের মাধ্যমে খুব সূক্ষ্মভাবে পাঠককে সর্তক করার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, “আয়াতে যদিও সম্প্রদায় বলে কাফেরদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, তবুও কুরআন কারীমকে অবহেলা করলে, মুমিন বান্দাও কেয়ামতের দিন ফেঁসে যাওয়ার আশংকা থেকে যায়”। ভূমিকার পর লেখক পুরো বইটি সাজিয়েছেন প্রধান আটটি অংশ ও শিরোনামের মাধ্যমে : প্রথম অংশ : হিযবী মিনাল কুরআন। দ্বিতীয় অংশ : আই লাভ ইউ, সুইট হার্ট! তৃতীয় অংশ : কুরআনী প্রজন্ম! চতুর্থ অংশ : জীবনের প্রয়োজনে কুরআন। পঞ্চম অংশ : আয়াতমাখা গল্প। ষষ্ঠ অংশ : মাদরাসাতুল আম্বিয়া। সপ্তম অংশ : কুরআনি ভাবনা। অষ্টম অংশ : মাদরাসাতুল কুরআন। পরিশেষে বলতে চাই, আরবি ভাষার কুরআনও যে আমাদের বাংলাভাষায় সাহিত্য চর্চার গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যম হতে পারে লেখকের আগে বোধ করি কেউ এটি আমাদের সামনে পেশ করতে পারেননি। যদিও এটি লেখকের মূল উদ্দেশ্য নয়। তাঁর প্রধান উদ্দেশ্যই হলো কুরআনের তাদাব্বুরের সঙ্গে পাঠকদের পরিচয় করানো। আর সেই তাদাব্বুর হৃদয়-মনে প্রোথিত করার জন্য লেখক হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপনা বেছে নিয়েছেন। এই বইয়ের গতিময়, প্রাণময় ও আবেগময় ভাষা ও উপস্থাপনায় পাঠকের মন আলোড়িত হয় ঠিকই কিন্তু বল্গাহারা হয় না। কোনো অপ্রীতিকর সাম্প্রদায়িকতাও এখানে পাঠকের মনকে কলুষিত করে না। বরং বাস্তব ও সত্য ঘটনা বর্ণনা করার মাধ্যমে এ বইয়ের উদ্দেশ্য ও আবেদনকে অত্যন্ত বর্ণিল ভংগীতে চমৎকার উপস্থাপনায় ও অত্যন্ত হৃদয়-নন্দিত করে পাঠকের আবেগ অনুভূতির সামনে পরিবেশন করা হয়েছে। তাই কোনো চাপাচাপি ছাড়াই, অথচ লেখকের ইচ্ছে মতো পাঠককে সিদ্ধান্ত নিতে একটুও বেগ পেতে হয় না। এমনকি বইটি পড়ে শেষ করার আগেই পাঠকের মনে কুরআনের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও ভক্তি তৈরি হতে বাধ্য। এটাও বইটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আল্লাহ যেন লেখক মহোদয়ের এই চেষ্টা ও সাধনা কবুল করেন এবং কুরআনিয়্যাতের এই খেদমত অব্যাহত রাখেন! আমীন!!!
Habibullah Habib @ August 20, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ কোরআন। এ এক মহান প্রভুর ঐশী বাণী। এ কোরআন নিয়ে কৌতুহলী মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। ভাবুকময় মানুষের ভাবনার শেষ নেই। অন্ত নেই চিন্তা-চেতনারও। কি নেই এই ঐশীগ্রন্থ আল কোরআনে!? সবই আছে। আছে মানব জীবনের পূর্ণ জীবন-বিধান। আছে ইতিহাসের ধূসর স্মৃতি। আছে আম্বিয়া কেরামের আলোকময় জীবনী। আরো কত কি!! জীবনের প্রতিটি পদে পা ফেলতে প্রয়োজন সতর্কতার। দিকনির্দেশনার। সতর্ককতার পরশ বুলাতে,দিকনির্দেশনার বাণী শুনাতে কোরআনের বিকল্প নেই। কোরআনের কোন জুড়ি নেই। সে নিজের তুলনায় নিজেই। তবে আমরা গভীর ভাবে কোরআনের সুন্দরতম বাণীগুলো অনুধাবন করতে পারি না। কোরআনের আবেগময় আত্ম-কথা শুনতে পাই না। কোরআনের ভাবনাময় মর্মকথা বুঝতে পারি না। এই অজুহাতে আমরা কোরআন পাঠে আত্মিক প্রশান্তি লাভ করতে পারি না। এ নিতান্তই কষ্ট দায়ক। সেই নিতান্ত কষ্টকে উপড়ে ফলবে এই 'আই লাভ কোরআন' নামই মনোমুগ্ধকর,চমকপ্রদ বইখানি। এ বইটির সান্নিধ্যে থেকে কোরআন পাঠে পাবেন আত্মিক প্রশান্তি। তাহলে আসুন এখনই সকলে প্রশান্তির শান্ত দরিয়ায় ঝাপ দেই! ••••বইয়ের নামে কিছু কথা•••• ❝আই লাভ কোরআন❞ নাম থেকেই প্রতীয়মান হয় বইটির গুরুত্ব। আমরা যখন আবেগাপ্লুত হয়ে কাউকে ভালোবাসার কথা জানাতে যাই তখন 'আই লাভ ইউ' শব্দটি ব্যবহার করতেন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। অপরদিকে 'আমি তোমাকে ভালোবাসি' এরকম বিশদ ভাবে বলতে ইতস্তত বোধ হয়। এ দৃষ্টিকোণ থেকেই বোধহয় কোরআনকে ভালোবাসার কথা লেখক সাহেব অনুভূতি মিশিয়ে, আবেগাপ্লুত হয়ে ❝আই লাভ কোরআন❞ বলেছেন। আর এভাবে পরখ করলে এ নামের গভীরতা বোঝা যায়। এ নামের পিছনে হেতু দাঁড় করানো যায়। ••••বইটি নিয়ে কিছু কথা•••• সোনালী চাদরে আবৃত এ বইয়ের প্রচ্ছদ। দৃষ্টিনন্দন কালিতে আকাঁ এ বইয়ের আবেগময় নাম। এ বইটি আটটি পরিচ্ছেদে সাজানো। আটটি অধ্যায়ে গুছানো। প্রথম পরিচ্ছেদে আছে 'হিযবী মিনাল কোরআন'। দ্বিতীয়তে আছে 'আই লাভ ইউ সুইটহার্ট'। তৃতীয়তে আছে 'কোরআনী প্রজন্ম'। চতুর্থতে আছে 'জীবনের প্রয়োজনে কোরআন'। পঞ্চমে আছে 'মডারেট মুফাসসির'। ষষ্ঠতে আছে 'মাদ্রাসাতুল আম্বিয়া'। সপ্তমতে আছে 'মাসদার, মূলধাতু, নামকরণ, কুরআন সংরক্ষণের তরীকা, আয়াত পুনরাবৃত্তি করার উপকারিতা ইত্যাদি'। অষ্টমতে আছে ' মাদ্রাসাতুল কোরআন'। এরকম আটটি চমকপ্রদ পরিচ্ছেদ নিয়েই রচিত এ বই। যা অধ্যায়নে কোরআনের প্রতি সুপ্ত ভালোবাসাটা গভীর থেকে গভীর হবে। যা অধ্যায়ণে হৃদয়ের কন্দরে ভালোলাগার ঢেউ বয়ে যাবে। ইন শা আল্লাহ। ••••কেন পড়বো এ বই•••• আমি কোরআন তেলাওয়াতে সক্ষম এতটুকুই আমার উপর কর্তব্য নয়। কোরআনের গভীরে কি আছে সেটা আমাকে জানতে হবে। কোরআনের অংশগুলো ভালোবাসা দিয়ে পরখ করতে হবে। কোরআন থেকেই আমাদের নিতে হবে জীবন যাপনের পূর্ণ ব্যবস্থা। জীবন অতিবাহিতের প্রয়োজনীয়তা। এস—ব বুঝতে কিংবা জানতে আমরা হিমশিম খেয়ে যাই। স্বাভাবিক নিয়মে কোরআন পাঠে আমরা এ বিষয়বস্তু অতটা আচঁ করতে পারি না। তো এস—ব বিষয় জানতে কিংবা বুঝতে সহায়তা করবে এ বইখানি। এ বই পাঠে কোরআন তেলাওয়াতের অতুলনীয় স্বাদ আস্বাদন করতে পারবেন। ইন শা আল্লাহ। ••••ভালোলাগাগুলো•••• এ বইয়ের সবটা জুড়েই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভালো লাগা। এ পরিচ্ছেদ থেকে ও পরিচ্ছেদ সবটাই যেন হৃদয়ের খোরাক। এ বইটি হৃদয়ে জাগায় কোরআনের প্রতি প্রেমপ্রীতি ভালোবাসা। এ বইয়ের নিমিত্তে কোরআন হবে না ধূলিমলিন। হবে না অবহেলিত কিংবা আবেগহীন। এ বইয়ের দরুন কোরআন থাকবে সযত্নে, হৃদ মাঝারে। ইন শা আল্লাহ। ••••সমালোচনা•••• নেই। একদমই নেই। সমালোচনার খাতা শূন্য। সবচে' বড় কথা হলো ‘সব বইয়ের সমালোচনা হয় না’। ••••শেষ কথা•••• ❝নিশুতি রাতের শেষ প্রহরে, কোরআন পাঠে নিজেকে সঁপে দিতে, আবেগী চেতনার ঊর্মিমালায় হারিয়ে যেতে একবার হলেও পড়া উচিত এ বইটি❞ একনজরে...........! বইঃ আই লাভ কোরআন। লেখকঃ মোহাম্মদ আতীক উল্লাহ। পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৪০০ মুদ্রিত মূল্যঃ ৪০০৳ ~~~রিভিউঃ হবীবুল্লাহ হাবীব~~~
কাউছার সোহেল @ August 22, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ বই: আই লাভ কুরআন লেখক: মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ কুরআন কারীম কী? -কালামুল্লাহ (আল্লাহর কালাম) এতে শুধুই আছে মহান আল্লাহর কথা।আর এতোটুকুই বুঝাতে পারার জন্য যথেষ্ট। অসংখ্য তালাবদ্ধ হৃদয়কে অনায়াসে ভেঙে তাতে হেদায়েতের আলো জ্বেলে দিয়েছে এই কুরআন।তাদের অন্ধকারে আলোর মশাল জ্বালে এই কুরআন। আই লাভ কুরআন নামটা যেনো একদম যথাযথ হয়েছে। লাভ কিংবা ভালোবাসা আমরা তখনই প্রকাশ করি যখন তা আমাদের কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করে। আর কুরআন কারীম কারীম তো আমাদের ভালোবাসার মূলকেন্দ্র হওয়াই আবশ্যক। আবার বেশি ভালোবেসে শুধু শেলফে সাজিয়ে রাখার মতো বস্তু নয়। ইহা আমাদের প্রত্যেক দিনের মোলাকাতের বস্তু, যার সান্নিধ্যে থেকে আমরা ধন্য হই।আই লাভ কুরআন বইটিতে স্থান পেয়েছে আটটি অধ্যায় সহ একটি সুন্দর ভূমিকা রয়েছে। ভূমিকাতে কুরআন পাঠের প্রয়োজনীয়তা,কুরআনের প্রতি ভালোবাসা, সাথে কুরআন পড়ার জন্য মন চঞ্চল হয়ে ওঠা,কুরআনের প্রতি এক ভালবাসা ফুটে ওঠেছে। বইটি আটটি অধ্যায়ে সজ্জিত করা হয়েছে।নিচে আলাদা করে প্রত্যেকটি অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলো: হিযবী মিনাল কুরআন: যখন বইটি পড়া শুরু করি তখনো আমি কুরআন কারীম শুদ্ধভাবে পড়তে পারতাম না।কুরআনের প্রতি যেনো আমার ভালোবাসা জন্মে সেই ইচ্ছায় কিনেছিলাম। কিন্তু এই অধ্যায়টা পড়ার পর কুরআন শুদ্ধভাবে শিখতে পারার তো ইচ্ছা ছিলোই সাথে হিফয করার প্রচন্ড আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠে। কুরআনের প্রতি এক দূর্বলতা তৈরি হয় আলহামদুলিল্লাহ। আই লাভ ইউ,সুইট হার্ট!: এই অধ্যায় তো আপনাকে ভাবাতে বাধ্যই করবে যে কুরআনের সাথে আপনার সম্পর্কটা কেমন! কুরআনের জন্য এত আবেগ এত ভালোবাসা দিয়ে লেগে থাকা যায় তা আগে জানা ছিল না। কুরআনের প্রজন্ম: নামটা শুনলেই বুঝতে পারা যায় অধ্যায়ের আলোচনার বিষয়বস্তু।প্রত্যেক পিতা মাতা চায় যেনো তার সন্তান সুসন্তান হিসেবে গড়ে উঠুক। পিতা মাতা যদি সন্তানদের কুরআনের শিক্ষায় বড় করে তোলে, কুরআনের প্রেমী করে তোলে তাহলে আর অন্য কিছুরই প্রয়োজন হয় না। আপনার সন্তানদের কিভাবে কুরআন প্রমী বানাবেন তা নিয়েই মূলত এই অধ্যায়ের আলোচনা। জীবনের প্রয়োজনে কুরআন: নিজের জীবনকে কোন পথে চালিত করতে চান, নিজের চরিত্রকে কিভাবে কুরআনের আলোয় রাঙাতে চান সেই পথ এখানে দেখানো হয়েছে।বিভিন্ন বিচিত্র বর্ণনায় অধ্যায়টি সাজানো হয়েছে। আয়াতমাখা গল্প: গল্প! সাথে কুরআনের আয়াত! তাহলে চিন্তা করুন কী পরিমাণ শিক্ষনীয় বিষয় থাকতে পারে।সেই সাথে পেয়ে যাবেন চিন্তার খোরাক যা আপনাকে নেক আমলের দিকে ধাবিত করবে। মাদরাসাতুল আম্বিয়া: এই অধ্যায়টি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে।অধ্যায়টিতে বিভিন্ন আয়াতের সৌন্দর্য,আয়াতের মিল অমিল যেখানে নবীদের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে বিশেষ করে ইউসুফ আলাইহিস সালাম ও মূসা আলাইহিস সালামের কাহিনী।সাথে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং শেষের শেষের দিকে কুরআনী মনোচিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআনি ভাবনা: কুরআনের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে ৫০টি ছোট ছোট ভাবনা লেখক এই অধ্যায়ে জড়ো করেছেন।সাথে রয়েছে চিন্তার খোরাক যা আপনাকে কুরআনের প্রতি আগ্রহী করে তুলবে। মাদরাসাতুল কুরআন: এই অধ্যায় পড়ার পর আপনি লেখকের ইলম সম্পর্কে ধারণা পাবেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা যা তাকে দান করেছেন। জীবনের বিভিন্ন দিককে লেখক কুরআনের আয়াতের আলোকে তুলে ধরেছেন।যত পড়বেন ততই মুগ্ধ হবেন ইং শা আল্লাহ। পরিশেষে বলতে চাই, বইটি যখন পড়ছিলাম তখন অন্তরে এক প্রকার প্রশান্তি অনুভূত করছিলাম।আপনি যদি কুরআন কারীম পড়তে না পারেন তাহলে শিখার জন্য ব্যাকুল থাকবেন। যদি পড়তে পারেন তাহলে তেলাওয়াত করার জন্য উদগ্রীব থাকবেন।তারপর তাদাব্বুরের জন্য আগ্রহী হয়ে উঠবেন।তখন কুরআনের মজা দ্রুত উপলব্ধি করতে পারবেন।যখন আমার মনে হয় যে আমি কুরআন কারীম থেকে একটু দূরে সরে যাচ্ছি তখনই বইটা নিয়ে বসে পড়ি। বইটার ছোট ছোট কিছু লাইন আমি হাইলাইট করে রেখেছি। লাইনগুলো ছোট হতে পারে কিন্তু তা গভীর অর্থবহ যা আমাকে কুরআনের প্রতি ভালোবাসা বাড়িয়ে দেয়।বইটির লেখক কুরআনের পাখি মুহাম্মদ আতিক উল্লাহকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি,কেননা তিনি পাঠকের কাছে নতুন এক জগতের উন্মোচন করেছেন।বইটি পড়ার পর পাঠক কুরআনকে নতুন করে ভালোবাসতে শুরু করবে।আর আপনি কুরআনকে ভালোবাসলে তা আপনার জন্য নির্ভরযোগ্য সুপারিশকারী ও শ্রেষ্ঠ সঙ্গী হিসেবে আবির্ভূত হবে। বইয়ের একটা লাইন দিয়ে শেষ করবো: "জীবন শুরু হোক কুরআন দিয়ে।শেষও হোক কুরআন দিয়ে।কুরআনে আছে ইলম।আলো।হেদায়েত।" কাউছার সোহেল
Saiful Islam @ August 26, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২. ✅বুক রিভিউ✅ বই: আই লাভ কুরআন । লেখক: মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ হাফিযাহুল্লাহ। ক্যাটাগরি: ইসলাম সাহিত্য , গল্প-উপন্যাস , সফরনামা এবং কুরআন বিষয়ক আলোচনা। প্রকাশনায়: মাকতাবাতুল আযহার। পৃষ্ঠা সংখ্যা:৪০০. মুদ্রিত মূল্য:৩০০টাকা। রিভিউ লিখেছেন: মোঃসাইফুল ইসলাম। 📝লেখক পরিচিতি 📝 নাম: মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ। কুরআনুল কারীম, সিরাত ও ইতিহাস বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষক: মাদরাসাতুল কুরআনুল কারীম শ্যামলী, ঢাকা। লেখক সম্পর্কে কিছু বলার মত যোগ্যতা আমার নেই এবং কিছু উপস্থাপন করার মত উপযুক্ত শব্দও আমার জানা নেই । এতটুকুই বলি কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার যুগ আমি পাইনি,পাইনি কুরআন অবতীর্ণ হওয়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে, এমনকি কুরআনের ধারক বাহক ও কুরআনকে সবচেয়ে কাছ থেকে অনুধাবনকারী জামাআ'ত তথা সাহাবায়ে কেরামদেরকেও আমি পাইনি। কিন্তু নবীর উত্তরসূরী এমন এক ব্যক্তিত্বকে পেয়েছি যার হাঁটা-চলা, ওঠা-বসা, কথাবার্তা, চিন্তা- চেতনা, ভাবনা- কল্পনা,সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না,আশা, আবেগ সবটুকুই হলো এই কুরআনকে ঘিরে। যার ভেতরটা সব সময় ডুবে থাকে কুরআনী ভাবনায় , যার কল্পনায় সদা সর্বদা ভাসতে থাকে কুরআনের পবিত্র আয়াতগুলো, যার ঠোঁট হর হামেশা সতেজ থাকে কুরআনের গুঞ্জনধ্বনি দ্বারা। তার সমস্ত চিন্তা-চেতনা,আশা-আকাঙ্ক্ষা আর আবেগের বহিঃপ্রকাশই হল কুরআনিয়্যাত সিরিজের প্রথম বই "আই লাভ কুরআন"। যা প্রকাশিত হয় আমাদের সুপরিচিত ও স্বনামধন্য প্রকাশনা "মাকতাবাতুল আযহার" থেকে। যারা ভালো মানের লেখা সংবলিত উন্নত মানের বই প্রকাশে সর্বদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ । এই সমস্ত বইগুলো প্রকাশ করে পাঠককে পড়ার সুযোগ করে দেওয়ায় আমরা মাকতাবাতুল আযহার এর প্রতি চির কৃতজ্ঞ । 📗গ্রন্থ পরিচিতি📗 বইয়ের নামেই রয়েছে এমন এক আকর্ষণ যা পাঠককে কুরআনের ভালোবাসার প্রতি আকৃষ্ট করে। যা ছিল লেখকের একটা উদ্দেশ্য। আলহামদুলিল্লাহ! লেখক তার উদ্দেশ্যে সফল হয়েছেন।কারণ,বাস্তবেই এই বইয়ের নাম থেকে শুরু করে একেবারে শেষ লাইন পর্যন্ত প্রতিটি শব্দ পাঠককে কুরআনের ভালোবাসায় ডুবিয়ে রাখে তাই বইয়ের নাম "আই লাভ কুরআন" দেওয়া যথাযথ হয়েছে। বইয়ের শুরুতেই লেখক দীর্ঘ ত্রিশ পৃষ্ঠার এমন একটি ভূমিকা অবতারণা করেছেন, যে ভূমিকার জাদুময় শব্দসমূহ, হৃদয় ছোঁয়া গল্প এবং চমৎকার উপস্থাপনা গুলো পাঠককে কুরআনের একেবারে কাছাকাছি নিয়ে যাবে। যে ভূমিকার মাধ্যমে নিজের অজান্তেই কুরআন পাঠকের মনে জায়গা করে নেবে । এমনকি কুরআনের প্রতি তার আকর্ষণ এতই বেড়ে যাবে যে মনের মধ্যে সব সময় একটা অস্থিরতা কাজ করবে। কখন সে কুরআন নিয়ে বসবে , কখন সে একটুখানি তেলাওয়াত করবে, কখন সে কোরআনের তাদাব্বুরে ডুব দিবে তার মন সর্বদা ব্যাকুল থাকবে ‌। এরপর লেখক তাঁর সুনিপুণ লিখনির মাধ্যমে আটটি চমৎকার শিরোনামে বইটি সাজিয়েছেন এবং এর মাধ্যমেই বইয়ের ইতি টেনেছেন। নিম্নে শিরোনাম গুলোর সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলো :- ১|হিজবী মিনাল কুরআন: এখানে লেখক দৈনিক কোরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন এবং বিভিন্ন গল্প কাহিনী এনে দৈনন্দিন নির্দিষ্ট পরিমাণ কোরআন তেলাওয়াতের প্রতি আগ্রহ উদ্দীপনা সৃষ্টি করার পাশাপাশি উৎসাহ প্রদান করেছেন। যার মাধ্যমে পাঠক খুব সহজেই দৈনিক কুরআন পাঠের প্রতি সচেষ্ট হয়ে উঠবে। ২|আই লাভ ইউ , সুইটহার্ট: এই শিরোনামের আলোচনার মাধ্যমে পাঠক নতুন করে কুরআন কে ভালবাসতে শুরু করবে। মনের অজান্তেই হারিয়ে যাবেন কুরআনের ভালোবাসায়। ৩|কুরআনের প্রজন্ম: আমরা আমাদের সন্তানদেরকে কিভাবে কুরআনের প্রতি আগ্রহী করে তুলবো, কিভাবে তাদেরকে কুরআনী শিক্ষায় শিক্ষিত করব,কিভাবে কুরআন অনুযায়ী তাদের জীবন গড়ে তুলতে পারবো তার পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। ৪|জীবনের প্রয়োজনে কুরআন: যদি আমরা আমাদের জীবনে কুরআনের বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে চাই, যদি আমরা আমাদের জীবনকে কুরআনের রঙে রাঙাতে, চাই যদি আমরা আমাদের প্রয়োজনগুলো কোরআনের মাধ্যমে সমাধান করতে চাই, তাহলে আমাদের জন্য এই অধ্যায়টি পড়া খুবই জরুরী। ৫|আয়াতমাথা গল্প : লেখক এই অধ্যায়ে কুরআনের বিভিন্ন আয়াতের আঙ্গিকে বৈচিত্র্যময় গল্পের অবতারণা করেছেন। যেগুলো পাঠককে নিয়ে যাবে চিন্তার সাগরে। যার মাধ্যমে পাঠক পাবে আমলের খোরাক। ৬| মাদরাসাতুল আম্বিয়া: কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে কতিপয় নবী আলাইহিস সালাম-দের জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশেষ করে হযরত ইউসুফ (আ:) ও হযরত মুসা (আ:) এর। তাদের জীবনের এই সমস্ত খন্ড কাহিনীর মাঝেও রয়েছে আমাদের জন্য অনেক শিক্ষা। ৭|কুরআনী ভাবনা: এখানে লেখক কুরআনের প্রতি তার সম্পূর্ণ আবেগ আর ভালোবাসা দিয়ে ৫০ টি ছোট ছোট ভাবনা তুলে ধরেছেন । যেগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারব আমরা কুরআন থেকে কতটা দূরে আছি।পাশাপাশি লেখকের চমৎকার উপস্থাপনা মনের মধ্যে সৃষ্টি করবে কুরআনের প্রতি অধীর আগ্রহ। ৮|মাদরাসাতুল কুরআন: বইয়ের বিশাল একটা অংশ জুড়ে রয়েছে এই অধ্যায়টি। এখানে বিভিন্ন আয়াতের ব্যাখ্যা, শিক্ষনীয় কাহিনী এবং আয়াতের আলোকে জীবনের বিভিন্ন দিক কে তুলে ধরা হয়েছে। 📘অভিব্যক্তি📘 কুরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী গ্রন্থ। যার মর্যাদা সর্বজনবিদিত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে এই কুরআন আমাদের মাঝে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। তার যথাযথ মর্যাদা দিতে আমরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তেলাওয়াত তাদাব্বুর ও প্রচার-প্রসার সহ কোরআনের সকল হক আদায়ের ক্ষেত্রে আজ আমরা সম্পূর্ণ উদাসীন। তাই আমাদের সকল ব্যর্থতা আর উদাসীনতা দূর করতে প্রয়োজন ছিল এমন একটি রিমাইন্ডারের যা আমাদেরকে আবার নতুন করে কুরআনকে ভালোবাসতে শিখাবে, যা আমাদেরকে ডুব দেওয়াবে কুরআনের তাদাব্বুরে এবং যা আমাদেরকে কুরআনের পরিপূর্ণ স্বাদ আস্বাদন করাবে। আলহামদুলিল্লাহ! ঠিক সেই প্রয়োজন পূরণার্থের একটি ক্ষুদ্র প্রয়াসই হলো শায়েখ আতিকুল্লাহ সাহেবের "আই লাভ কুরআন" বইটি। মোটকথা এই বইটি পড়ার পর অনেকেই কুরআন হিফয করার প্রতি অধীর আগ্রহী হয়ে উঠবে, তেলাওয়াতের প্রতি যত্নবান হবে এবং সব সময় কুরআনী ভাবনায় ডুবে থাকবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন লেখকের খেদমতকে কবুল করুন। আর আমাদেরকে কুরআন ভালোবেসে তা আঁকড়ে ধরে রাখার তৌফিক দেন। আমিন। ________________________ প্রাপ্তি স্থান: মাকতাবাতুল আযহার, দোকান নং ১, আন্ডারগ্রাউন্ড, ইসলামী টাওয়ার বাংলাবাজার,ঢাকা। ফেসবুক পেইজ: @Maktabatul Azhar(মাকতাবাতুল আযহার) অনলাইন প্রাপ্তি স্থান: www.maktabatulazhar.com রেটিং: ৯.৯/১০ লেখকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট: Atik Ullah . Maktabatul Azhar মাকতাবাতুল আযহার .
নুর মোহাম্মদ আলী @ August 28, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ 📖 " এর মধ্যে অবশ্যই উপদেশ রয়েছে এমন লোকের জন্য, যার (অনুধাবন করার মত) অন্তর আছে অথবা যে মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করে"। (সূরা ক্বা-ফ :৩৭) প্রতিটি মুমিনই কুরআন কারীমকে ভালোবাসে। সবাই হয়তো ভালোবাসাটা প্রকাশ করতে পারে না বা প্রকাশ করার উপলক্ষ্য খুঁজে পায় না। কেউ কেউ আবার ভেতরের সুপ্ত থাকা ভালোবাসাটা টের পায় না। বইটা পড়লে আমার বিশ্বাস, তারা ভালোবাসাটা নতুন করে অনুভব করবেন। বইটাতে কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন আয়াত থেকে জীবনঘনিষ্ঠ কিছু শিক্ষা তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে শুধুই আছে মহান আল্লাহর কথা। অসংখ্য তালাবদ্ধ হৃদয়কে অনায়াসে ভেঙে তাতে হেদায়েতের আলো জ্বেলে দিতে সক্ষম এই কুরআন । এই প্রতিযোগিতার যুগে সবারই একটা ভালোবাসার বস্তু থাকে। কেউ ছুটে টাকার পিছনে, কেউ বা সম্পদের পিছনে, কেউ নারীর পেছনে,কেউ তার সময়টাকে কুরআনুল কারিমের পেছনে ব্যায় করে । এটা সম্পূ্র্ণ নির্ভর করে একজন মানুষের মন-মানসিকতার উপর। পবিত্র কুরআন নিয়ে এপর্যন্ত ছোট বড় যেই পরিমাণ গবেষণা হয়েছে, প্রবন্ধ/রচনা রচিত হয়েছে, পৃথিবীর অন্যকোনো ধর্মীয় গ্রন্থ নিয়ে এর অর্ধেক পরিমাণ লেখনী বা গবেষণা হয়নি। পবিত্র কুরআন গবেষণা করে প্রতিনিয়ত বিজ্ঞানীরা এর সত্যতা স্বীকার করে নিচ্ছে। আর নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, কেয়ামত পর্যন্ত এটা অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে। কুরআনুল কারীমের অবিশ্বাস্য এক শক্তি আছে। সরল দৃষ্টিতে যা দেখা যায় না। কাছে এলে অনুভব করা যায়, উপলব্ধি করা যায়। এই কুরআন কি শুধু মানুষকে গলিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে? জ্বি না। আল্লাহ তায়ালা বলেন কুরআন কারীমের প্রভাবে পাথর পর্যন্ত বিদীর্ণ হয়ে যেত। কুরআনুল কারীমের মধ্যে রাব্বে কারীম এমন শক্তি দিয়ে দিয়েছেন, যা মক্কার কট্টর মুশরিকরাও বুঝতে পেরেছিল। এমন শক্তির মুখোমুখি হতে তারা ভয় পেত। 📝 বইয়ের ভূমিকাও যে এত আকর্ষণীয় করে তোলা যায় বইটি অধ্যায়ন না করলে জানা হতো না । ভূমিকা পড়ে কুরআনের প্রতি যে ভালোলাগা তৈরি হয়েছে তা অবর্ণনীয়। যেকোনো পাঠকের হৃদয়ে কোরআনের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য এর ভূমিকাই যথেষ্ট মনে হয়েছে। পড়ার সময় বারবার মন ব্যাকুল হয়ে উঠেছে কুরআনুল কারিম তেলাওয়াতের জন্য,একটু তেলাওয়াত শোনার জন্য । চারশত পৃষ্ঠার দীর্ঘ বইটির প্রথম ত্রিশ পৃষ্ঠাই হলো বইয়ের ভূমিকা। লেখক ভূমিকা শুরু করেছেন এমন একটি আবেগঘন ঘটনার মাধ্যমে, যা পাঠকের হৃদয়ে অবশ্যই কুরআনের প্রতি ভালোবাসার তীব্র এক আকর্ষণ তৈরি করবে। লেখক যেন এর মাধ্যমে পাঠককে বইটি পড়ার জন্য শুরুতেই মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নিয়েছেন। চোখের সামনে ভেসে উঠবে একে একে কুরআনের সঙ্গে রাসূল সাঃ এর গভীর মুহাব্বতের চিত্র। আশ'আরী সাহাবীদের রাত্রিবেলায় কুরআন তেলাওয়াতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। কুরআনের প্রতি সাহাবিদের যে আবেগ ও ভালোবাসা তা অনুভূত হবে তীব্রভাবে। কুরআন কারীম এক অফুরন্ত শক্তির আধার। কুরআন কারীমের শুধু তেলাওয়াতে নয়, ইহা শ্রবণেও হৃদয়-মনে যে এক ধরনের শক্তি অর্জিত হয় পাঠক তা বুঝতে পারবে।কুরআন কারীম পাথর দিলকে গলিয়ে মোম করে দেয়। কোরআনের তেলাওয়াত শুনে সাহাবিরা শুধু কাঁদতেন না, কান্নায় ভেঙে পড়তেন। তাদের কান্নার এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য মুশরিক নারী শিশুদের চুম্বুকের ন্যায় আকর্ষণ করত। কুরআন তেলাওয়াতের সুর শোনার জন্য সমাজপ্রভুদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তারা পতঙ্গের মত সম্মোহিত হয়ে ছুটে আসত। ভূমিকার শেষে লেখক খুব সূক্ষ্মভাবে পাঠককে সর্তক করার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, "কুরআন কারীমকে অবহেলা করলে, মুমিন বান্দাও কেয়ামতের দিন ফেঁসে যাওয়ার আশংকা থেকে যায়”। রাব্বে কারীম কুরআনুল কারীমকে আমাদের হৃদয়ের বসন্ত বানিয়ে দিন। আল্লাহর যমীনে কুরআন কারীমের বিধান বাস্তবায়নের মেহনতে শামিল হওয়ার তাওফিক দান করুন। 📖 বইটির বিষয়বস্তুঃ 'আই লাভ কুরআন ' বইটিতে মোট আটটি অধ্যায় আছে। নিচে প্রত্যেকটি অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলোঃ- 📝প্রথম অংশ : হিযবী মিনাল কুরআন। প্রতিদিন পড়ার বা তেলাওয়াতের জন্য যা নির্ধারণ করা হয় সেটাকে হিযব বলা হয়। কুরআনুল কারীম কি, ব্যক্তি বিশেষ হিযবি মিনাল কুরআনের পার্থক্য কি, প্রিয় নবীজি (সাঃ) এর কি নির্দিষ্ট হিযব ছিলো এবং তিনি সেটা নিয়মিত আদায় করতেন তা পাঠক জানতে পারবে। এই অধ্যায়ের পুরো বিষয়টাকে লেখক ছোট ছোট অংশে মুক্তার দানায় মালা গাঁথার মতো করে সাজিয়েছেন। পাঠক এতে দৈনিক কুরআন তেলাওয়াতের পরিমাণ নির্ধারণে সুস্পষ্ট একটি দিকনির্দেশনা পেয়ে যাবেন। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকে, তাদের জন্য চিন্তার খোরাক রয়েছে এই অধ্যায়টিতে। 📝 দ্বিতীয় অংশ : আই লাভ ইউ, সুইট হার্ট! এই অধ্যায় আপনাকে ভাবাতে বাধ্য করবে যে কুরআনের সাথে আপনার সম্পর্কটা কেমন! আপনি কি কুরআনুল কারিমকে ভালোবাসেন? যদি এর উত্তর হয় ‘হাঁ’, তাহলে ভালোবাসার দাবি হলো কুরআনের সঙ্গে শখ্যতা ও অন্তরঙ্গতা তৈরি করা। বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে তার কোমলতা ও স্নিগ্ধতা অনুভব করা। লেখক এই অংশে ধারাবহিকভাবে সেই সকল কুরআন প্রেমিকের ঘটনা উল্লেখ করেছেন যারা কুরআনকে ভালোবাসতো গভীরভাবে। ফলে কুরআনও তাদেরকে আপন করে নিয়েছিলো গভীরভাবে। এই অধ্যায়টি পড়ার পর আপনি ভাবতে বাধ্য হবেন কুরআনের সাথে আপনার সম্পর্ক এমন তো? কুরআন কি এতটাই আপন আপনার কাছে? 📝 তৃতীয় অংশ : কুরআনী প্রজন্ম! নামটা শুনলেই বুঝতে পারা যায় অধ্যায়ের আলোচনার বিষয়বস্তু। প্রত্যেক অভিভাবক চায় যেনো তার সন্তান সুসন্তান হিসেবে গড়ে উঠে। পরবর্তী প্রজন্মকে কীভাবে কুরআনমুখী করা যায়, কুরআনের প্রতি কীভাবে তাদেরকে আগ্রহী করে তোলা যায়, তার জন্য লেখক অভিভাকদের উদ্দেশ্যে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন। সেগুলো বাস্তবায়ন হলে অবশ্যই আমাদের শিশুরা কুরআনকে ভালোবাসতে শিখবে। আপনার সন্তানদের কিভাবে কুরআন প্রমী বানাবেন তা নিয়েই এই অধ্যায়ের আলোচনা। মূলত এ অধ্যায়টি অভিভাবকদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। 📝 চতুর্থ অধ্যায়ঃ—'জীবনের প্রয়োজনে কুরআন ' বর্তমান সময়ে মানুষের মানসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন মত ও অবস্থা নিয়ে ৩১ টি শিরোনামে অধ্যায়টিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। লেখক অলোচনা শুরু করেছেন এভাবে- কুরআন কারীম কেন নাযিল করা হয়েছে? মানুষের হিদায়াতের জন্য। হিদায়াত লাভের জন্য কি কুরআন কারীম বুঝতে পারা পূর্বশর্ত? সব মানুষই কি কুরআন কারীম সমানভাবে বুঝে? মেধা, ভাষাজ্ঞান, গভীর চিন্তাশক্তি ও সূক্ষ্ম বুঝশক্তি থাকলেই কি কেউ কুরআন কারীম বুঝতে পারে? নাকি এসবের পাশাপাশি ঈমানের গভীরতাও লাগে? নিজের জীবনকে কোন পথে চালিত করতে চান, নিজের চরিত্রকে কিভাবে কুরআনের আলোয় রাঙাতে চান সেই পথ এখানে দেখানো হয়েছে। 📝 পঞ্চম অধ্যায়ঃ—'আয়াতমাখা গল্প' এ অধ্যায় জুড়ে আছে কুরআনের আয়াত সম্বলিত ছোট গল্প যা যত না ছোট তারচেয়ে ব্যাপক অর্থবহ। সেই সাথে পেয়ে যাবেন চিন্তার খোরাক যা আপনাকে নেক আমলের দিকে ধাবিত করবে। পাঠক বুঝতে পারবেন, কুরআন কীভাবে মানুষের জীবনে পরিবর্তন সাধন করে, পাঠকের চোখের ক্যানভাসে ভেসে উঠবে এমন সব মানুষের চিত্র যারা কুরআনকে ভালোবেসে এবং কুরআনের সান্নিধ্যে এসে জীবনে সফলতা পেয়েছেন। 📝 ষষ্ঠ অংশ : মাদরাসাতুল আম্বিয়া। কুরআনের আলোকে নবীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট সহ বিভিন্নদিক এ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়টি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। লেখক এই অধ্যায়টি শুরু করেছেন অত্যান্ত আকর্ষণীয় একটি বিষয় " হযরত ইউসুফ আ. ও হযরত মুসা আ." এর মধ্যে বিভিন্ন মিল ও অমিল দিয়ে।পুরো অধ্যায়টি কুরআন থেকে সংগৃহীত নবীগণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও অসংখ্য আকর্ষণীয় ঘটনায় ভরপুর। 📝 সপ্তম অংশ : কুরআনি ভাবনা। এ অধ্যায়ে ছোট ছোট গল্পাচ্ছলে বলা ভাবনাগুলো পাঠককে নিয়ে যাবে কুরআনি ভাবনায়। কুরআনের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে ৫০ টি ছোট ছোট ভাবনা লেখক এই অধ্যায়ে জড়ো করেছেন, সাথে রয়েছে চিন্তার খোরাক যা আপনাকে কুরআনের প্রতি আগ্রহী করে তুলবে। কুরআর কারিমে গল্প খুঁজলে গল্প পাওয়া যায়। ইতিহাস খোঁজ করলে ইতিহাস পাওয়া যায়, উপদেশ চাইলে উপদেশ পাওয়া যায়, দুনিয়া চাইলে দুনিয়া পাওয়া যায়, আখিরাত চাইলে আখিরাত পাওয়া যায়”। তাই ভাবনাগুলো কুরআনের প্রতি ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ করতে পাঠক হৃদয়ে অনুপ্রেরণা যোগাবে। 📝 অষ্টম অংশ : মাদরাসাতুল কুরআন। এ অধ্যায়টির কোনো তুলনা হয় না। এটি বইয়ের সর্বশেষ অধ্যায় এবং অন্যান্য অধ্যায়ের চেয়ে এটি বেশ দীর্ঘ। লেখক এতে বেশকিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। শুধু কুরআন তিলাওয়াত করলেই হবে না বরং কুরআনের হক সঠিকভাবে আদায় করতে হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা কি বলেছেন তা জানতে হলে অবশ্যই আমাদের কুরআনের ভাষা আরবি জানতে হবে। দরদি লেখক এই অধ্যায়ের শুরুতে সংক্ষিপ্তভাবে কুরআনের ভাষা শিক্ষার একটি কার্যকরী সিলেবাস পাঠকের সামনে পেশ করেছেন। কীভাবে ভাষা শিক্ষাটা শুরু হবে, এবং এ ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে তা তিনি দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। জীবনের বিভিন্ন দিককে লেখক কুরআনের আয়াতের আলোকে তুলে ধরেছেন এ অধ্যায়ে। যত পড়বেন ততই মুগ্ধ হবেন ইং শা আল্লাহ। 📖 বইটি কাদের পড়া উচিত❓ সকল প্রাকটিসিং মুসলিম ভাই-বোনদের উচিত "আই লাভ কুরআন" বইটি পড়া ও তা নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করা। মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব ও আত্নীয়দের মাঝে বইটি হাদিয়া দিন । বিশেষ করে যারা জেনারেল লাইনে পড়াশোনা করেছেন কুরআনের ভাষা আরবি সঠিকভাবে বুঝতে পারেন না তাদের জন্য বইটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, তাদেরকে উদ্ভুদ্ধ করবে কুরআনের কাছাকাছি আসার কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করার। আমরা যতটুকু সৌভাগ্য কামনা করি ঠিক সেই পরিমান কুরআন আমাদের প্রতিদিন তেলাওয়াত করা উচিত! তাই কুরআনের সঠিক মর্মার্থ বোঝার জন্য কুরআনের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য ছোট-বড় সকল দ্বীনে প্রত্যার্তন করা ভাই- বোনদের বইটি পড়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। 📜 বইটি পড়ে আমা
নুর মোহাম্মদ আলী @ August 28, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ রিভিউ লেখকঃ নুর মোহাম্মদ আলী 📖" এর মধ্যে অবশ্যই উপদেশ রয়েছে এমন লোকের জন্য, যার (অনুধাবন করার মত) অন্তর আছে অথবা যে মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করে"। (সূরা ক্বা-ফ :৩৭) প্রতিটি মুমিনই কুরআন কারীমকে ভালোবাসে। সবাই হয়তো ভালোবাসাটা প্রকাশ করতে পারে না বা প্রকাশ করার উপলক্ষ্য খুঁজে পায় না। কেউ কেউ আবার ভেতরের সুপ্ত থাকা ভালোবাসাটা টের পায় না। বইটা পড়লে আমার বিশ্বাস, তারা ভালোবাসাটা নতুন করে অনুভব করবেন। বইটাতে কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন আয়াত থেকে জীবনঘনিষ্ঠ কিছু শিক্ষা তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে শুধুই আছে মহান আল্লাহর কথা। অসংখ্য তালাবদ্ধ হৃদয়কে অনায়াসে ভেঙে তাতে হেদায়েতের আলো জ্বেলে দিতে সক্ষম এই কুরআন । এই প্রতিযোগিতার যুগে সবারই একটা ভালোবাসার বস্তু থাকে। কেউ ছুটে টাকার পিছনে, কেউ বা সম্পদের পিছনে, কেউ নারীর পেছনে,কেউ তার সময়টাকে কুরআনুল কারিমের পেছনে ব্যায় করে । এটা সম্পূ্র্ণ নির্ভর করে একজন মানুষের মন-মানসিকতার উপর। পবিত্র কুরআন নিয়ে এপর্যন্ত ছোট বড় যেই পরিমাণ গবেষণা হয়েছে, প্রবন্ধ/রচনা রচিত হয়েছে, পৃথিবীর অন্যকোনো ধর্মীয় গ্রন্থ নিয়ে এর অর্ধেক পরিমাণ লেখনী বা গবেষণা হয়নি। পবিত্র কুরআন গবেষণা করে প্রতিনিয়ত বিজ্ঞানীরা এর সত্যতা স্বীকার করে নিচ্ছে। আর নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, কেয়ামত পর্যন্ত এটা অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে। কুরআনুল কারীমের অবিশ্বাস্য এক শক্তি আছে। সরল দৃষ্টিতে যা দেখা যায় না। কাছে এলে অনুভব করা যায়, উপলব্ধি করা যায়। এই কুরআন কি শুধু মানুষকে গলিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে? জ্বি না। আল্লাহ তায়ালা বলেন কুরআন কারীমের প্রভাবে পাথর পর্যন্ত বিদীর্ণ হয়ে যেত। কুরআনুল কারীমের মধ্যে রাব্বে কারীম এমন শক্তি দিয়ে দিয়েছেন, যা মক্কার কট্টর মুশরিকরাও বুঝতে পেরেছিল। এমন শক্তির মুখোমুখি হতে তারা ভয় পেত। 📝 বইয়ের ভূমিকাও যে এত আকর্ষণীয় করে তোলা যায় বইটি অধ্যায়ন না করলে জানা হতো না । ভূমিকা পড়ে কুরআনের প্রতি যে ভালোলাগা তৈরি হয়েছে তা অবর্ণনীয়। যেকোনো পাঠকের হৃদয়ে কোরআনের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য এর ভূমিকাই যথেষ্ট মনে হয়েছে। পড়ার সময় বারবার মন ব্যাকুল হয়ে উঠেছে কুরআনুল কারিম তেলাওয়াতের জন্য,একটু তেলাওয়াত শোনার জন্য । চারশত পৃষ্ঠার দীর্ঘ বইটির প্রথম ত্রিশ পৃষ্ঠাই হলো বইয়ের ভূমিকা। লেখক ভূমিকা শুরু করেছেন এমন একটি আবেগঘন ঘটনার মাধ্যমে, যা পাঠকের হৃদয়ে অবশ্যই কুরআনের প্রতি ভালোবাসার তীব্র এক আকর্ষণ তৈরি করবে। লেখক যেন এর মাধ্যমে পাঠককে বইটি পড়ার জন্য শুরুতেই মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নিয়েছেন। চোখের সামনে ভেসে উঠবে একে একে কুরআনের সঙ্গে রাসূল সাঃ এর গভীর মুহাব্বতের চিত্র। আশ'আরী সাহাবীদের রাত্রিবেলায় কুরআন তেলাওয়াতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। কুরআনের প্রতি সাহাবিদের যে আবেগ ও ভালোবাসা তা অনুভূত হবে তীব্রভাবে। কুরআন কারীম এক অফুরন্ত শক্তির আধার। কুরআন কারীমের শুধু তেলাওয়াতে নয়, ইহা শ্রবণেও হৃদয়-মনে যে এক ধরনের শক্তি অর্জিত হয় পাঠক তা বুঝতে পারবে।কুরআন কারীম পাথর দিলকে গলিয়ে মোম করে দেয়। কোরআনের তেলাওয়াত শুনে সাহাবিরা শুধু কাঁদতেন না, কান্নায় ভেঙে পড়তেন। তাদের কান্নার এমন অভূতপূর্ব দৃশ্য মুশরিক নারী শিশুদের চুম্বুকের ন্যায় আকর্ষণ করত। কুরআন তেলাওয়াতের সুর শোনার জন্য সমাজপ্রভুদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে তারা পতঙ্গের মত সম্মোহিত হয়ে ছুটে আসত। ভূমিকার শেষে লেখক খুব সূক্ষ্মভাবে পাঠককে সর্তক করার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, "কুরআন কারীমকে অবহেলা করলে, মুমিন বান্দাও কেয়ামতের দিন ফেঁসে যাওয়ার আশংকা থেকে যায়”। রাব্বে কারীম কুরআনুল কারীমকে আমাদের হৃদয়ের বসন্ত বানিয়ে দিন। আল্লাহর যমীনে কুরআন কারীমের বিধান বাস্তবায়নের মেহনতে শামিল হওয়ার তাওফিক দান করুন। 📖 বইটির বিষয়বস্তুঃ 'আই লাভ কুরআন ' বইটিতে মোট আটটি অধ্যায় আছে। নিচে প্রত্যেকটি অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলোঃ- 📝প্রথম অংশ : হিযবী মিনাল কুরআন। প্রতিদিন পড়ার বা তেলাওয়াতের জন্য যা নির্ধারণ করা হয় সেটাকে হিযব বলা হয়। কুরআনুল কারীম কি, ব্যক্তি বিশেষ হিযবি মিনাল কুরআনের পার্থক্য কি, প্রিয় নবীজি (সাঃ) এর কি নির্দিষ্ট হিযব ছিলো এবং তিনি সেটা নিয়মিত আদায় করতেন তা পাঠক জানতে পারবে। এই অধ্যায়ের পুরো বিষয়টাকে লেখক ছোট ছোট অংশে মুক্তার দানায় মালা গাঁথার মতো করে সাজিয়েছেন। পাঠক এতে দৈনিক কুরআন তেলাওয়াতের পরিমাণ নির্ধারণে সুস্পষ্ট একটি দিকনির্দেশনা পেয়ে যাবেন। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকে, তাদের জন্য চিন্তার খোরাক রয়েছে এই অধ্যায়টিতে। 📝 দ্বিতীয় অংশ : আই লাভ ইউ, সুইট হার্ট! এই অধ্যায় আপনাকে ভাবাতে বাধ্য করবে যে কুরআনের সাথে আপনার সম্পর্কটা কেমন! আপনি কি কুরআনুল কারিমকে ভালোবাসেন? যদি এর উত্তর হয় ‘হাঁ’, তাহলে ভালোবাসার দাবি হলো কুরআনের সঙ্গে শখ্যতা ও অন্তরঙ্গতা তৈরি করা। বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে তার কোমলতা ও স্নিগ্ধতা অনুভব করা। লেখক এই অংশে ধারাবহিকভাবে সেই সকল কুরআন প্রেমিকের ঘটনা উল্লেখ করেছেন যারা কুরআনকে ভালোবাসতো গভীরভাবে। ফলে কুরআনও তাদেরকে আপন করে নিয়েছিলো গভীরভাবে। এই অধ্যায়টি পড়ার পর আপনি ভাবতে বাধ্য হবেন কুরআনের সাথে আপনার সম্পর্ক এমন তো? কুরআন কি এতটাই আপন আপনার কাছে? 📝 তৃতীয় অংশ : কুরআনী প্রজন্ম! নামটা শুনলেই বুঝতে পারা যায় অধ্যায়ের আলোচনার বিষয়বস্তু। প্রত্যেক অভিভাবক চায় যেনো তার সন্তান সুসন্তান হিসেবে গড়ে উঠে। পরবর্তী প্রজন্মকে কীভাবে কুরআনমুখী করা যায়, কুরআনের প্রতি কীভাবে তাদেরকে আগ্রহী করে তোলা যায়, তার জন্য লেখক অভিভাকদের উদ্দেশ্যে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন। সেগুলো বাস্তবায়ন হলে অবশ্যই আমাদের শিশুরা কুরআনকে ভালোবাসতে শিখবে। আপনার সন্তানদের কিভাবে কুরআন প্রমী বানাবেন তা নিয়েই এই অধ্যায়ের আলোচনা। মূলত এ অধ্যায়টি অভিভাবকদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। 📝 চতুর্থ অধ্যায়ঃ—'জীবনের প্রয়োজনে কুরআন ' বর্তমান সময়ে মানুষের মানসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন মত ও অবস্থা নিয়ে ৩১ টি শিরোনামে অধ্যায়টিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। লেখক অলোচনা শুরু করেছেন এভাবে- কুরআন কারীম কেন নাযিল করা হয়েছে? মানুষের হিদায়াতের জন্য। হিদায়াত লাভের জন্য কি কুরআন কারীম বুঝতে পারা পূর্বশর্ত? সব মানুষই কি কুরআন কারীম সমানভাবে বুঝে? মেধা, ভাষাজ্ঞান, গভীর চিন্তাশক্তি ও সূক্ষ্ম বুঝশক্তি থাকলেই কি কেউ কুরআন কারীম বুঝতে পারে? নাকি এসবের পাশাপাশি ঈমানের গভীরতাও লাগে? নিজের জীবনকে কোন পথে চালিত করতে চান, নিজের চরিত্রকে কিভাবে কুরআনের আলোয় রাঙাতে চান সেই পথ এখানে দেখানো হয়েছে। 📝 পঞ্চম অধ্যায়ঃ—'আয়াতমাখা গল্প' এ অধ্যায় জুড়ে আছে কুরআনের আয়াত সম্বলিত ছোট গল্প যা যত না ছোট তারচেয়ে ব্যাপক অর্থবহ। সেই সাথে পেয়ে যাবেন চিন্তার খোরাক যা আপনাকে নেক আমলের দিকে ধাবিত করবে। পাঠক বুঝতে পারবেন, কুরআন কীভাবে মানুষের জীবনে পরিবর্তন সাধন করে, পাঠকের চোখের ক্যানভাসে ভেসে উঠবে এমন সব মানুষের চিত্র যারা কুরআনকে ভালোবেসে এবং কুরআনের সান্নিধ্যে এসে জীবনে সফলতা পেয়েছেন। 📝 ষষ্ঠ অংশ : মাদরাসাতুল আম্বিয়া। কুরআনের আলোকে নবীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট সহ বিভিন্নদিক এ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়টি আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। লেখক এই অধ্যায়টি শুরু করেছেন অত্যান্ত আকর্ষণীয় একটি বিষয় " হযরত ইউসুফ আ. ও হযরত মুসা আ." এর মধ্যে বিভিন্ন মিল ও অমিল দিয়ে।পুরো অধ্যায়টি কুরআন থেকে সংগৃহীত নবীগণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও অসংখ্য আকর্ষণীয় ঘটনায় ভরপুর। 📝 সপ্তম অংশ : কুরআনি ভাবনা। এ অধ্যায়ে ছোট ছোট গল্পাচ্ছলে বলা ভাবনাগুলো পাঠককে নিয়ে যাবে কুরআনি ভাবনায়। কুরআনের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে ৫০ টি ছোট ছোট ভাবনা লেখক এই অধ্যায়ে জড়ো করেছেন, সাথে রয়েছে চিন্তার খোরাক যা আপনাকে কুরআনের প্রতি আগ্রহী করে তুলবে। কুরআর কারিমে গল্প খুঁজলে গল্প পাওয়া যায়। ইতিহাস খোঁজ করলে ইতিহাস পাওয়া যায়, উপদেশ চাইলে উপদেশ পাওয়া যায়, দুনিয়া চাইলে দুনিয়া পাওয়া যায়, আখিরাত চাইলে আখিরাত পাওয়া যায়”। তাই ভাবনাগুলো কুরআনের প্রতি ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ করতে পাঠক হৃদয়ে অনুপ্রেরণা যোগাবে। 📝 অষ্টম অংশ : মাদরাসাতুল কুরআন। এ অধ্যায়টির কোনো তুলনা হয় না। এটি বইয়ের সর্বশেষ অধ্যায় এবং অন্যান্য অধ্যায়ের চেয়ে এটি বেশ দীর্ঘ। লেখক এতে বেশকিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। শুধু কুরআন তিলাওয়াত করলেই হবে না বরং কুরআনের হক সঠিকভাবে আদায় করতে হবে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা কি বলেছেন তা জানতে হলে অবশ্যই আমাদের কুরআনের ভাষা আরবি জানতে হবে। দরদি লেখক এই অধ্যায়ের শুরুতে সংক্ষিপ্তভাবে কুরআনের ভাষা শিক্ষার একটি কার্যকরী সিলেবাস পাঠকের সামনে পেশ করেছেন। কীভাবে ভাষা শিক্ষাটা শুরু হবে, এবং এ ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে তা তিনি দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। জীবনের বিভিন্ন দিককে লেখক কুরআনের আয়াতের আলোকে তুলে ধরেছেন এ অধ্যায়ে। যত পড়বেন ততই মুগ্ধ হবেন ইং শা আল্লাহ। 📖 বইটি কাদের পড়া উচিত❓ সকল প্রাকটিসিং মুসলিম ভাই-বোনদের উচিত "আই লাভ কুরআন" বইটি পড়া ও তা নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করা। মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধব ও আত্নীয়দের মাঝে বইটি হাদিয়া দিন । বিশেষ করে যারা জেনারেল লাইনে পড়াশোনা করেছেন কুরআনের ভাষা আরবি সঠিকভাবে বুঝতে পারেন না তাদের জন্য বইটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে, তাদেরকে উদ্ভুদ্ধ করবে কুরআনের কাছাকাছি আসার কুরআনুল কারিম তেলাওয়াত করার। আমরা যতটুকু সৌভাগ্য কামনা করি ঠিক সেই পরিমান কুরআন আমাদের প্রতিদিন তেলাওয়াত করা উচিত! তাই কুরআনের সঠিক মর্মার্থ বোঝার জন্য কুরআনের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য ছোট-বড় সকল দ্বীনে প্রত্যার্তন করা ভাই- বোনদের বইটি পড়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
সুলতানা নাসরিন চৌধুরী @ August 28, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ নাম:সুলতানা নাসরিন চৌধুরী বই: আই লাভ কুরআন লেখক: মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ প্রকাশনী:মাকতাবাতুল আযহার। কুরআন! আল্লাহর কালাম! আমরা অনেকের ধারণা এই মহামাণ্বিত কুরআন শুধুমাত্র তিলাওয়াত ই যথেষ্ট, অথচ কুরআন বুঝে পড়া এবং শুধুমাত্র তিলাওয়াতের মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতাল তফাৎ। আচ্ছা আমরা কি জানি?কুরআন তিলওয়াতের পাশাপাশি কেনো কুরআনকে বুঝতে হবে? আমরা কি জানি? তাদাব্বুর মানে কি? কুরআন তিলওয়াতের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়টা কি আমাদের জানা আছে? রাতের শেষ অংশে একা একা, নিরবচ্ছিন্ন রুমে আপনি যখন কুরআন নিয়ে বসবেন, মন দিয়ে কুরআন পড়বেন, বুঝবেন, আপনার অন্তর, আত্মার শীতলতায় আপনার ক্বলব প্রশান্তিতে ভরে যাবে।আল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতাআ’লাও রাতের বেলা তাঁর কিতাব পড়াকে পছন্দ করেন। তিনি বলেছেন -কিতাবীদের মধ্যেই এমন লোকও আছে, যারা (সঠিক পথে)প্রতিষ্ঠিত, যারা রাতের বেলা আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করে। (আলে ইমরান ১১৩) . " আই লাভ কুরআন "এই বইয়ে সাবলীল শব্দচয়নে কুরআনের প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত করার অসাধারণ সব অভিব্যক্তি তুলে ধরা হয়েছে।বইটির ভূমিকা পড়েই মনটা হু হু করে কেঁদে উঠবে।আশআরিদের তিলাওয়াতের প্রতি ভালোবাসা দেখে বুকসেল্ফের কোণা থেকে ধুলো মাখা কুরআনুল কারীম টা ছুঁয়ে দেখতে মন চাইবে।সাহাবীরা যেভাবে কুরআন পড়তেন, সেই ভাবে কুরআন পড়লে আমাদের কি লাভ,আল্লাহর আয়াতের পড়ে কেমন ই বা ছিল তাদের প্রতিক্রিয়া?কুরআনকে বাক্স বন্দি না করে নিজের হাতের কাছে রাখা কেনো জরুরি,ধীরে ধীরে এসব বিষয় আপনার মনকে আরো বিগলিত করবে কুরআনের প্রতি। ‘আই লাভ কুরআন’ বইটিতে মোট ৮টি অধ্যায় আছে।ভূমিকাতে রয়েছে ঈমান জাগানীয়া কিছু ঘটনা।তৎকালীন আশআরীদের তিলাওয়াতের মধুরতা থেকে কুরআনের পাঠ ও পাঠকের মর্যাদার সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম অধ্যায়: ‘হিযবী মিনাল কুরআন’ । আল্লাহ সুবনাহুতায়ালার নিজস্ব একটি দল আছে ,যাদেরকে হিযবুল্লাহ বলা হয়।এখানে মূলত কুরআন কারীম কি, ব্যক্তি বিশেষ হিযবি মিনাল কুরআনের পার্থক্য, সেই হিযব আদায় করার অনুভূতি, তিলাওয়াতের মাহাত্ম্য, যারা তাদাব্বুর করে তাদের মর্যাদা নিয়ে লেখা। এছাড়াও রয়েছে তাদের জন্য চিন্তার খোরাক যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকেন, বইয়ের পাহাড় তৈরি করেন, কুরআন নিয়ে গবেষণা করেন, থিসিস লেখেন অথচ সরাসরি কুরআন থেকে দু’পৃষ্ঠা তিলাওয়াত করার সময় পান না। এইরকম ছোটো ছোটো অনুচ্ছেদে এত সুন্দর ভাবে লেখা আছে যে একজন পাঠক কুরআনকে ভালোবাসতে শিখবে, হৃদয়ে শীতলতার ঢেউ অনুভব করবে, ঈমান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। দ্বিতীয় অধ্যায়: ‘আই লাভ ইউ, সুইটহার্ট’। এখানে লেখকের জামার বুকপকেটে সর্বদা কুরআন রাখা, রেহেল সংক্রান্ত জীবনের ছোটো ছোটো শিক্ষণীয় ঘটনার উল্লেখ আছে। তৃতীয় অধ্যায়: ‘কুরআনী প্রজন্ম’। এই অধ্যায়টা সেই অভিভাবকদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ যারা তাদের সন্তানদের কুরআন অনুরাগী বা হাফেজ কিংবা শিশুর কুরআনী শব্দজ্ঞান বৃদ্ধি করতে চান অনেক গুরুত্বপূর্ণ টিপস এই অধ্যায়ে দেওয়া আছে। যাদের বইটি নেই তারা এই অংশটুকুর প্রিন্টকপি সাথে রাখতে পারেন। সন্তানের গ্রহণক্ষমতার উপর ভিত্তি করে অ্যাপ্লাই করবেন তুলনামূলক সহজ থেকে কঠিনের দিকে। চতুর্থ অধ্যায়- ‘জীবনের প্রয়োজনে কুরআন’। কুরআন ডুবুরি, কুরআনপ্রেমী, সাহাবায়ে কেরাম, কুরআন ও লোকধর্ম ,কাফির ইত্যাদি বিষয়ে প্রায় ৩১ টি শিরোনামে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। পঞ্চম অধ্যায়: এই অধ্যায়টি মডারেট মুফাসসির, সন্তানের হাহাকার, হেবাতুল্লাহ, কুরআনি সুবাস ইত্যাদি শিরোনামে প্রায় ১২টি প্রত্যাবর্তনকারী আয়াতমাখা গল্প দিয়ে সাজানো হয়েছে। ষষ্ঠ অধ্যায়: মুহসিন, ইউসুফী সৌন্দর্য, নবীওয়ালা সুন্নত, সুচিন্তা, ফিরআওন, ট্রিনিটি, প্রোপাগাণ্ডা নামক এরকম আকর্ষণীয় শিরোনামে ‘মাদরাসাতুল আম্বিয়া’ রচিত। ইউসুফ ও মুসা নবীর জীবন থেকে পাওয়া শিক্ষাকে হৃদয়গ্রাহী ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে।বর্তমান সময়ের অনেক পরিস্থিতির সাথেই এই ঘটনাসমূহর যোগসূত্র খুঁজে পাবেন এবং এমতাবস্তায় নিজের করণীয় বিষয়াবলি বিচক্ষণতার সাথে তুলে ধরেছেন লেখক। জ্ঞান ও শিক্ষার ভান্ডারে ভরপুর এই চ্যাপ্টারটি। সপ্তম অধ্যায়: অধ্যায় টি পাঠককে কুরআনি ভাবনায় নিয়ে যাবে। কুরআনের প্রতি কর্তব্য, কুরআনের হক ইত্যাদি বিষয় এই অধ্যায়ে প্রাধান্য পেয়েছে। অষ্টম অধ্যায়: ‘মাদরাসাতুল কুরআন’ কে বই বললে কোনো ভুল হবার কথা নয়।কেননা, কুরআনী শিক্ষা কখনোই অল্প পরিসরে বর্ণনা করা যায়না।তবুও পাঠককে এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই লেখকের এই প্রচেষ্টা।মাসদার,মূলধাতু,আয়াত পুনরাবৃত্তির উপকারিতা ইত্যাদি আলোচিত হয়েছে এ অংশে। বিবেককে জাগ্রত করুন- বইটি পড়ার সময় প্রিয় একটি লাইন স্মৃতিমণিকোঠায় গাঢ় দাগ ফেলেছে।কিছুটা এমন- "জীবন শুরু হোক কুরআন দিয়ে শেষ হোক কুরআন দিয়ে।" যে কুরআনের রঙে রঙিন হয়েছে,হৃদয়ের প্রশান্তি তো তার কাছেই ধরা দিয়েছে।নশ্বর এই দুনিয়ার কোনো রাজা বাদশার সাথে কথা বলার জন্য আমাদের কতো শিডিউল মেনে চলতে হয়!কতোই না বাড়তি যত্ন করতে হয় তার।অথচ যিনি রাজাদের রাজা,সারাজাহানের সৃষ্টিকুলের স্রষ্টা তাঁর দরবারে যেতে কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয়না।অপেক্ষাও করতে হয়না দীর্ঘদিন।যখন তখন তার সাথে কথা বলা যায়। কুরআনুল কারীম সেই স্রষ্টার ই কথা।তার ই আদেশ।অথচ আফসোস! আমাদের কাছে দুনিয়ার রাজারাই বেশি গুরুত্ব পায়। সৃষ্টিকর্তার সাথে কথা বলার সামান্য সময়টুকুও আমরা বের করতে পারিনা। "আই লাভ কুরআন" বইটি মূলত পাঠককে কুরআন প্রেমী করতে সাহায্য করবে। একবার হলেও তারা কুরআন নিয়ে বসবে ,তাদাব্বুর করবে।আর কখনো কুরআনুল কারীমে বিন্দু পরিমাণ ধূলিকণার ছাপ ফেলতে দেবে না।রাখবে ভীষণ যত্নে,হৃদ মাঝারে!
রাসেল খান @ August 30, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ 📙 কুরআন, আল্লাহর কালাম। ১৪০০ বছর ধরে যা রয়ে গেছে অবিকৃত অবস্থায়৷ এ যেনো এক জীবন্ত মুজেযা।নবী বা সাহাবিরা যখন তেলাওয়াত করতো তখন ফেরেশতারাও চলে আসতো তা শুনতে৷ কাফেররা যা অস্বীকার করলেও শুনতে চলে আসতো রাসূলের (সা) ঘরের পাশে। কুরআনে চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও এত বছরেও একটি শব্দের মত শব্দ তৈরি করে কেউ দেখাতে পারেনি। সালাফ-সালেফিনরা এই কোরআন শুধু পড়তোই না তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করতো। আল্লাহ কখনো তেলওয়াত করতে বলেছেন তো আবার কখনো চুপচাপ শুনতে বলেছেন—নিতে বলেছেন এর শিক্ষাগুলো, প্রয়োগের আদেশ দিয়েছেন জীবনে৷ কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহ স্বয়ং নিয়েছেন। সুতরাং আপনি পড়ুন বা না পড়ুন, কাজে লাগান বা না লাগান এতে কুরআনের কিছু যায় আসে না। এতে ক্ষতি শুধু আপনারই। তাই কুরআন নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। আর সময়ের এই ভাবনায় 'আই লাভ কুরআন' এক অনন্য সংযোগ বলে মনে করছি। 🔰 বইটিতে যা আছে লেখক ভূমিকাতে বলে দিয়েছেন বইটি তার একক গবেষণার কাজ নয়৷ বইটিতে রয়েছে প্রচুর সংকলনের কাজ। সংকলন হোক বা লেখকের নিজস্ব লেখা হোক বইটিকে সাজাতে লেখক যে দক্ষতা দেখিয়েছে তা প্রশংসনীয়। চলুন দেখে নেই বইটিতে কী কী পাবেনঃ হিযবী মিনাল কুরআন ~ হিযব হচ্ছে পড়া বা তেলওয়াত নির্দিষ্ট করে নেয়া৷ যেন ধারাবাহিকতা ঠিক থাকে আবার একঘেয়েমিতা চলে না আসে। নিয়মিত নির্দিষ্ট করে নিলে পড়ার মধ্যে তৃপ্তি চলে আসে৷ লেখক এখানে কোরআন হিযবের ঘটনা, নিয়ম, গুরুত্ব তুলে ধরেছেন যার মাধ্যমে জেনারেল শিক্ষিতদের বিষয়টি বুঝতে খুব সহজ হবে। আই লাভ ইউ সুইটহার্ট ~ কুরআনের প্রতি ভালোবাসা কেমন হতে পারে কিছু ঘটনার মাধ্যমে লেখক তা দেখিয়েছেন এই অধ্যায়ে৷ কুরআনের প্রতি আমার -আপনার ভালোবাসার পরিমাণ কেমন তা খুব সহজেই তুলনা করতে পারবেন৷ কুরআনী প্রজন্ম ~ কুরআনী প্রজন্ম গড়ে তুলতে কী কী করা যেতে পারে সেই বিষয়ে লেখকের পরামর্শ রয়েছে এখানে। শুধু মনের ইচ্ছা আর মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে দিলেই কাজ শেষ হয়ে যাবে না। আপনাকে যেতে হবে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে৷ যা আপনি এই অধ্যায়টি পড়লে বুঝতে পারবেন৷ জীবনের প্রয়োজনে কুরআন ~ কুরআন শ্রেষ্ঠ পথ প্রদর্শক। মানব জাতির এক মাত্র সংবিধান। এই কুরআন ছাড়া মানুষের গতি কোথায়? বইটির এই অংশে পাবেন কুরআনের মাধ্যমে কীভাবে জীবন রাঙাতে হবে, কীভাবে আপনার সমস্যা সমাধান করবেন, কীভাবে জীবনের পথের পাথেয় বানাতে হবে। আয়াতমাখা গল্প ~ আয়াতমাখা গল্প অর্থ্যাৎ যে আয়াতগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছে মানুষের জীবনের গল্প। এমন ঘটনা হয়ত লিখে শেষ করা যাবে না এক জীবনে। লেখক খুব বাছাই করে এমন কিছু গল্প তুলে এনেছেন যা আপনাকে বিপথ থেকে প্রত্যাবর্তন করতে সহায়তা করবে বলে মনে করি৷ মাদরাসাতুল আম্বিয়া ~ কুরআনে পূর্ববর্তী নবীদের ঘটনা এমনি এমনিই বর্ণনা করা হয়নি। এখান থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু আমরা তো পড়ারই সময় পাই না, শিক্ষা গ্রহণ করবো কীভাবে? লেখক এই অধ্যায়ে নবীদের জীবন থেকে কী কী শিক্ষা গ্রহণ করা যায় তা বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে মূসা আ. ও ইউসুফ আ. এর জীবনীকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কুরআনী ভাবনা ~ কুরআনী ভাবনা হলো কুরআন নিয়ে ভাবনা। কুরআন নিয়ে লেখক যে ৫০ টি ভাবনা তুলে ধরেছেন তা আপনার চিন্তার জগতে সাড়া ফেলে দিবে আমি নিশ্চিত। কুরআন নিয়ে এভাবেও ভাবা যায়?? মাদরাসাতুল কুরআন ~ বইটির সবচেয়ে বড় অংশ এই অধ্যায়৷ কুরাআনের পরিপূর্ণ মজা পেতে কুরআনের ভাষার বিকল্প নেই। সেটি রপ্ত করতে কী কী করণীয় লেখক তা ছোট ছোট পদক্ষেপ আকারে সাজিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া বিভিন্ন শিক্ষণীয় আয়াতের ব্যাখ্যাও রয়েছে। 📖 বইটি কেন পড়বেন? কুরআন আমাদেরকে দেয়া হয়েছে পড়তে, বুঝতে এবং সেই অনুযায়ী আমল করতে। একটা সময় এই বিষয়টির কদর থাকলেও বর্তমান সময়ে কুরআনের প্রতি আমাদের ভালোবাসা শুধু মুখেই রয়ে গেছে৷ অথচ এর আসল উদ্দেশ্য থেকে আমরা দূরে সরে গিয়েছি অনেক। মুখের ভালোবাসা থেকে যেন সেটি প্রায়োগিক ভালোবাসাতে পরিণত হয় সেই কারণেই পড়তে হবে আপনাকে বইটি। বইটি রচনা করার উদ্দেশ্য, লেখার উপস্থাপনা আপনাকে শুধু কুরআন পড়তেই বাধ্য করবে না, বুঝে শুনে জীবনে প্রয়োগ করতেও আগ্রহী করে তুলবে ইনশাআল্লাহ। 📝 পাঠ অনূভুতি এক কথায় বললে আলহামদুলিল্লাহ। ছোট জীবনে যত বই পড়েছি তার মধ্যে উপরের দিকেই হবে বইটির স্থান। কুরআন পড়তে পারি কিন্তু তেমন ভাবে পড়া হয় না। আর পড়লেও কোরআন নিয়ে এভাবে কখনো চিন্তাই করা হয়নি। একটি বইয়ের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো পাঠককে চিন্তা করতে শেখানো। বইটি সেক্ষেত্রে শতভাগ সফল। কুরআন নিয়ে এভাবে চিন্তা করা যায়, লিখা যায় এবং মানুষকে জানানো যায় বইটি না পড়লে জানতে পারতাম না। বইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যেন আল্লাহ কবুল করেন, ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত রাখার তৌফিক দান করেন। আমিন। 📜 সমালোচনা আলোচনা-সমালোচনা নিয়েই জীবন। সমালোচনা মানেই নেগেটিভ কিছু নয়। একজনের চোখে যেটা ভালো লাগলে অন্য একজনের চোখে সেটা ত্রুটিযুক্ত মনে হতে পারে। বইটির প্রোডাকশন, প্রচ্ছদ, পেজ যথেষ্ট উন্নত ছিলো৷ তবে পেজ সেট আপের সময়ে প্যারা গুলোর গ্যাপে যে আইকন ব্যবহার করা হয়েছে তা আমার ভালো লাগে নি। একই টপিকের একাধিক প্যারায় আইকন ব্যবহার দৃষ্টিকটু লেগেছে৷ দুই একটা শব্দের ফন্ট বিচ্ছিন্ন, কয়েকটি আরবি পরিভাষার স্পষ্ট বাংলা অর্থ করতে হয়ত ভুলে গিয়েছে লেখক। এছাড়া অন্য তেমন কোনো সমস্যা চোখে পড়েনি৷ 📩 পরামর্শ কোরআনের পাশাপাশি নামাজ, রোজা, ঈমানের উপরও এমন বই আনা সময়ের দাবি বলে মনে করছি। বিশেষ করে নামাজের উপর এমন বই বর্তমান প্রজন্মকে নামাজের প্রতি আগ্রহ করে তুলবে। 🖋 লেখক পরিচিতি ইসলামি বইয়ের পাঠকদের কাছে মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ এক পরিচিত নাম।তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই৷ তার প্রায় ২৪ টি বই বের হয়েছে মাকতাবাতুল আযহার থেকে৷ কুরআন নিয়ে এত যত্ন করে আগে কেউ আমাদের দেশে লিখেছে কিনা জানা নেই। লেখকের উন্নতি কামনা করছি। সর্বশেষ বইয়ের একটি লাইন দিয়ে লেখা শেষ করলাম। এক বুজুর্গকে প্রশ্ন করা হলো কুরআন কতটুকু তেলওয়াত করবো? উত্তর দিলেন যতটুকু সৌভাগ্য তুমি চাও। 📚 বই পরিচিতি নামঃ আই লাভ কুরআন লেখকঃ মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ প্রকাশনাঃ মাকতাবাতুল আযহার পৃষ্ঠাঃ ৪০০ মুদ্রিত মূল্যঃ ৬০০ রেটিংঃ৮.৫/১০ রিভিউ লেখকঃ রাসেল খান ২৯-০৮-২০২২
রাসেল খান @ August 30, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_২০২২ 📙 কুরআন, আল্লাহর কালাম। ১৪০০ বছর ধরে যা রয়ে গেছে অবিকৃত অবস্থায়৷ এ যেনো এক জীবন্ত মুজেযা।নবী বা সাহাবিরা যখন তেলাওয়াত করতো তখন ফেরেশতারাও চলে আসতো তা শুনতে৷ কাফেররা যা অস্বীকার করলেও শুনতে চলে আসতো রাসূলের (সা) ঘরের পাশে। কুরআনে চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও এত বছরেও একটি শব্দের মত শব্দ তৈরি করে কেউ দেখাতে পারেনি। সালাফ-সালেফিনরা এই কোরআন শুধু পড়তোই না তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা করতো। আল্লাহ কখনো তেলওয়াত করতে বলেছেন তো আবার কখনো চুপচাপ শুনতে বলেছেন—নিতে বলেছেন এর শিক্ষাগুলো, প্রয়োগের আদেশ দিয়েছেন জীবনে৷ কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব আল্লাহ স্বয়ং নিয়েছেন। সুতরাং আপনি পড়ুন বা না পড়ুন, কাজে লাগান বা না লাগান এতে কুরআনের কিছু যায় আসে না। এতে ক্ষতি শুধু আপনারই। তাই কুরআন নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। আর সময়ের এই ভাবনায় 'আই লাভ কুরআন' এক অনন্য সংযোগ বলে মনে করছি। 🔰 বইটিতে যা আছে লেখক ভূমিকাতে বলে দিয়েছেন বইটি তার একক গবেষণার কাজ নয়৷ বইটিতে রয়েছে প্রচুর সংকলনের কাজ। সংকলন হোক বা লেখকের নিজস্ব লেখা হোক বইটিকে সাজাতে লেখক যে দক্ষতা দেখিয়েছে তা প্রশংসনীয়। চলুন দেখে নেই বইটিতে কী কী পাবেনঃ হিযবী মিনাল কুরআন ~ হিযব হচ্ছে পড়া বা তেলওয়াত নির্দিষ্ট করে নেয়া৷ যেন ধারাবাহিকতা ঠিক থাকে আবার একঘেয়েমিতা চলে না আসে। নিয়মিত নির্দিষ্ট করে নিলে পড়ার মধ্যে তৃপ্তি চলে আসে৷ লেখক এখানে কোরআন হিযবের ঘটনা, নিয়ম, গুরুত্ব তুলে ধরেছেন যার মাধ্যমে জেনারেল শিক্ষিতদের বিষয়টি বুঝতে খুব সহজ হবে। আই লাভ ইউ সুইটহার্ট ~ কুরআনের প্রতি ভালোবাসা কেমন হতে পারে কিছু ঘটনার মাধ্যমে লেখক তা দেখিয়েছেন এই অধ্যায়ে৷ কুরআনের প্রতি আমার -আপনার ভালোবাসার পরিমাণ কেমন তা খুব সহজেই তুলনা করতে পারবেন৷ কুরআনী প্রজন্ম ~ কুরআনী প্রজন্ম গড়ে তুলতে কী কী করা যেতে পারে সেই বিষয়ে লেখকের পরামর্শ রয়েছে এখানে। শুধু মনের ইচ্ছা আর মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে দিলেই কাজ শেষ হয়ে যাবে না। আপনাকে যেতে হবে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে৷ যা আপনি এই অধ্যায়টি পড়লে বুঝতে পারবেন৷ জীবনের প্রয়োজনে কুরআন ~ কুরআন শ্রেষ্ঠ পথ প্রদর্শক। মানব জাতির এক মাত্র সংবিধান। এই কুরআন ছাড়া মানুষের গতি কোথায়? বইটির এই অংশে পাবেন কুরআনের মাধ্যমে কীভাবে জীবন রাঙাতে হবে, কীভাবে আপনার সমস্যা সমাধান করবেন, কীভাবে জীবনের পথের পাথেয় বানাতে হবে। আয়াতমাখা গল্প ~ আয়াতমাখা গল্প অর্থ্যাৎ যে আয়াতগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছে মানুষের জীবনের গল্প। এমন ঘটনা হয়ত লিখে শেষ করা যাবে না এক জীবনে। লেখক খুব বাছাই করে এমন কিছু গল্প তুলে এনেছেন যা আপনাকে বিপথ থেকে প্রত্যাবর্তন করতে সহায়তা করবে বলে মনে করি৷ মাদরাসাতুল আম্বিয়া ~ কুরআনে পূর্ববর্তী নবীদের ঘটনা এমনি এমনিই বর্ণনা করা হয়নি। এখান থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু আমরা তো পড়ারই সময় পাই না, শিক্ষা গ্রহণ করবো কীভাবে? লেখক এই অধ্যায়ে নবীদের জীবন থেকে কী কী শিক্ষা গ্রহণ করা যায় তা বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে মূসা আ. ও ইউসুফ আ. এর জীবনীকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কুরআনী ভাবনা ~ কুরআনী ভাবনা হলো কুরআন নিয়ে ভাবনা। কুরআন নিয়ে লেখক যে ৫০ টি ভাবনা তুলে ধরেছেন তা আপনার চিন্তার জগতে সাড়া ফেলে দিবে আমি নিশ্চিত। কুরআন নিয়ে এভাবেও ভাবা যায়?? মাদরাসাতুল কুরআন ~ বইটির সবচেয়ে বড় অংশ এই অধ্যায়৷ কুরাআনের পরিপূর্ণ মজা পেতে কুরআনের ভাষার বিকল্প নেই। সেটি রপ্ত করতে কী কী করণীয় লেখক তা ছোট ছোট পদক্ষেপ আকারে সাজিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া বিভিন্ন শিক্ষণীয় আয়াতের ব্যাখ্যাও রয়েছে। 📖 বইটি কেন পড়বেন? কুরআন আমাদেরকে দেয়া হয়েছে পড়তে, বুঝতে এবং সেই অনুযায়ী আমল করতে। একটা সময় এই বিষয়টির কদর থাকলেও বর্তমান সময়ে কুরআনের প্রতি আমাদের ভালোবাসা শুধু মুখেই রয়ে গেছে৷ অথচ এর আসল উদ্দেশ্য থেকে আমরা দূরে সরে গিয়েছি অনেক। মুখের ভালোবাসা থেকে যেন সেটি প্রায়োগিক ভালোবাসাতে পরিণত হয় সেই কারণেই পড়তে হবে আপনাকে বইটি। বইটি রচনা করার উদ্দেশ্য, লেখার উপস্থাপনা আপনাকে শুধু কুরআন পড়তেই বাধ্য করবে না, বুঝে শুনে জীবনে প্রয়োগ করতেও আগ্রহী করে তুলবে ইনশাআল্লাহ। 📝 পাঠ অনূভুতি এক কথায় বললে আলহামদুলিল্লাহ। ছোট জীবনে যত বই পড়েছি তার মধ্যে উপরের দিকেই হবে বইটির স্থান। কুরআন পড়তে পারি কিন্তু তেমন ভাবে পড়া হয় না। আর পড়লেও কোরআন নিয়ে এভাবে কখনো চিন্তাই করা হয়নি। একটি বইয়ের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো পাঠককে চিন্তা করতে শেখানো। বইটি সেক্ষেত্রে শতভাগ সফল। কুরআন নিয়ে এভাবে চিন্তা করা যায়, লিখা যায় এবং মানুষকে জানানো যায় বইটি না পড়লে জানতে পারতাম না। বইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যেন আল্লাহ কবুল করেন, ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত রাখার তৌফিক দান করেন। আমিন। 📜 সমালোচনা আলোচনা-সমালোচনা নিয়েই জীবন। সমালোচনা মানেই নেগেটিভ কিছু নয়। একজনের চোখে যেটা ভালো লাগলে অন্য একজনের চোখে সেটা ত্রুটিযুক্ত মনে হতে পারে। বইটির প্রোডাকশন, প্রচ্ছদ, পেজ যথেষ্ট উন্নত ছিলো৷ তবে পেজ সেট আপের সময়ে প্যারা গুলোর গ্যাপে যে আইকন ব্যবহার করা হয়েছে তা আমার ভালো লাগে নি। একই টপিকের একাধিক প্যারায় আইকন ব্যবহার দৃষ্টিকটু লেগেছে৷ দুই একটা শব্দের ফন্ট বিচ্ছিন্ন, কয়েকটি আরবি পরিভাষার স্পষ্ট বাংলা অর্থ করতে হয়ত ভুলে গিয়েছে লেখক। এছাড়া অন্য তেমন কোনো সমস্যা চোখে পড়েনি৷ 📩 পরামর্শ কোরআনের পাশাপাশি নামাজ, রোজা, ঈমানের উপরও এমন বই আনা সময়ের দাবি বলে মনে করছি। বিশেষ করে নামাজের উপর এমন বই বর্তমান প্রজন্মকে নামাজের প্রতি আগ্রহ করে তুলবে। 🖋 লেখক পরিচিতি ইসলামি বইয়ের পাঠকদের কাছে মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ এক পরিচিত নাম।তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই৷ তার প্রায় ২৪ টি বই বের হয়েছে মাকতাবাতুল আযহার থেকে৷ কুরআন নিয়ে এত যত্ন করে আগে কেউ আমাদের দেশে লিখেছে কিনা জানা নেই। লেখকের উন্নতি কামনা করছি। সর্বশেষ বইয়ের একটি লাইন দিয়ে লেখা শেষ করলাম। এক বুজুর্গকে প্রশ্ন করা হলো কুরআন কতটুকু তেলওয়াত করবো? উত্তর দিলেন যতটুকু সৌভাগ্য তুমি চাও। 📚 বই পরিচিতি নামঃ আই লাভ কুরআন লেখকঃ মুহাম্মদ আতিক উল্লাহ প্রকাশনাঃ মাকতাবাতুল আযহার পৃষ্ঠাঃ ৪০০ মুদ্রিত মূল্যঃ ৬০০ রেটিংঃ ৮.৫/১০ রিভিউ লেখকঃ রাসেল খান ২৯-০৮-২০২২
খাদিজা বিনতে @ August 31, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বই রিভিউ বইয়ের নাম :আই লাভ কুরআন লেখক :মুহাম্মাদ আতিক উল্লাহ হাফিজুল্লাহ প্রকাশনী:মাকতাবাতুল আযহার। পৃ নং:400 আমি যদি এ কুরআন কে নাজিল করতাম কোনো পাহাড়ের উপর তবে আপনি দেখতেন তা আল্লাহর ভয়ে অবনত ও বির্দীন হয়ে যেতো। ( সূরা হশর 21) "আই লাভ কুরআন " বইয়ের নাম দেখে কি আশ্চর্য না হয়ে পারা যায়? শব্দগুলো কতটা গুরুত্ব বহন করে?আমরা কতটা ভালোবাসলে এমন শব্দগুলো ব‍্যবহার করি?শুধু কি আশ্চর্য কৌতূহল ও বটে।কেননা তাতো লেখা হয়েছে ঐশীবাণী মহাগ্রন্ত আল কুরআন সম্পকে যা আমাদের পথ প্রদর্শক। কৌতূহল হয়ে আই লাভ কুরআন বইয়ের মলাটবদ্ধ মুক্তক্ষচিত ভাজে ডুব দিলাম।বইটি পড়ে আমি আপ্লুত হয়েছি। এ ক্ষুদ্রকায় জীবনে দেখেছি প্রত‍্যেক জিনিসের দারুন উপকার থাকলে ও কিনচিৎ অপকারিতা ও থেকে যায়। অথচ আই লাভ কুরআন বই পড়ে আমার অনেক উপকার হয়েছে কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় অপকারিতা খুজেঁই পাইনি আমি।বইটি পড়ে সত্যিই আমি জিতেছি। বইয়ের প্রচ্ছদে ই যেন বইয়ের ভিতরে কেমন তার অনূভুতি জাগিয়ে দিচ্ছে। আই লাভ কুরআন বইয়ের লেখক আতিক উল্লাহ হাফিজুল্লাহ খুবই চমৎকার ভাবে পুরো বইটি সহজ শব্দ,প্রাঞ্জল ভাষা ও সাবলীল বর্ণনায় টুকরো টুকরো নসিহা, কুরআনের আয়াত, আয়াতের ভাবনা গল্পচ্ছলে সাজিয়েছেন।প্রতিটি নসিহা, কুরআনের আয়াত, আয়াতের ভাবনার গল্প যেন নিজের অগোছালো জীবন কে গুছিয়ে নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়,নিজেকে কুরআনের রঙে রাঙানোর প্রয়োজনীয়তা আমাদের হৃদয় মাজারে অনুভব করিয়ে দেয়। ▪অন্ধকার হৃদয়ে আলোর মশাল জ্বালাতে আই লাভ কুরআন বইটি যথেষ্ট। ▪নিজেকে হেদায়াতের আলোয় কুরআনে পাখি করে গড়ে তুলার জন‍্য এ বইটি অনুপ্রেরণা। ~~~মলাটের ভাজে লেখক বইটিতে আট অধ‍্যায় সাজিয়েছে।প্রতিটি অধ‍্যায় যেন নতুন করে এক জীবন উপহার নিয়ে হাজির হয়।ভূমিকাতেই কুরআন পাঠের প্রয়োজনীয়তা,কুরআন পড়ার জন‍্য হৃদয়ের ব‍্যাকুলতা,কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কটা কেমন হওয়া উচিত।কুরআনকে কতটা ভালোবাসলে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করবো। *** হিযবী মিনাল কুরআন লেখক পুরো বিষয়টাকে ক্ষুদ্রক্ষুদ্র অংশে ফুঠিয়ে তুলেছেন।হিযব এর গুরুত্ব কুরআন কতটা মুক্ত ক্ষচিত বাণী,বুযুর্গণের কুরআনের সাথে মশগুল থাকার অনুভূতি, কুরআনের রঙে রাঙিয়ে জীবন গড়ার উপায়গুলো যেন একই সূতায় মুক্ত ক্ষচিত। ▪প্রতিটি নসিহা,উক্তি যেনো থামিয়ে দিচ্ছে ভাবিয়ে তুলছে!অবাক করে দিচ্ছে। ***আই লাভ ইউ সুইট হার্ট লেখক গল্পচ্ছলে পাঠকের হৃদ মাজারে যেন কুরআনের মুহাব্বাত পৌঁছিয়ে দিয়েছে।এ অধ‍্যায় পড়ে কোনো পাঠকের কুরআনের সাথে এক অন‍্য রকম মায়ার বাধনে আবদ্ধ না হয়ে উপায় নেই। আনমনে বলে উঠবে" আই লাভ কুরআন " তব আর দেরি কেন ডুব দেওয়া যাক এবার... ***কুরআনী প্রজন্ম নামটাতেই বিষয় বস্তু যেন ফুটে ওঠেছে। সন্তান কে কুরআন প্রেমী,কুরআনের পাখি বানানোর মূল মন্ত্র....কুরআনী প্রজন্ম। ***আয়াতমাখা গল্প লেখক অধ‍্যায়টি শব্দের তুলিতে গল্পচ্ছলে এমন ভাবে সাজিয়েছে কঠিন হৃদয়ের মানুষের মাঝেও আলোড়ন ছড়াবে। পাঠকবৃন্দ খুব সহজেই বুঝতে পারবে মানুষ কিভাবে কুরআন সান্নিধ্যে কুরআনের রঙে জীবন রাঙিয়ে সফলতার শির্ষে ওঠছে।কতটা আন্তরিক ও ইখলাসের সহীত কুরআন কে আকড়ে ধরেছে। ***মাদ্রাসাতুল আম্বিয়া অধ‍্যায়টি খুবই সুন্দর ভাবে আয়াতের সৌন্দর্য, আয়াতে আয়াতে মিল- অমিল নবীদের কাহিনী বর্ণনা করেছে।ইউসুফ আ: ও মূসা আ: এর উল্লেখ যোগ্য গুণগুলো ও তুলে ধরেছেন। এখান থেকে " একজন মানুষ নিজের জীবন কে উওম ভাবে কিভাবে গড়ে তুলতে পারবে তা লেখক মুহাব্বাতের তুলিতে ঢ়ংঙের ছলে ফুটিয়ে তুলেছে। ***মাদ্রাসাতুল কুরআন এ অধ‍্যায়টি অন্নেক ভালো লেগেছে।বিশেষ করে তালিবে ইলম হওয়ায় পড়াশুনার প্রতি মনোযোগ অনেক গুণ বেড়েছে।আলহামদুলিল্লাহ্। ~~~কেন পড়বেন আজ আমরা অনেকেই কুরআন কে হৃদয়ের গহীন থেকে মমতা,মহব্বতের সাথে গ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত।বুঝতে পারিনা,কুরআন পড়তে ভালো না লাগা, মর্মাত না বুঝা । এ অবস্থান থেকে নিজেকে কুরআনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলার জন্য বইটি পড়া উচিৎ। ~~~কারা পড়বো আপনি যদি তালিবে ইলম হোন তাহলে বইটি দ্রুত পড়ুন আর তালিবে ইলম না হলে বইটি আপনি একবার শুধু একবার ,শুধু একবার হলে ও পড়ুন। ~~~এক টুকরো অনূভুতি বইটির গভীরতায় যতই যাচ্ছি ততই আমার অভিযোগ,অভাব বোধগুলো আমায় স্পর্শ করছে। যেন আহ্বান করছে নীড়ে ফিরে এসো, কুরআন কে আকড়ে ধরো। ~~~বই থেকে এক টুকরো নসিহা। বিক্ষিপ্ত মন, অস্হির চিন্তা,বিস্রস্ত ভাবনা,উদাশ দৃষ্টি তিলাওয়াতের মাঝে খুজেঁ পাবো যাবতীয় সান্ত্বনা। কুরআন সৃষ্টি করবে সামাজিক ঐক্য। তৈরি করবে "একতাই" বল। রিভিউ লেখিকা: খাদিজা বিনতে 26/8/2022
Abdul Hai @ September 4, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ ‘আই লাভ কুরআন’ - লেখক- মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ রিভিউ লেখক- Abdul Hai বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম - মহান আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করছি যিনি অনাদি থেকে অনন্তের মালিক। - একটি বই পাঠ করার আগে লেখককে চেনা আমার একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে একাডেমিক পড়াশোনার সময় থেকেই। কোনো বই হাতে পেলে আগে লেখককে পাঠ করবার চেষ্টা করি। একজন লেখক সম্পর্কে জানা মানে পাঠের অর্ধেক এগিয়ে যাওয়া। আমাদের আলোচ্য বই ‘আই লাভ কুরআন’ এর সম্মানিত লেখক সম্পর্কে যতদূর জানা যায় তিনি কুরআনের সংরক্ষণকারী (হাফেজ)। বিদগ্ধ আলিমে দ্বীন, সোহবতপ্রাপ্ত হীরের টুকরো। যিনি দরবারে দরবারে ঘুরে বেড়ান নিজেকে আরও ঋদ্ধ করতে, নতজানু হয়ে বসে পড়েন তালিবুল ইলমের ন্যায় ইসলাহী কাননের পবিত্র মজলিশে। সুপ্রাচীন প্রসিদ্ধ ইদারা থেকে বাংলাদেশের ইলমী অঙ্গনে যোগ্য রাহবারের একান্ত তত্বাবধানে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হয়। তবে তার ইলম পিপাসার পড়াশোনার জীবন এ জীবনে শেষ হবে না বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। সন্ধিগ্ধ মন মনে মনে অনেকবার প্রশ্ন করেছে হুজুর লেখক বাদ রেখেছেন কোন জিনিসটা পড়া? তাঁর নানামুখী পাঠের ফলে তার লেখাতে ফুঁটে উঠে সর্বদিকের ছোঁয়া। লেখা হয়ে উঠে আরও পরিণত। তাঁর বর্ণিল শিক্ষাজীবন আলাদা রচনার দাবী রাখে। পঠন ও শিখন পদ্ধতির অসামান্য মেধা ও বিচক্ষণতার সম্ভাবনা খুব অঙ্কুরেই তার শিক্ষকদের দৃষ্টিগোচরিত হয়েছে। ফলে তিনি ছাত্রজীবন থেকেই উসস্তাদদের স্নেহকরস্পর্শ তত্বাবধানে বেড়ে উঠেছেন। কুরআন ও হাদীসের নিগূঢ় তত্ব তালাশে যার জীবন পুরোটাই সঁপে দিয়েছেন। কুরআন ও সুন্নাহর ইলম অর্জনের জন্য তিনি চষে বেড়িয়েছেন নানা প্রান্তরে। কেতাবি, শরীরি, আত্মিক, কাল্পনিক সফরে তিনি জাত লেখকস্বত্বাকে সজাগ ও সচেতন রাখেন। শুধু তাই নয় পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়ের উপর তার বহুমুখি পান্ডিত্য সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব কম লোক দেখেছি যারা এমন নানাভাবে নানাদিকে সমানহারে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে পারেন। কোনটা রেখে কোনটা বলা যায় ? বাংলা-ইংরেজী, উর্দূ-ফার্সি সমান হারে সমান তালে সমান লয়ে তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুপম উদাহরণীয় যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এককথায় তিনি সর্বভূক পাঠক সব রকমের পাঠেই ঋদ্ধ। ফলে তিনি তার বয়স ও কালকে অতিক্রম করেছেন। একাধারে অতীতকে ধারণ ও অতীতের নিরিখে ভবিষ্যতকে আন্দাজ করে চমৎকার এক বর্তমানে বসবাস করেন। নানামুখী পাঠের একটি নেতিবাচকতা হলো গোলক ধাঁধাঁয় পড়ে অনেকে হোঁচট খেয়েছে। পশ্চিমা ছাল শরীরে লাগাতে গিয়ে হীনমন্যতায় ভুগেছে। তবে আমাদের লেখক সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম এ জায়গায়। তিনি শিখড়ে পৌঁছেও শেকঁড় বিচ্ছিন্ন নন, মূলকে আঁকড়ে ধরে বিভিন্ন দিকে গিয়েছেন বিভিন্ন পথ চষে বেড়িয়েছেন। সাঁঝ নামার আগেই তিনি ঘরে ফিরে এসেছেন। অথবা হাতে আলোকবর্তিকা নিয়ে অন্ধকার রাত্রিতেও আলো বিতরণ করেছেন নিজ মহিমায় ভাস্বর হয়ে। কিছু পবিত্র মানুষ আছেন, সঙ্গ আছেন যাঁর পবিত্রতার পরশে তার আশপাশটাও পবিত্র হয়। তার থেকে হেলে পড়া ছাঁয়াটাও পবিত্র হয়। তাকে ঘিরে থাকা বাতাসটাও পবিত্র এক সৌকর্য নিয়ে আবর্তিত হয় । তার বলয়কে ঘিরে পবিত্রতা বিরাজ করে। পাশে বসলে যে কেউ সে পবিত্রতা উপলব্ধি করতে পারেন। লেখকও আমাদের কাছে তেমন মনে হয়। তিনি আগাগোড়া কুরআনের স্পর্শে বেড়ে উঠা মানুষ। তিনি কুরআনের মত করে ভাবেন নাকি তার ভাবনাই কুরআনে মত বলা মুশকিল। তিনি কুরআনের মত করে চিন্তা করেন নাকি তার চিন্তাটাই কুরআনের মত সেটা নিয়ে দ্বন্ধে পড়তে হয়। নিজেকে বিনয়ের চাদরে ঢেকে রাখতে চান, অপরিচিত, নিজের কাজ নিয়ে পড়ে থাকতেই তিনি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। কিন্তু হায়, কবি বলেন চাঁদ মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকলেও তার আভা কিন্তু ঠিকই ঠিকরে বের হয়ে আসে। সূর্যের কিরণ আমাজনের দুর্ভেদ্য পত্রপল্লবকেও ভেদ করে ঠিকই সোনা ফলানো মৃত্তিকাতে গিয়ে উপকারী স্পর্শ দেয়। আমাদের লেখকও তেমন। ❤️ বইয়ের নামকরণ - আমাদের দেশীয় ইসলামী বইয়ের নামকরণের যে ধারা সে ধারায় ইসলামী বইয়ের নামকরণে একটা অপরিচিত অপরিচিত বোধ তৈরি হয়। কিছু ক্ষেত্রে হয়ে যায় গৎবাঁধা, কিছু ক্ষেত্রে হয় অপরিচিত শব্দ সহযোগে আরবী, উর্দু আর দাঁত-ভাঙ্গা নাম। ফলে পাঠকের সাথে বইয়ের নামের যে একটা অন্তরঙ্গতার বিষয় গড়ে উঠতে পারে সেটা আমাদের ইসলামী প্রকাশনা সংস্থাগুলো হয়তো সেভাবে ভেবে দেখে নি। অপরিচিত একজন পাঠক এক দৃষ্টিতে যদি লাইব্রেরির তাকে রাখা বইটির দিকে নজর বোলায় আর চোখ গিয়ে আটকে পড়ে ‘আই লাভ কুরআন’-এ চট করেই দৃষ্টিটি ফেরানো যাবে না এটা আমি একপ্রকার নিশ্চিত। নামকরণের চিরায়ত গৎবাঁধা এই ধারাটা লেখক ভাঙতে চেয়েছেন এবং কতটুকু সফল তা পাঠক মাত্রই সাক্ষ্য দিবে। ‘আই লাভ কুরআন’ শব্দবন্ধটি পাঠ করার সাথে সাথেই মনের মধ্যে একটা আলাদা ভালো লাগা, ’লাভ’ ’লাভ’ ফিলিংস কাজ করে। ❤️ ভূমিকাঃ লেখক খুব সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় বইয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে পাঠকবৃন্দকে অবহিত করেছেন। আর এই অবহিতকরণের মাধ্যমে একজন পাঠক বইটিকে সংক্ষিপ্ত কথায় “এই সংকলনে অভিনব কিছু নেই। নিজস্ব কোনও উদ্ভাবন বা গবেষণাও নেই। গভীর কোন তত্ব তালাশও নেই। পুরো বইয়ের প্রায় সব লেখাই এখান ওখান থেকে কুড়িয়ে নেয়া। ......আমাদের মনের সুপ্ত বাসনা, এই ‘কুরআনিয়্যাত’ সিরিজের বইগুলো পড়ে কুরআনবিমুখ মানুষ হয়তো একটু হলেও কুরআনের প্রতি আগ্রহী হবে! কৌতূহলী হবে। হয়তো হেদায়াতের উসীলাও হয়ে যাবে ! হতে পারে বইয়ের সাথে সম্পৃক্ত মানুষগুলোর নাজাতের উপায়!” (ভূমিকা- আই লাভ কুরআন) - 💚 হিযবী মিনাল কুরআন কুরআন এর সাথে আমাদের সম্পর্ক কাছাকাছি করার আবেগমাখা অনুরোধের অধ্যায়। ‘হিযব’ মানে দৈনিক নির্দিষ্ট সংখ্যক তেলাওয়াত। কুরআনের জিলদ এ ধুলোবালি যেন না জমে সে সবক আছে হিযবী মিনাল কুরআনে। কুরআন, সুন্নাহ, সালাফদের জীবন থেকে নসীহা দান করেছেন। কুরআনের সাথে দৈনন্দিন জীবনের সম্পর্ক স্থাপনের নসীহা দিয়ে। একটা দিনও যেন না কাটে তেলাওয়াতবিহীন। অন্তত একটা আয়াত হলেও নিয়মিত আদায় করা চাই, এটাই হিযবী মিনাল কুরআনের সারমর্ম। প্রধান বার্তা। ❤️ আই লাভ ইউ, সুইটা হার্ট কুরআনের সাথে লেখকের সখ্যতার গল্প। কুরআনের সাথে ভালোবাসা প্রয়াস। কুরআনকেন্দ্রিক হার্ট কিভাবে বিনির্মাণ হয়। কুরআন কিভাবে ধীরে ধীরে ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দুতে জায়গা করে। কুরআনের আবর্তনে আবর্তিত হয় কিভাবে একটি হৃদয় তার প্রতিফলন হয়েছে এ অধ্যায়ে। ❤️ কুরআনের প্রজন্ম একটি কুরআনবান্ধব প্রজন্ম গড়ে তোলার প্রায়োগিক বটিকা সমৃদ্ধ শিক্ষা। শিশু-কিশোরদের কুরআনমুখী করার বাস্তবসম্মত প্রক্রিয়া। এটা বাস্তবায়ন করা গেলে আমরা আবারও আমাদের সোনালী যুগের সুবাস পাবো, ইনশাআল্লাহ। লেখক এই অধ্যায়ে একটি পবিত্র কুরআনি প্রজন্ম গড়ে তোলার পবিত্র আশা রেখে নানামুখী পরিকল্পনা এঁটেছেন। বাস্তবতার নিরিখে এর সমাধানের পথ বাতলেছেন। ❤️ জীবনের প্রয়োজনে কুরআন মুমিনের জীবনের হরদম, হারপাল কুরআনের প্রয়োজন। কুরআনের নূরে মুমিনের জীবন পরিচালিত হবে। জীবনের জীবনের বিভিন্ন দিকের সমস্যাকে কুরআনের আয়াত মাখা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ফলে জীবনকে আরও কুরআন ঘনিষ্ঠ মনে হবে। আমার জীবনের কথা, আমার জীবনের সমস্যা কথা কুরআনে লিখা আছে!! মুমিনের অন্তর এতে স্বান্তনার খোরাক পায়। ❤️ আয়াতমাখা গল্প কুরআনের আয়াতের ডানায় চড়ে গল্পে প্রবেশ করা। আয়াতের পেছনের কোন গল্পটা লুকায়িত আছে সেটা লেখক তার অভিজ্ঞতালব্দ কলম ও কলব দ্বারা ফুটিয়ে তুলেছেন। অসম্ভব সুন্দর এই শিরোনামের মতোই সুন্দর, আয়াতমাখা গল্প অধ্যায়টি। ❤️ মাদরাসাতুল আম্বিয়া আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা কুরআনের জায়গায় জায়গায় আয়াতে আয়াতে নবী-রাসূলগণের ঘটনা এনেছেন৷ মাদ্রাসাতুল আম্বিয়ায় নবী রাসুলগণের জীবনের সাথে কুরআনি আয়াতের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। কুরআনের আতশী কাঁচে আম্বিয়ায়ে কেরামকে দেখানো হয়েছে। ❤️ কুরআনি ভাবনা কুরআনের জন্য জীবন। জীবন উৎসর্গিত করা কুরআনের তরে। কুরআনের ভালোবাসায় বুদবুদ করা জীবন। কিভাবে কুরআনের তরে লীন হতে হবে। কুরআনের খিদমায় কিভাবে নিজের সবটুকু বিলীন করে দেওয়া প্রয়োজন, কুরআনের ভালোবাসা নিয়ে লেখকের ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে এ অধ্যায়ে। ❤️ মাদরাসাতুল কুরআন মাদ্রাসাতুল কুরআন লেখকের ভালোবাসামাখা অধ্যায়। হৃদয় নিংড়ানো স্বপ্ন। সপ্ত আকাশ আর সপ্ত জমিন পরিমাণের কুরআনি পরিকল্পনা। কুরআন কেন্দ্রিক একটি মাদ্রাসা। যার পুরোটা জুড়েই থাকবে শুধু কুরআন কুরআন আর কুরআন, কুরআনের। ❤️❤️❤️ বইটি কেন পাঠ করবেন ?💚💚💚 - কুরআনকে কেন্দ্র করে রাসূল সা:, সাহাবায়ে কেরাম, খাইরুল কুরুন থেকে আজ পর্যন্ত কুরআনপ্রেমীদের কুরআনকেন্দ্রিক ভালোবাসামাখা স্পর্শেের আবর্তন বইয়ের ছত্রে ছত্রে, পরতে পরতে দেখা যাবে। - বইটিতে কুরআনকে ভালোবাসার আবেদন রয়েছে। অন্তরে কুরআনকে স্থান দেওয়ার নিবেদন রয়েছে। কুরআনপ্রেমীদের গল্প রয়েছে; সে গল্পের শিক্ষা রয়েছে। জীবন ঘনিষ্ঠ নানাবিধ সমস্যার কুরআনি সমাধান রয়েছে। কুরআনকে নিয়ে ছোট-বড় ঘটনার অবতারণা হয়েছে, যেগুলো আমাদের পথ দেখাবে; আমাদের পাথেয়। কুরআনকে কেন্দ্র করে জীবনের পট পরিবর্তনের গল্প রয়েছে। কুরআন বিমুখতার পরিণতি নিয়ে সতর্কতা রয়েছে; শিক্ষা রয়েছে। কুরআনকে নিয়ে ইতিহাস রয়েছে, ইতিহাসকে নিয়ে কুরআন রয়েছে। কুরআনের কাছাকাছি থাকার পথ বলা আছে। বইটি পাঠ করার সময়ই আপনি দৃঢ়কল্প ইচ্ছা পোষণ করবেন; নাহ আর না। অনেক অবহেলা হয়ে গিয়েছে কুরআনকে নিয়ে, আর না। আজ থেকেই আবার কুরআনকে বলতে হবে ‘আই লাভ কুরআন’। - শুধু বলা নয়, কুরআন পাঠ, শিখা, বুঝা এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআনকে নিয়ে চলার এক পবিত্র ইচ্ছাটা জাগ্রত করাই এই বইয়ের মূখ্য উদ্দেশ্য। যতটুকু বলতে চেয়েছিলাম ততটুকু বলতে পারিনি মানছি। যোগ্যতার কমতিকে স্বীকার করছি, তবে চেষ্টার কোনো কমতি ছিলো না৷ - রাব্বে কারীম আমাদের মেহনতকে কবুল করেন।
তাকী আল জামী @ September 8, 2022


#মাকতাবাতুল_আযহার_রিভিউ_প্রতিযোগীতা_২০২২ বইয়ের নামঃ আই লাভ কুরআন লেখকঃ মুহম্মদ আতীক উল্লাহ প্রকাশনায়ঃমাকতাবাতুল আযহার প্রথম প্রকাশঃ২০১৮ মূল্যঃ ৬০০ ট নামটাই তো অন্যরকম–"আই লাভ কুরআন"। আল-কুরআন এর ভাষা আরবি,অথচ নামটা ইংরেজি।কেমন যেন না! কিন্তু বইটি পড়ার সময় মনে হয়েছে 'আই লাভ কুরআন ' নামটা তো একদম পারফেক্ট। কুরআনকে ভালোবেসে যে এতটা সুন্দর একটা বই লেখা যায় তা বইটি না পড়লে বুঝতাম না। নিজের যোগ্যতার কথা বলে বেড়ানোতে লজ্জার বিষয় থাকতে পারে। কিন্তু নিজের ভালোবাসার কথা বলে বেড়ানোতে কোনও লজ্জা নেই। বইটা পড়ার সময় ইচ্ছে হয়েছে জগতের সকল ভালোবাসাকে একত্রিত করে কুরআনকে প্রতিনিয়ত বলি -আই লাভ ইউ,সুইটহার্ট! মলাটের ভাঁজেঃ বইয়ের ভূমিকাও যে এত চমৎকার হয় জানতাম না।তাতে কুরআনের প্রতি ভালোবাসা , কুরআন পাঠের প্রতি উৎসাহ দেওয়া সহ কিছুদিক - আলোচনা করা হয়েছে। পড়ার সময় বারবার মন চঞ্চল হয়ে উঠে তেলাওয়াতের জন্য, তেলাওয়াত শোনার জন্য।কুরআন কারীমের জন্য মন ব্যাকুল হয়ে উঠে। 'আই লাভ কুরআন ' বইটিতে মোট আটটি অধ্যায় আছে। নিচে প্রত্যেকটি অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হলোঃ- প্রথম অধ্যায়ঃ—'হিযবী মিনাল কুরআন ' কুরআন কারীম কি, ব্যক্তি বিশেষ হিযবি মিনাল কুরআনের পার্থক্য, হিযব আদায় করার অনুভূতি (প্রতিদিন তেলাওয়াতের জন্য যা নির্ধারণ করা হয় তা-ই হিযব),তেলাওয়াতের মাহাত্ম্য, তাদাব্বুর করেন যারা -তাদের মর্যাদা নিয়ে লেখা এই অধ্যায়টি। যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকে, তাদের জন্য চিন্তার খোরাক রয়েছে এই অধ্যায়টিতে। দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ—'আই লাভ ইউ, সুইটহার্ট!' এই অধ্যায়টি পড়ার পর ভাবতে বাধ্য -কুরআনের সাথে আমার সম্পর্ক এমন তো? কুরআন কি এতটাই আপন আমার কাছে? প্রিয়জন হারিয়ে ফেললে যেমনভাবে আপনজনের কাছ থেকে সান্ত্বনা পান, ঠিক তেমনই কুরআন কারীম হওয়া উচিত এতটাই আপন, যেন মন খারাপের সময়ও তাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা পান। এটা তো আল্লাহর পক্ষ থেকে সান্ত্বনা! আপনি কি কুরআন কারীমকে আপন করে নিবেন না? এমনই ভাবনা জড়ো হয় হৃদয়ে এই অধ্যায়টি পড়ার পর। তৃতীয় অধ্যায়ঃ—'কুরআনী প্রজন্ম' অধ্যায়টি অভিভাবকদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে আপনার সন্তান হতে পারে কুরআনপ্রেমী সে বিষয়ে নিয়ম-পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এই অধ্যায়টিতে।মনে হয়েছে এই পরামর্শগুলোর প্রিন্টকপি প্রত্যেক অভিভাবকদের কাছে থাকা উচিত। চতুর্থ অধ্যায়ঃ—'জীবনের প্রয়োজনে কুরআন ' বর্তমান সময়ে ধর্মীয় মানুষের মানসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন মত ও অবস্থা নিয়ে ৩১ টি শিরোনামে অধ্যায়টিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পঞ্চম অধ্যায়ঃ—'আয়াতমাখা গল্প' এ অধ্যায় জুড়ে আছে কুরআনের আয়াত সম্বলিত ছোট ছোট দারুণ গল্প যা যত না ছোট তারচেয়ে ব্যাপক অর্থবহ। ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ—'মাদরাসাতুল আম্বিয়া' নবীদের কাহিনী সম্বলিত আয়াতের মিল-অমিল, আয়াতের সৌন্দর্য ও কুরআনের আলোকে নবীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, পরামর্শ সহ বিভিন্নদিক এ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। সপ্তম অধ্যায়ঃ—'কুরআনি ভাবনা' এ অধ্যায়ে টুকরো টুকরো গল্পাচ্ছলে বলা ভাবনাগুলো পাঠককে নিয়ে যাবে কুরআনি ভাবনায়। ভাবনাগুলো কুরআনের প্রতি ভালোবাসা উদ্বুদ্ধ করতে পাঠক হৃদয়ে অনুপ্রেরণা যোগাবে। অষ্টম অধ্যায়ঃ—'মাদরাসাতুল কুরআন' অধ্যায়টির কোনো তুলনা হয় না। আমার কাছে মনে হয় অধ্যায় নয় যেন আরেকটি বই।এটাকে বলা যাবে-ইলমের বাগান। পাঠক প্রতিক্রিয়াঃ- বইটি যখন পড়ছিলাম তখন অন্তরের ভেতর ভিন্ন রকম প্রশান্তি অনুভব করছিলাম। মনে হচ্ছে শুষ্ক খরখরে হয়ে যাওয়া হৃদয়ে বসন্তের আগমন ঘটেছে। বইটা পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে জীবনে কতভাবে কুরআনের প্রতি অবহেলা দেখিয়েছি, কতভাবে কুরআনকে উপেক্ষা করেছি, কুরআন কারীমের সুশীতল ছায়া থেকে কতদিন দূরে থেকেছি,আমি অনুভব করেছি আমার হৃদয় লজ্জিত অনুতপ্ত । কিভাবে পারলাম তাকের ওপর ধূলোমলিন কুরআনখানা মাসের পর মাস ছুঁয়ে না দেখতে! আমি বলতে বাধ্য ' আই লাভ কুরআন ' বইটি পড়ে এমন কোনো পাষাণ নেই -যে কুরআন কারীম না ছুঁয়ে থাকতে পারবে। এমন একটা বই প্রত্যেকেরই পড়া উচিত। এতই সহজ সরল ভঙ্গিতে রচিত,যে কারও জন্য বইটা পড়া সহজবোধ্য। বইটা একবার পড়ে দেখুন না! কি আছে তাতে আমার তা বলার ভাষা তো জানা নেই। রেটিংঃ—৯/১০ রিভিউদাতা-তাকী আল জামী ১৫.০৮.২০২২
Anas Ahmed Mahfuz @ September 8, 2022


বইঃ আই লাভ কুরআন লেখকঃ শায়খ মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ প্রকাশনাঃ মাকতাবাতুল আযহার ◾কুরআনুল কারীম। মানুষের জীবনের পরিপূর্ণ গাইডলাইন। মানবজাতির মুক্তির পথ ও পাথেয় একমাত্র এই কুরআনুল কারীম। পরকালীন মুক্তির জন্য কুরআনের আলোকে জীবন গড়তে হবে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, কুরআনের সাথে আমাদের যোজন-যোজনের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। কুরআন এখন আমাদের কাছে অপশনাল সাবজেক্ট। যে কুরআনের রঙে আমাদের জীবন রাঙানোর কথা ছিল, যে কুরআনের আলোকে জীবন গড়ার কথা ছিল সেই কুরআন কে আমরা আজ অবহেলা করছি। আমাদের ঘরে ঘরে হয়তো কুরআন আছে, তবে আমাদের ক্বলবে আজ কুরআন নেই। ঘরের কুরআন টাতে আজ ধুলো জমে গেছে। আমরা এমন-ই মুসলিম, যে কুরআনের জন্য জীবন দিতে চাই, অথচ কুরআন পড়তেই জানিনা। ◾কুরআন কে আকড়ে ধরেই তো, কুরআনের রঙে নিজেকে রাঙিয়েই তো সাহাবী/তাবেয়ী/তাবে-তাবেয়ীরা হয়েছেন শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম। দুনিয়ার সব বই আমার পড়া শেষ, প্রেমের গল্প, নাটক-উপন্যাস কতো কিছু পড়লাম কিন্তু এমনই হতভাগা যে কুরআন টাই পড়তে জানিনা। সব কিছুই বুঝি, তবে কুরআন বুঝিনা। কুরআন শুধু ঘরের আলমারিতে রেখে দেওয়ার জন্য নয়। এর কতোকগুলো হক রয়েছে, সেই হকগুলো আমরা ক'জন ই বা আদায় করি? আমরা নিজেদের সন্তানদের ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানিয়ে গর্ববোধ করি, কিন্তু তারা কুরআন পড়তে পারেনা এ নিয়ে লজ্জিত হই না। সন্তানদের জন্য গানের টিচার, নাচের টিচার (নাউজুবিল্লাহ) রেখে দিই তবে কুরআন শেখানোর জন্য একজনকে রাখতে পারিনা। ◾আমরা আজ হতাশায় ভুগি, মানসিক চিন্তায় থাকি, প্রশান্তি পাইনা। প্রশান্তি পাওয়ার জন্য এমন কতো কাজে লিপ্ত হই, যা আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা হারাম করেছেন। অথচ আমাদের অন্তরের প্রশান্তি তো আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার স্মরণে। সব সমস্যার সমাধান তো এই কুরআনে রয়েছে। সমস্যায় পড়ে হন্যে হয়ে দিগ্বিদিক ঘুরে বেড়াই, আরে মাতাল বিবেক তোর সমস্যার সমাধান তো তোর ঘরেই রয়েছে, সেটা রেখে তুই কোথায় যাস? ◾আমরা অনেকেই হয়তো তিলাওয়াত করি, তবে সেটা তারতীলের সাথে,মনোযোগের সাথে করিনা। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাদেরকে আকর্ষণীয়ভাবে, ধীরতার সাথে, মনোযোগের সাথে তিলাওয়াত করতে আদেশ করেছেন। কুরআন তিলাওয়াত করা হলে মনোযোগের সাথে তা শুনতে বলেছেন। আজ কুরআন শুনলে আমাদের দিলে এর কোনো প্রভাব পড়েনা,চোখ দিয়ে পানি পড়েনা। ◾আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ''আমি যদি এ কুরআনকে অবতীর্ণ করতাম কোনও পাহাড়ের উপর, তবে আপনি দেখতেন তা আল্লাহর ভয়ে অবনত ও বিদীর্ণ হয়ে গেছে"। ( সূরা আল-হাশরঃ ২১) চিন্তা করে দেখুন, কুরআনের প্রভাবে পাথর ও বিদীর্ণ হয়ে যেতো। তাহলে মানুষের উপর কেমন প্রভাব ফেলবে? ✒ আই লাভ কুরআন বইটাতে লেখক কুরআনের প্রতি ভালোবাসার নানা উদাহরণ তুলে ধরেছেন। আল্লাহর আয়াত শুনে নবী-রাসুলদের উপর এর প্রভাব কেমন ছিল তা উল্লেখ করেছেন। মক্কার কাফির মুশরিকরাও তো লুকিয়ে লুকিয়ে কুরআন শুনতেন, তাদের উপর ও তো এর প্রভাব পড়েছে, কিন্তু আজ আমাদের কি হয়ে গেলো যে, কুরআনের কোনো প্রভাব নেই আমাদের মাঝে। নানা ব্যস্ততার অজুহাত দিয়ে আমরা আল্লাহর ইবাদত থেকে, কুরআন তিলাওয়াত থেকে গাফেল থাকি, লেখক বইটিতে উদাহরণ এমন কিছু লোকের যারা কাজের ফাকে ফাকে কুরআন তিলাওয়াত করেন। যেমন জানজটে আঁটকে থাকা গাড়ির চালকের তিলাওয়াত শুরু করা, মাঝরাতে যখন চারপাশে পীনপতন নিরবতা বিরাজ করে সেই সময়ে আল্লাহর প্রেমে ডুবে তিলাওয়াত করা। বলেছেন সেই ছেলের কথা, যে মায়ের সাথে দুর্ব্যবহার করে কিন্তু একদিন কুরআনের একটা আয়াত শুনার পর তার পরিবর্তনের কথা। ✒ বইটিতে লেখক অনেক আয়াতের ব্যাখ্যা সহজ/সাবলীল ও হৃদয়গ্রাহী ভাষায় তুলে ধরেছেন। বইয়ের কথা গুলো আমার আপনার হৃদয়ে দাগ কেটে যাবে। কঠিন ও দুর্বোধ্য কোনো ভাষার প্রয়োগ তিনি করেন নি, তাত্ত্বিক কোনো আলোচনা নেই বইটিতে। সহজ সরল ভঙ্গিতে কুরআনের কথা, কুরআন তাদাব্বুরে জীবন গড়ার কথা, তিনি তুলে ধরেছেন। বলেছেন আশ'আরী সাহাবিদের রাতে কুরআন তিলাওয়াতের ঘটনা। ✒ অনেক তো হলো কুরআন থেকে দূরে থাকা, আল্লাহর অবাধ্য হওয়া, চলুন না কুরআনের রঙে নিজেকে রাঙাই। কুরআনের আলোকে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করি। সেই জীবন যে জীবন আমাকে আপনাকে এনে দিবে পরকালীন মুক্তি। আর কতো ফাঁকি দিবেন? আর কতো অবাধ্য হবেন? কাকে ফাঁকি দিচ্ছি আমরা? আমাদের রব কে? সেই রব যিনি আমাদের খাওয়ান,পরান? কার অবাধ্য হচ্ছি আমরা? যিনি আমাদের কে নিয়ামত রাজি দিয়ে ধন্য করেছেন? যিনি আমাকে আপনাকে চির সুখের ঠিকানা জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন? আজ-ই ছিড়ে ফেলুন অতীতের পাপের অধ্যায়। চলুন, আমরা সবাই আমাদের রবের কাছে বিক্রি হয়ে যাই। ✒ লেখক পরিচিতিঃ লেখক শায়খ মুহাম্মদ আতীক উল্লাহকে আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতোন কিছুই নেই। যারা ইসলামিক বই পড়েন, মোটামুটি তারা সবাই হয়তো লেখকের নাম শুনে থাকবেন। যার প্রতিটি বইয়ের পাতায় মুক্তো ঝড়ে। তার কথা গুলো আপনাকে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে শিখাবে। অল্প কথায় তিনি আমাদের কে অনেক কিছু বুঝিয়ে দেন। লেখকের আরো উল্লখযোগ্য কিছু বই আই লাভ ইউ, সুইটহার্ট কুরআন, ইশকুল অব লাভ, দুজন দুজনার, ওগো শুনছো, সেপালকার ইন লাভ, খুলুকীন আযীম, দোস্ত জানেমান। ✒ রিভিউঃ আনাস আহমেদ মাহফুজ

আপনার মতামত ও রেটিং